উদ্বিগ্নগ্রস্ততা এমন এক ধরনের অসুস্থতা যাতে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। সামাজিকজীবনে প্রতিযোগিতা, উচ্চাভিলাষ, খুব বেশি চাপের মধ্যে থেকে কাজ করা, একসঙ্গে অনেক কাজ করার প্রবণতা, উদ্বিগ্নতার প্রধান কারণ। তবে সাধারণভাবে এসব রোগী মানসিক রোগীদের মতো ভুল কিছু দেখা বা গায়েবি কথা শোনার মতো সমস্যা থেকে মুক্ত থাকেন।
উপসর্গ : স্থবিরতা অনুভব করা, আশা-নিরাশার দোলাচলে থাকা, মানসিকভাবে ভারাক্রান্ত অনুভূত হওয়া, অসহায়ত্ব, ভয়ভীতি, ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভোগা, হুমকি অনুভব করা, গলা চেপে আসা, আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া, ভীতসন্ত্রস্ত থাকা, বুকে চাপ বা ব্যথা অনুভূত হওয়া, শ্বাসকষ্ট অনুভূত হওয়া বা দীর্ঘশ্বাস আসা, বুক ধড়ফড় করা, মানসিক অস্থিরতা দেখা দেওয়া, মনের মধ্যে সবসময় নেতিবাচক চিন্তার উদয় হওয়া, শরীর অত্যধিক ঘেমে যাওয়া, মানসিক সিদ্ধান্তহীনতা, হাত-পা ও শরীরে অস্বাভাবিক অনুভূতি ও অবসাদ অনুভব করা বা অনুভূতি কমে যাওয়া, মুখ শুকিয়ে যাওয়া, তরল পায়খানা হওয়া, ক্ষুধামন্দা হওয়া, অনিদ্রায় ভোগা, সর্বদা অস্থিরচিত্ত থাকা, মনমরা হয়ে থাকা। এসব উদ্বিগ্নতার লক্ষণ হলেও এর অনেক লক্ষণই অন্য মারাত্মক রোগের জন্য হতে পারে। কাজেই এসব লক্ষণ অনুভূত হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় অত্যাবশ্যকীয়।
চিকিৎসা : এ রোগের চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রতিটি রোগীর রোগের ধরন ও কারণ নির্ণয় করে আলাদা আলাদা চিকিৎসাপদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। রোগীর সামাজিক ও ব্যক্তিগত অবস্থানভেদে চিকিৎসাপদ্ধতি আলাদা হয়ে থাকে। ১. মেডিকেশন : প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রদানের মাধ্যমে চিকিৎসা করা। তবে রোগীর অবস্থার উন্নতি ও রোগ নিরাময়ের জন্য দীর্ঘসময় ওষুধ গ্রহণ করার প্রয়োজন হয়। ২. এছাড়া যৌক্তিকভাবে আচরণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ৩. পারিবারিক ও সামাজিক আচরণ রোগীর রোগ মুক্তিতে প্রভূত সহায়তা প্রদান করে থাকে। ৪. যোগব্যায়াম, মেডিটেশন, শিথিলায়ন, ধ্যান, আত্মবিশ্বাস গঠন : এ সব পৌরাণিক পদ্ধতি অন্যান্য চিকিৎসাপদ্ধতির সঙ্গে গ্রহণ করলে সুফল পাওয়া যায়। তাই রোগের চিকিৎসা প্রাথমিক অবস্থা থেকে শুরু করা ভালো। কারণ কথায় আছে, প্রতিকার নয়, প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম। এজন্য স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে।ডা. এম শমশের আলী,কার্ডিওলজিস্ট
সিনিয়র কনসালটেন্ট (প্রা.), ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।