শনিবার, ২০ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

শিশুর হাঁপানি হলে করনীয়

শিশুর হাঁপানি হলে করনীয়

অনেক বাচ্চাই হাঁপানিতে কষ্ট পায়। এক হিসাবে দেখা গেছে, ছেলেদের ১০-১৫ শতাংশ এবং মেয়েদের ৭-১০ শতাংশ এ রোগে ভোগে। জীবনের প্রথম বছরের মধ্যে ৩০ শতাংশ এবং চার-পাঁচ বছর বয়সের মধ্যে শতকরা ৮০-৯০ ভাগ হাঁপানি রোগের প্রকাশ ঘটে।  হাঁপানি আক্রান্ত বাচ্চা প্রধানত শ্বাসকষ্টে ভুগে থাকে। বারবার এ অসুখে আক্রান্ত হয় এবং বারবার সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার সাহায্যে আবার কখনোবা নিজে নিজেই সেরে উঠে। অ্যালার্জিজনিত বা এটোপিক হাঁপানি শিশুর অল্প বয়সে হতে দেখা যায়। কোনো খাবার জিনিস কিংবা ওষুধে বাচ্চার অ্যালার্জি দেখা গেলে তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে রক্তে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের তৈরি ঘটে। এ সব পদার্থ পরে সংবেদনশীল শ্বাসনালিকে সংকুচিত করে। এ ধরনের হাঁপানিতে দেখা যায় মা-বাবা অথবা বাবার দিকে কারও মধ্যে হাঁপানি বা অ্যালার্জির বংশগত উপস্থিতি। দেখা যায় ধোঁয়া, ধুলাবালি, পশুর লোম, পালক, ঘাস এবং ফুলের রেণু, কিছু খাবার অনেকের ক্ষেত্রে হাঁপানির উৎপত্তি ঘটায়।

হাঁপানি কীভাবে নির্ণয় করবেন : (ক) হাঁপানি বা অ্যালার্জির পারিবারিক ইতিহাস। (খ) বাচ্চা বারবার শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছে এবং শাঁ শাঁ শব্দ শোনা গেলে। (গ) সব সময় অথবা বারে বারে কাশি লেগে থাকলে। (ঘ) রাতে শোবার বেলায় বা ভোরের দিকে কাশি বা শ্বাসকষ্টের আওয়াজ। (ঙ) উপসর্গ দেখা দেওয়ার সূচনা হিসেবে কোনো ভাইরাস জ্বর, ব্যায়াম, মানসিক চাপ অথবা বিশেষ কোনো খাবার বা

আবহাওয়া জড়িত আছে বলে মনে হলে।

আধুনিক চিকিৎসা : বাচ্চাদের হাঁপানির চিকিৎসায় অনেক বিপ্লব এসেছে যেসব উদ্দেশ্যকে চিন্তা করে চিকিৎসাকে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে যেগুলো হলো : *বাচ্চার শ্বাসকষ্টজনিত কষ্ট লাঘব করে সে যেন ঘরে এবং স্কুলে স্বাভাবিক কার্যকর জীবনযাপন করতে পারে। * ফুসফুসে স্বাভাবিক কার্যাদি বজায় রাখা। *শ্বাসকষ্ট দূর করতে ওষুধের অতি নির্ভরতা কমানো। *বাচ্চার স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং বিকাশ যাতে ঠিক থাকে এবং ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যতটা এড়ানো।

প্রধান ধাপগুলো হলো : (ক) পরিহার করা : ধোঁয়া, ধুলা, ঠান্ডা জাতীয় খাবার বা অন্য কোনো কোনো জিনিসের প্রতি বাচ্চার অ্যালার্জি- যে সব কারণে বাচ্চার শ্বাসকষ্টের শুরু সেসব থেকে বাচ্চাকে যতটা সম্ভব বাঁচানো। (খ) ধাপে ধাপে চিকিৎসা : এ ব্যাপারটি একটি নতুন অগ্রগতি। পাঁচটি ধাপে চিকিৎসা প্রদান করা হয় শিশুর হাঁপানির অবস্থা বিবেচনা করে এবং এতে ইনহেলারের প্রয়োগ ঘটে। (গ) অংশীদারিত্বের ব্যবস্থাপনা : এর মাধ্যমে হাঁপানিতে আক্রান্ত শিশু তার মা-বাবা, অভিভাবক এবং পরিবারের সবাইকে এ অসুখ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেওয়া হয় যাতে সবাই মিলে বাচ্চাটির যত্ন ঠিকমতো করতে পারে। তাই এ বিষয়ে আমাদের আরও যত্নবান হতে হবে।

অধ্যাপক ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ, ইকবাল চেষ্ট সেন্টার, মগবাজার ওয়্যারলেস, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর