বুধবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

এই শীতে ত্বকের যত্নে করণীয়

এই শীতে ত্বকের যত্নে করণীয়

শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায়; ফলে বায়ুমণ্ডল ত্বক থেকে পানি শুষে নেয়। এই শুষে নেওয়ার কারণে ত্বক, ঠোঁট ও পায়ের তালু ফেটে যেতে থাকে। আমাদের দেহের ৫৬ শতাংশই হলো পানি। আর এর মধ্যে ত্বক নিজেই ধারণ করে ১০ ভাগ। ফলে ত্বক থেকে পানি বেরিয়ে গেলে ত্বক দুর্বল আর অসহায় হয়ে পড়ে। ত্বকের যেসব গ্রন্থি থেকে তেল আর পানি বের হয়ে থাকে, তা আর আগের মতো ঘর্ম বা তেল কোনোটাই তৈরি করতে পারে না। এতে ত্বক আরও শুকিয়ে যেতে থাকে। উল্লেখ করা প্রয়োজন, আমাদের ত্বকে থাকে ধর্মগ্রন্থি, থাকে তেলগ্রন্থি যেখান থেকে অনবরত তেল আর ঘাম বের হতে থাকে। এ ঘাম আর তেল মিলে দেহের ওপর একটি তেল আর পানির মিশ্রণ বা আবরণী তৈরি করে যা দেহকে শীতল রাখে এবং ত্বকের ফাটা ভাব প্রতিরোধ করে।

যত্ন নিন ঠোঁটের : শীত এলে ত্বক ছাড়াও সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় ঠোঁট নিয়ে। কম-বেশি সবারই ঠোঁট ফাটে। সেক্ষেত্রে তৈলাক্ত প্রলেপ ঠোঁটে ব্যবহার করলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এক্ষেত্রে ভেসলিন, লিপজেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করে ঠোঁট ভালো রাখা যায়। তবে মনে রাখতে হবে, জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভেজানো কখনো উচিত নয়। এতে ঠোঁট ফাটা আরও বেড়ে যেতে পারে।

পায়ের যত্নে সচেতন হোন : একশ্রেণির লোকের শীত এলেই পা ফাটার প্রবণতা দেখা যায়। সেক্ষেত্রে এক্রোফ্লেভিন দ্রবণে পা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর পা শুকিয়ে যাওয়ামাত্র ভেসলিন মেখে দিন। এছাড়াও গ্লিসারিন ও পানির দ্রবণ পায়ে মাখলে পায়ের ফাটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। পায়ের ফাটা কম হলে অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেল ব্যবহারেও ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে এখন বাজারে অনেক রকমের ময়েশ্চারাইজার পাওয়া যায়। এটা আসলে তেল আর পানির একটা মিশ্রণ। এতে থাকে ত্বক কোমলকারী পদার্থ। যেমন: পেট্রোলিয়াম, ভেজিটেবল অয়েল, ল্যানোলিন, সিলিকন, লিকুইড, প্যারাফিন ইত্যাদি। জন্মগত রোগ ইকথায়োসিস : শীতকালে বাড়ে এমন একটি রোগের নাম হচ্ছে ইকথায়োসিস। ইকথায়োসিস আবার বিভিন্ন ধরনের আছে। তবে আমরা তার সবদিকে না গিয়ে শুধু ইকথায়োসিস ভ্যালগারিস নিয়ে কিছুটা আলোচনা করব। এটি একটি জন্মগত রোগ এবং রোগটি শিশুকাল থেকেই লক্ষ্য করা যায়। এ রোগে যারা আক্রান্ত হয় তাদের হাত ও পায়ের দিকে লক্ষ্য করলে

দেখা যায়, ত্বক ফাটা ফাটা এবং ছোট ছোট গুঁড়া গুঁড়া মরা চামড়া বা আঁইশ পায়ের সামনের অংশের বা হাতের চামড়ায় লক্ষণীয়ভাবে ফুটে উঠতে দেখা যায়। তবে হাত ও পায়ের ভাঁজযুক্ত স্থানে থাকবে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। এদের ক্ষেত্রে শীতকাল এলেই প্রতি বছর এর ব্যাপকতা বেড়ে যায়। এদের হাতে বা পায়ের দিকে তাকালে দেখা যাবে, হাতের রেখাগুলো  স্পষ্ট এবং মোটা যা কিনা সাধারণ লোকের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় নয়।

ডা. দিদারুল আহসান, চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ,

আল-রাজি হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর