শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

হাঁপানির কারণ ও প্রতিকার

হাঁপানির কারণ ও প্রতিকার

শ্বাসকষ্টজনিত কারণে সাধারণতঃ অ্যাজমা বা হাঁপানির সৃষ্টি হয়ে থাকে। হাঁপানি মানুষের দেহের এক অসহনীয় ও যন্ত্রণাদায়ক ব্যাধি। আর এই শ্বাসকষ্টের উপদ্রব হয় নানা রকম অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী এলার্জনের কারণে। এলার্জেন সমুহ হচ্ছে, ধূলোবালি, ফুলের রেণু, মাইটের মল, পরিবেশের ধুলা, পোষা প্রাণীর লোম ইত্যাদি। অ্যালার্জিজনিত হাঁপানির একটি প্রধান কারণ হচ্ছে ধুলো। বাসা বাড়িতে বিভিন্ন জায়গায় জমে

থাকা ধূলোবালি, অফিসের খাতাপত্র বা ফাইলে জমে থাকা ধূলো এবং রাস্তাঘাটে প্রতিনিয়ত যে ধূলো উড়ছে তা হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের প্রধান উদ্রেগকারী। ধুলোবালী মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসযন্ত্রে প্রবেশ করে শ্বাসকষ্টের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। অন্য সব এলার্জেনের চেয়ে ধুলো খুব সহজে নি:শ্বাসের সাথে মানুষের ফুসফুসে প্রবেশ করতে পারে। ফলে খুব দ্রুত সর্দি-কাশি হয় এবং শ্বাসকষ্টের সৃষ্টি হয়। সব ধরনের বা সব জায়গায় ধুলোই যে হাঁপানি বা অ্যাজমার জন্য খুব বেশি ক্ষতিকারক তা কিন্তু নয়। ঘরে বা অফিসে জমে থাকা ধুলো রাস্তার ধুলোর চেয়ে বেশি ক্ষতিকারক। রাস্তার ধূলোতে থাকে অজৈব পদার্থ যাতে হাঁপানি, অ্যাজমা, সর্দি, কাশি, হাঁচি বা শ্বাসকষ্টের তেমন কষ্ট হয় না। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, মাইটের কারণেই প্রধানত ধুলোবালি অ্যাজমা রোগীদের জন্য বিপজ্জনক। এটি হচ্ছে এক প্রকার অর্থোপড জীব। এই পোকা এত ছোট যে খালি চোখে দেখা যায় না। আর্দ্রতাপূর্ব আবহাওয়া মাইট বড় হওয়ার এবং বংশবৃদ্ধির যথোপযুক্ত পরিবেশ। আর এর বাসস্থান হচ্ছে মানুষের ব্যবহৃত বিছানা, বালিশ, কার্পেট। মাইটের শরীর থেকে নির্গত মল, লালা, রস ধুলার সঙ্গে মিশে মানুষের শ্বাসের সাথে দেহে প্রবেশ করে অ্যালার্জির সৃষ্টি করে যা কিনা পরে হাঁপানিতে রূপ নেয়। এ কারণে ধুলাজনিত অ্যালার্জির কারণে অ্যাজমা রোগীর পরিমাণ বেশি। গ্রামের তুলনায় শহরের বেশিরভাগ লোক এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। যাদের ধুলোর কারণে শ্বাসকষ্ট অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়, তাদের কতগুলো বিষয়ের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে- এমন পরিবেশে চলা যাবে না যেখানে ধূলোর পরিমাণ বেশি। * ঘর পরিষ্কার এবং বিছানাপত্র ঝাড়ু দেওয়ার সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। * মাইট বেড়ে উঠার উপযুক্ত পরিবেশ যাতে সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। * অ্যালার্জি প্রতিরোধক টিকা ইমিউনোথেরাপি ব্যবহার করা। ইমিউনোথেরাপি হচ্ছে এমন এক ধরনের ওষুধ যা কিনা দেহের ভিতরে অ্যালার্জির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে।

অধ্যাপক ডা. একেএম মোস্তফা হোসেন, বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ

মেডিনোভা, মালিবাগ, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর