মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

হৃদরোগ প্রতিরোধের সহজ মন্ত্র

হৃদরোগ প্রতিরোধের সহজ মন্ত্র

বর্তমানকালে রোগীদের হার্ট ব্লক হওয়ার প্রবণতা ও গড়পরতায় আক্রান্ত হওয়ার বয়স থেকে এটা লক্ষণীয়, অনেকে ৪০ বছর বয়স থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আপনাদের বয়স কি ৩০ বছর? যদি তাই হয় তবে এখন থেকেই হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। কারণ বেশ কয় বছর আগেই আপনার শারীরিক গঠন (বৃদ্ধি) সম্পন্ন হয়ে গেছে, কিন্তু আপনার গত ১০ বছরের যে খাদ্যাভ্যাস ছিল তাও আপনি বজায় রেখেছেন, এটা ধরে রাখলে দিনে দিনে আপনার শরীরে চর্বি জমতে থাকবে। কারণ আপনার শারীরিক বৃদ্ধি রহিত হয়ে গেছে, তার জন্য যে বাড়তি খাদ্যের প্রয়োজন তারও আর আপানার শরীরের প্রয়োজন নেই। তাই সমপরিমাণ খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমেই এ বয়সে আপনার শরীরে চর্বি জমতে থাকবে এবং ওজন বৃদ্ধির (মেদ) সঙ্গে সঙ্গে হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়বে মানে আপনার রক্তনালিতে চর্বি জমা হয়ে ব্লক বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। এ বয়সে খাদ্যে চর্বির পরিমাণ কমাতে হবে। তাই প্রথম শর্ত হলো খাদ্যে চর্বি ব্যবহার সীমিত করবেন। যদি কায়িকশ্রম কম করেন তবে অধিক অতিরিক্ত চর্বি খেলে শরীরে তা চর্বি হিসেবে জমা হতে থাকবে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়বে। তবে যারা অধিক কায়িকশ্রম সম্পাদন করেন তারা অনেকভাবে চর্বি জমা হওয়ার প্রবণতা থেকে রেহাই পাবেন। দ্বিতীয় শর্ত হলো যতটা সম্ভব প্রাণিজ চর্বি ব্যবহার কম করুন, তার পরিবর্তে উদ্ভিজ্জ তেল বা চর্বি ব্যবহার করুন। আবার পশুর চর্বি থেকে মাছের চর্বি অনেকগুণে নিরাপদ। অনেকে প্রশ্ন করেন মাছের তেলচর্বি খাওয়া ঠিক হবে কিনা। মাছের তেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে মানে মাছের তেলে ওমেগা-থ্রি নামক চর্বি থাকায় এটা হৃদরোগীদের জন্য উপকারী তবে প্রথম শর্ত কিন্তু ভুলবেন না মানে আপনার কতটুকু পরিমাণ খাওয়া নিরাপদ তার চেয়ে বেশি তেলচর্বি কখনই খাওয়া যাবে না। আগে বলেছিলাম আপনার শারীরিক গঠন (বৃদ্ধি) শেষ হয়ে গেছে, তা কিন্তু সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আপনার ধারাবাহিক কর্মসম্পাদনের মাধ্যমে এখনো আপনার শারীরিক কলেবর বৃদ্ধি করা সম্ভব। নিয়মিতভাবে কায়িকশ্রম সম্পাদন করলে আপনার মাংসপেশির কলেবর বৃদ্ধি পাবে, স্নায়ুবিক যোগ্যতা বাড়বে এবং সর্বোপরি আপনার শারীরিক যোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে। নিয়মিত কায়িকশ্রম আপনার শরীরের মেদ জমা রহিত করবে। শরীরের যেসব ভাঁজে চর্বি জমা হয়, কায়িকশ্রমের মাধ্যমে ওইসব ভাঁজ ব্যবহার হয়, যা শারীরিক নড়াচড়ার জন্য খুবই প্রয়োজন। কায়িকশ্রম সম্পাদনের জন্য অধিক শক্তির প্রয়োজন হয় এবং ব্যক্তি যদি খাদ্য গ্রহণ সীমিত রেখে কায়িকশ্রম সম্পাদন করেন তবে ওইসব ভাঁজ থেকে চর্বি সরে গিয়ে তা শক্তি উৎপাদনের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আপনার শারীরিক গঠন ফিরে পেতে সাহায্য করবে। এছাড়া কায়িকশ্রম সম্পাদনের মাধ্যমে আপনার মাংসপেশি যথেষ্ট বৃদ্ধি করতে পারবেন। তাই এ বিষয়ে অবহেলা না করে আমাদের যথেষ্ট সচেতন ও যত্নবান হতে হবে।

ডা. এম শমশের আলী, (কার্ডিওলজিস্ট)

সিনিয়র কনসালটেন্ট (প্রা.), ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর