হালিম সাহেব (ছদ্ম নাম) ১০ বছর ধরে পেটের সমস্যায় ভুগছেন। পেটে যেন সব সময় অশান্তি লেগেই আছে। অনেক কিছুই খেতে পারেন না। খেলে মল কঠিন হয়ে যায়। এজন্য মাংস, ইলিশ মাছ ছেড়েছেন অনেক আগে। শাকসবজিও খেতে পারেন না। শাক, কাঁচা ফলে ও দুধ জাতীয় খাবার খেলে পেটে বদহজম হয় ও ব্যথা করে। বিশেষজ্ঞ তাকে বলেছেন রোগটির নাম আইবিএস। এ রোগ ভালো হয় না, নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ওষুধ খেতে হবে আর শাক, কাঁচা ফল, দুধ বা দুধজাতীয় খাবার খেতে পারবেন না। সবজি খেতেও ডাক্তার নিষেধ করে দিয়েছেন। তাহলে তিনি খাবেনটা কি? না খেয়ে তার শরীর দুর্বল হয়ে গেছে। মল এক সময় কষা আর এক সময় পাতলা হয়। কোষ্ঠ পরিষ্কার হয় না। বার বার টয়লেটে যেতে হয়। সমস্যার জন্য অবশেষে তিনি কোলোরেক্টাল সার্জনের শরণাপন্ন হলেন। তিনি পরীক্ষা করে দেখলেন তার পায়ুপথ একদম সরু হয়ে গেছে। সার্জন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হালিম সাহেবকে বললেন, পেটে এসব সমস্যা অর্থাৎ গ্যাস্ট্রিক, আইবিএস যাই বলুন এর মূল হচ্ছে পায়ুপথ। এ জন্য মল ক্লিয়ার হয় না। ফলে সেটা অন্ত্রে জমে অর্থাৎ খাবারের যে পথ সেটির মধ্যে পরিবর্তন এসে যাচ্ছে। এ জন্য আপনার কোনো কিছু হজম হয় না। একেকবার একেক ধরনের টয়লেট হচ্ছে। ডাক্তার আরও জানালেন, পায়ুপথের একটি অপারেশন করতে হবে।
এই অপারেশন করলে পায়ুপথের এবং পেটের সমস্যা দুটোই ভালো হয়ে যাবে। এটি বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতিতে কাটাছেঁড়া ছাড়াই করা হয়। অনন্যোপায় হয়ে তিনি অপারেশন করাতে রাজি হলেন। ক্রমান্বয়ে তার মলত্যাগ স্বাভাবিক হয়ে এলো আর পেটের সমস্যাও ভালো হতে শুরু করল। অপারেশনের তিন মাস পরে হালিম সাহেব পুরোপুরি সুস্থ। যাদের এরূপ পেটের সমস্যা আছে তাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। মূলত অবহেলা না করে চিকিৎসা নিলে জটিলতা এড়ানো যায়। মনে রাখবেন প্রতিকার নয় এসব ক্ষেত্রে প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম। অধ্যাপক ডা. এসএমএ এরফান কোলোরেক্টাল সার্জন,
জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল, ধানমন্ডি, ঢাকা।