সোমবার, ৫ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

মাড়ি থেকে রক্ত বের হলে

মাড়ি থেকে রক্ত বের হলে

দাঁত ব্রাশ করার সময় বা শক্ত কিছু খেতে গেলে যদি লক্ষ্য করা যায় যে মাড়ি থেকে রক্ত বের হচ্ছে তবে বুঝে নিতে হবে মাড়ির রোগ আছে যাকে বলা হয় জিনজিভাইটিস। অনেক ক্ষেত্রে আবার বিভিন্ন রোগের লক্ষণও হতে পারে। মানুষের মুখের ভিতরে যে সব ব্যাক্টেরিয়া থাকে সেগুলো খাবারের সঙ্গে মিশে এক ধরনের আঠালো প্রলেপ তৈরি করে থাকে, যাকে বলা হয় ডেন্টাল প্লাক। যদি দাঁত ব্রাশ করার সময় ডেন্টাল প্লাক নিয়মিতভাবে পরিষ্কার করা না হয় তবে তা দীর্ঘদিন জমে থেকে মাড়িতে প্রদাহ তৈরি করে, এ অবস্থায় মাড়ি ফুলে যায় ও লাল হয়ে রক্ত বের হয়। করণীয়-

১। দাঁত ব্রাশ এবং ফ্লসিং: মাড়ির প্রদাহ বা মাড়ি থেকে রক্ত পড়া রোধ করতে প্রতিদিন মুখ পরিষ্কার রাখতে হবে। এ ব্যাপারে ডেন্টিস্টের পরামর্শ মতো ফ্লুরাইড-যুক্ত টুথপেস্ট দিয়ে প্রতিবার খাবারের পর দাঁতব্রাশ এবং রাৃতে ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশের আগে ডেন্টাল ফ্লস (এক ধরনের সিল্ক সূতা) দিয়ে দুই দাঁতের ফাঁক থেকে খাদ্যকণা বের করে আনা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে এক ধরনের জীবাণুনাশক তরল মাউথ ওয়াস (এন্টিসেপটিক)  ব্যবহার করা প্রয়োজন। প্রতিবছর অন্তত দুবার একজন ডেন্টাল সার্জনের কাছে গিয়ে দাঁত ও মুখ পরীক্ষা করালে মাড়ির প্রদাহ বা রক্ত পড়া বন্ধ করা যাবে সেই সঙ্গে দাঁতকেও বাঁচানো সম্ভব হবে।

২। দীর্ঘদিন বিরতির পর ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার শুরু করে থাকলে অথবা নতুন ধরনের ফ্লস ব্যবহার করলে মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বিচিত্র কিছু নয়। মাড়ির সঙ্গে ডেন্টাল ফ্লসের ব্যবহারটা অভ্যাসে পরিণত হতে একটু সময় লাগবে। ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহারের ফলে দাঁতের গায়ে বা ফাঁকে লেগে থাকা ডেন্টাল প্লাক বা খাদ্যকণা আরও সুন্দরভাবে  পরিষ্কার হয়।

৩। টুথব্রাশ বেশি ক্ষয়প্রাপ্ত বা আঁকা বাঁকা থাকলে কিংবা দীর্ঘদিনের ক্ষয়ে যাওয়া টুথ ব্রাশ দিয়ে ব্রাশ করলে আঘাতের কারণে মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে পড়ে। সুতরাং টুথব্রাশটি সঠিক আছে কিনা বা শলাকাগুলো সোজা ভাবে দাঁড় করানো আছে কিনা সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। একটি টুথব্রাশ ৬ মাসের বেশি ব্যবহার করা ভালো নয়।

৪। যারা অন্য রোগের জন্য (ডায়বেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, ক্যান্সার, লিভার ও কিডনি রোগ) ওষুধ ব্যবহার করেন তাদের মাড়ি থেকে রক্ত পড়া আরও বেশিভাবে লক্ষ্য করা যায়। এসব রোগ দেহের প্রতিরোধ শক্তিকে কমিয়ে ফেলে ফলে প্রদাহ দ্রুত বৃদ্ধি করে। সুতরাং তাদের প্রয়োজন মুখের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে আরও বেশি যত্নবান হওয়া ও  মুখের জন্য নিয়মিত জীবাণুনাশক ওষুধ ব্যবহার করা। দুবেলা দাঁত ব্রাশ ছাড়াও ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করা। ৬ মাস অন্তর ডেন্টিস দিয়ে দাঁতের স্কেলিং ও পরীক্ষা করা ভালো। অনেক ক্ষেত্রে মানসিক রোগের ওষুধ, এলার্জি ও উচ্চরক্তচাপের  ওষুধ মুখের শুষ্কতা তৈরি করে। এ ক্ষেত্রেও মাড়ির প্রদাহ লক্ষ্য করা যায়।            অধ্যাপক ডা. অরূপরতন চৌধুরী, মুকুল ডেন্টাল ক্লিনিক, গ্রিন স্কয়ার, গ্রিনরোড, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর