শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
ঘরদোর

ভালো রাখুন গদি-কুশন

মোহাম্মদ সুজন

ভালো রাখুন গদি-কুশন

ছবি : নেওয়াজ রাহল

গা এলিয়ে দেওয়া সোফায় রঙিন কুশনের বিন্যাস বা মখমলি গদি দেখে নিশ্চয়ই ভালো লাগে। আবার আরামদায়কও বটে। কিন্তু শুধু দেখলেই তো হবে না। প্রয়োজন নিয়মিত পরিষ্কার করাও।

 

সারা দিনের ক্লান্তি শেষে আরামের ঠিকানা একটাই, বেডরুম। ঘরের আসবাব নিয়ে আমরা যতটা যতœবান, গদি-কুশনের যতœ সেভাবে নেওয়া হয় না। অথচ অপরিষ্কার গদি-কুশন রোগ-জীবাণুর বাসা। প্রতিদিন ঘাম, ত্বকের ঝরে পড়া মৃতকোষ, হাঁচি বা কাশি থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া সবই জমা হচ্ছে গদি-কুশনে। তাই নিয়মিত গদি-কুশনের যতœ দরকার।

 

ঘরের আসবাবের যেমন যতœ প্রয়োজন তেমনি গা এলিয়ে দেওয়া গদি, কুশনেরও নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা প্রয়োজন। সপ্তাহে অন্তত একবার বেডকাভার ও বেডশিট তুলে গদি রোদে দিন। আর তাও সম্ভব না হলে মাসে একবার গদি রোদে দিন। রোদের তাপে গদি ভালো থাকবে। পোকামাকড়ও হবে না। তবে বিকাল নামার আগে গদিও নামিয়ে ফেলুন। অন্যথায় রোদের তাপ না থাকার কারণে গদিতে ভিজে ভাব রয়ে যাবে।

 

রোদে গদি বের করা সম্ভব না হলে ঘরের জানালা দরজা খুলে রাখুন। আলো-বাতাস খেলবে। প্রতি ৩ থেকে ৬ মাস পর পর গদি উল্টে ব্যবহার করুন। এতে গদির ওপরের দিকের অংশ বেশিদিন ব্যবহারে জীর্ণ হয়ে যাবে না। গদির দুই দিকেই সমানভাবে ব্যবহৃত হবে। দুজনে মিলে ধরে গদি উল্টাবেন। সহজে গদি উল্টাতে পারবেন। গদিতে কভার পরিয়ে রাখতে পারলেই ভালো। ওয়াশেবল কভার ব্যবহার করুন, ধুলো-ময়লা লেগে নোংরা হওয়ার সম্ভাবনা কম।

 

গদিতে জমে থাকা ধুলো-ময়লা থেকে অনেক সময় অ্যালার্জি হতে পারে। তাই প্রতিদিন ভালো করে ঝেড়ে নিন। সে ক্ষেত্রে ভ্যাকুয়াম ক্লিনারে আপহোলস্ট্রি অ্যাটাচমেন্ট লাগিয়ে নিয়মিত গদি ভ্যাকুয়াম ক্লিন করুন। অনেক সময় গদির ওপর চা-কফি পড়ে বিশ্রি দাগ হয়, এ ক্ষেত্রে মাইল্ড ডিটারজেন্ট  বা শ্যাম্পু অল্প পানিতে গুলে দাগের ওপর লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে মুছে ফেলুন। দাগ ম্যাজিকের মতো উধাও হয়ে যাবে। পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে তার ওপর বেডকাভার পেতে ফেলুন। নতুন গদি থেকে অনেক সময় অ™ভুত গন্ধ বের হয়। সে ক্ষেত্রে নতুন গদি কিছুক্ষণের জন্য রোদে দিতে পারেন বা জোরে ফ্যান চালিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন।

 

বিছানায় চাদর পাতার সময় গদির ধারগুলো মুড়বেন না। গদি বসে যাবে, না হলে গদির মাঝখানটা মচকে যাবে। গন্ধ চলে যাবে। ১ ভাগ ভিনেগারের সঙ্গে ৩ ভাগ পানি মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে বোতলে ভরে রাখুন। গদিতে কোনো দাগ হলে দাগের ওপর এই সলিউশন ¯েপ্র করুন। তারপর গদি রোদে রাখুন। পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে গদি ব্যবহার করুন। খাট ও গদির মাঝখানে কাঠের বোর্ড না রাখাই ভালো। সাময়িকভাবে বোর্ড থেকে সাপোর্ট পাওয়া গেলেও বোর্ড ব্যবহারে গদির নরম ভাব অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। ৮-১০ বছর অন্তর গদি বদলে ফেলুন। শীতকালে গদির তুলো বদলে ফেলুন। এলার্জির সমস্যাও কমবে। গদিও ভালো থাকবে। অনেক গদি চাপিয়ে বিছানা তৈরি করবেন না। ফোলা ভাব কমে যাবে।

 

কুশন যাচ্ছেতাই ফেলে রাখলে অচিরেই ময়লা হয়ে যাবে। একসঙ্গে অনেক কুশন চেপে জড়ো করে রাখবেন না। কুশনের ভাঁজ কমে যায়। এ জন্য দুই-তিন সেটে কুশন কিনে রাখতে পারেন। মাঝেমধ্যে বদলে নিন। সব সময় ফোমের কুশন ব্যবহার করুন। বালিশের মতো কুশনের তুলাও মাঝে মাঝে বদলে ফেলুন। কুশনের শেপ কমে গেলে বাড়তি তুলা ভরে নিন। তবে ঘুমানোর জন্য কুশন ব্যবহার করবেন না। কুশন কাভারে ভারী কাজ হলে ড্রাই ওয়াশ করিয়ে নিন। কুশন পশমের হলে ড্রাই ক্লিন করুন। তবে ভ্যাকুয়াম ক্লিন করাবেন না। নষ্ট হয়ে যাবে। প্রিন্টেড কুশন কভারগুলো বাড়িতেই পরিষ্কার করে নিতে পারেন। আর হ্যাঁ, চেইন সিস্টেমের কুশন থেকে বোতাম সিস্টেমের কুশন ভালো।

 

প্রতি সপ্তাহে কুশন কভার পাল্টে ফেলুন। খুব ময়লা না হলে কুশন কভার ধোওয়ার প্রয়োজন নেই। ধোওয়ার আগে অবশ্যই কুশনের ফিলিং কী তা ভালো করে জেনে নিন। বাড়িতে কুশন পরিষ্কার করার জন্য ডিটারজেন্ট বা শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর