শিরোনাম
রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

যেসব কারণে অ্যাজমা বাড়ে

যেসব কারণে অ্যাজমা বাড়ে

গ্রিক ভাষায় অ্যাজমা শব্দের অর্থ হলো হাঁ করে শ্বাস নেওয়া। গ্রিক চিকিৎসক হিপোক্রেটিস সর্বপ্রথম অ্যাজমা শব্দটি ব্যবহার করেন। অ্যাজমা বা হাঁপানি হলো এমন একটি শারীরিক অসুস্থতা যার দ্বারা সব বয়সের লোকজন আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত রোগীর ফুসফুসের শ্বাসনালি সাধারণ লোকজনের শ্বাসনালির তুলনায় অনেক বেশি স্পর্শকাতর অর্থাৎ সামান্য কারণেই শ্বাসনালি খিচুনি দেয়। অ্যাজমা রোগীর শ্বাসনালি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল। এ জন্য কোনো উত্তেজক যেমন- ধুলাবালি, পশুপাখির স্পর্শ, ঠান্ডা, ফুলের রেণু ইত্যাদির সংস্পর্শে এলে এদের শ্বাসনালি হঠাৎ সংকুচিত হয়ে তীব্র শ্বাসকষ্টের সৃষ্টি করে। এ রোগ কখনোই নির্মূল করা যায় না। তবে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। পুরো বিশ্বে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মানুষ এ রোগে ভুগছেন।

অ্যাজমা রোগের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এ ধরনের রোগীদের বংশগত অ্যাজমা রোগের প্রকোপ থাকে। অ্যাজমা রোগের প্রধান উৎস হচ্ছে অ্যালার্জিজনিত রোগ। তাই এ রোগ প্রতিরোধের প্রধান উপায় হচ্ছে অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকা। ধুলাবালি, ঠান্ডা বা গরম আবহাওয়া, বিভিন্ন ধরনের খাবারের মাধ্যমে একজন লোক সহজেই আক্রান্ত হতে পারেন।

অ্যাজমার লক্ষণসমূহ : ১. দম বন্ধ অনুভূত হওয়া। ২. শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া। ৩. বুকের ভিতর বাঁশির মতো শাঁ শাঁ শব্দ অনুভব করা। ৪. বুক ভরে শ্বাস নিতে না পারা। ৫. অল্প পরিশ্রম করলে হয়রান অনুভব করবে।

কিছু তথ্য : পরিবেশের যেসব উপাদানে অ্যাজমা লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় তাকে অ্যালার্জন বলে। নিম্নোক্ত কারণে অ্যালার্জন হয়ে থাকে। ১. পোকা প্রাণী। ২. পশু-পাখির লোম। ৩. ধুলাবালি, বিশেষ করে ঘরের মাইট। ৪. ধূমপান। ৫. পোকামাকড়। ৬. ফুলের রেণু। ৭. আবেগ/টেনশন। ৮. ঠান্ডা আবহাওয়া। ৯. কিছু খাবার, যেমন- বেগুন, পুঁইশাক, চিংড়ি, ইলিশ মাছ, গরু, পাকা কলা, হাঁসের ডিম ইত্যাদি। ১০. কিছু ব্যথানাশক ওষুধ। শুধু এগুলো উপাদান দ্বারাই অ্যাজমা হবে এমন কোনো কথা নেই। প্রত্যেকের অ্যালার্জেন আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। অ্যাজমা যেহেতু প্রধানত অ্যালার্জিজনিত রোগ তাই এ রোগ প্রতিরোধের প্রধান উপায় হচ্ছে অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকা। এ ব্যাপারে বাবা-মাকে প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে। কোন জিনিসটাতে শিশুর অ্যালার্জিন পরিমাণ বাড়ছে বাবা-মাকে তার খেয়াল করতে হবে। এক্ষেত্রে ওষুধের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। যে কোনো ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করতে হবে।

শ্বাসকষ্ট : শ্বাসনালির ভিতর দিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় বাতাস সহজেই আসা-যাওয়া করতে পারে। যখন অ্যালার্জেন বা উত্তেজক জিনিস শরীরে প্রবেশ করে তখন অসংখ্য হাজার ক্ষুদ্র শ্বাসনালিগুলোর মাংসপেশি সংকুচিত হয়। ফলে এই শ্বাসনালিগুলো সরু হয়ে যায়। অ্যালার্জির প্রভাবে শ্বাসনালির গ্রন্থি থেকে ভারী মিউকাস পদার্থ বের হয় যাকে কফ বলি। রোগীর শ্বাস নেওয়ার শেষে পুনরায় শ্বাস ফেলতে কষ্ট হয়। সরু শ্বাসনালি দিয়ে বাতাস যাওয়া আসার সময় বাঁশির মতো সরু হয়।

অধ্যাপক ডা. একেএম মোস্তফা হোসেন

অ্যাজমা ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ,

মেডিনোভা, মালিবাগ, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর