শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

গর্ভাবস্থায় উচ্চরক্তচাপ ঝুঁকি ও প্রতিরোধ

গর্ভাবস্থায় উচ্চরক্তচাপ ঝুঁকি ও প্রতিরোধ

প্রজননক্ষম বয়সের (১৫-৪৫ বছর) নারীদের প্রায় ৭.৭% উচ্চরক্তচাপে ভোগেন। প্রায় ১০% গর্ভবতী নারী উচ্চরক্তচাপ জনিত সমস্যায় আক্রান্ত হন।

গর্ভবতী নারীর রক্তচাপ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মা ও শিশু উভয়েরই স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায়।

গর্ভকালীন সিস্টোলিক চাপ ১৪০ মিমি পারদের সমান বা বেশি অথবা ডায়াস্টলিক রক্তচাপ ৯০ মিলিমিটার পারদের সমান বা বেশি হলে তাকে গর্ভকালীন উচ্চরক্ত চাপ বলে। গর্ভকালীন উচ্চরক্তচাপ শুধু বাচ্চা পেটে আসার পর হয় এবং সাধারণত ২০ সপ্তাহ পর এ সমস্যা ধরা পড়ে। এতেও প্রস্রাবের সঙ্গে অ্যালবুমিন বের হয়ে যায় এবং বাচ্চা ডেলিভারির ছয় সপ্তাহ পর এ উচ্চরক্ত চাপ ভালো হয়ে যায়। গর্ভকালীন সিস্টোলিক রক্তচাপ ১৪০ মিমি পারদের সমান বা বেশি অথবা ডায়াস্টলিক রক্তচাপ ৯০ মিলিমিটার পারদের সমান বা বেশি হলে তাকে গর্ভকালীন উচ্চরক্ত চাপ বলে।

গর্ভাবস্থার প্রথম পাঁচ মাসের মধ্যে রক্তচাপ বেড়ে গেলে সেই মায়ের আগে থেকেই খানিকটা উচ্চরক্তচাপ ছিল বলে ধরে নেওয়া যায়। যাদের আগে থেকেই উচ্চরক্তচাপ আছে এবং ওষুধ খাচ্ছেন, তারা সন্তান নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন। কিছু রক্তচাপের ওষুধ গর্ভাবস্থায় খাওয়া যায় না। তাই প্রয়োজনে চিকিৎসক আগে থেকেই ওষুধ পরিবর্তন করে দিতে পারেন। সেই সঙ্গে রক্তচাপ পুরোপুরি স্বাভাবিক আছে কি না এবং উচ্চরক্তচাপের কোনো জটিলতা আছে কি না, তা-ও পরীক্ষা করে নেওয়া যাবে। প্রি-একাম্পসিয়ার কারণ লক্ষণ ও চিকিৎসা একজন নারীর জীবনে সন্তানধারণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম। পুরো পরিবার নতুন অতিথির আগমনী বার্তার অপেক্ষায় থাকে। সন্তান ধারণ থেকে শুরু করে তাকে পৃথিবীর আলোতে মুখ দেখানো পর্যন্ত পুরো যাত্রাটা অনেক কঠিন। একজন মাকে অনেক বিপদ পাড়ি দিতে হয়। তেমনি একটি বিপদের নাম প্রি-এক্লাম্পসিয়া বা গর্ভাবস্থায় উচ্চরক্তচাপ। গর্ভাবস্থায় অনেকেরই উচ্চরক্তচাপের সমস্যা হয়। নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে না থাকলে অবস্থা জটিল হয়ে যেতে পারে। তাই আসুন আজ জেনে নেই গর্ভাবস্থায় উচ্চরক্তচাপ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য। গর্ভাবস্থার ২০ সপ্তাহের পর যদি কারও উচ্চরক্তচাপ ধরা পড়ে (এ সময় গর্ভবতী মহিলার রক্তচাপ ১৪০/৯০ মিমি অব মারকারির চেয়ে বেড়ে যায়) এবং ইউরিনের সঙ্গে প্রোটিন বা এলবুমিন যায় তবে এই উপসর্গকে প্রি-এক্লাম্পসিয়া বলা হয়।

গর্ভাবস্থায় উচ্চরক্তচাপের লক্ষণসমূহ: ১) উচ্চরক্তচাপ (১৪০/৯০ মিমি বা তার বেশি)। রক্তচাপ ১৬০/১১০ মিমি বেশি হলে মারাত্মক প্রি-এক্লাম্পসিয়ার লক্ষণ : ২) হঠাৎ করে শরীরে পানি আসতে পারে বা শরীর ফুলে যেতে পারে। ৩) মাথাব্যথা বা ক্রমশ  মাথাব্যথা এবং মাথার পেছনে বা সামনে প্রচন্ড ব্যথা। ৪) চোখে ঝাপসা দেখা। ৫) উপরের পেটে প্রচন্ড ব্যথা (ডান পাঁজরের নিচে)। ৬) মাথা ভারী লাগা বা ঝিম ঝিম লাগা। ৭) প্রস্রাব কমে যাওয়া বা গাঢ় রঙের হওয়া।

কারা প্রি-এক্লাম্পসিয়ার অতিরিক্ত ঝুঁকিতে আছেন : ১. যাদের পূর্বে একবার প্রি-এক্লাম্পসিয়া হয়েছে। ২. প্রি-এক্লাম্পসিয়া পরিবারে কারও হলে। ৩. পরিবারে কারও উচ্চরক্তচাপ থাকলে। ৪. যারা বেশি বয়সে মা হন তাদের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ৫. উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং কিডনির সমস্যা আছে এমন রোগীদের। ৬. দুটো সন্তান প্রসবের মাঝে ১০ বছর বা তার বেশি ব্যবধান থাকলে। ৭. গর্ভবতী মায়ের অতিরিক্ত ওজন থাকলে। তাই এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

ডা. শাহজাদা সেলিম, সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর