শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

স্লিপ অ্যাপনিয়ার উপসর্গ

স্লিপ অ্যাপনিয়ার উপসর্গ

ভালো থাকার জন্য ভালো ঘুম হওয়া একান্ত প্রয়োজন। তবে অনেকেই আছেন যাদের মোটেও ভালো ঘুম হয় না। আমেরিকায় জাতীয় নিদ্রা ফাউন্ডেশনের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সেখানে বড়দের মধ্যে শতকরা ৬০ জনই সপ্তাহে দুই রাত বা তারও বেশি সময় ঘুমজনিত সমস্যায় ভোগেন। নিদ্রাকালীন শ্বাসরুদ্ধতা : অ্যাপনিয়া একটি গ্রিক শব্দ। এর অর্থ শ্বাসহীনতা। স্লিপ অ্যাপনিয়া তিন রকমÑ ১. নাক ও গলায় বাধাজনিত, ২. মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রিত এবং ৩. মিশ্র ধরনের। তিন প্রকারের মধ্যে বাধাজনিত অ্যাপনিয়ার রোগী সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। যে কারণেই হোক অ্যাপনিয়ার চিকিৎসা না করা হলে রোগীর শ্বাস বারবার কিছু সময়ের জন্য বন্ধ তাকে। কখনো কখনো সারারাত এমন হয়। কখনো এক-দুই মিনিটের জন্য বা তার বেশিও হতে পারে।

মস্তিষ্কে কোনো কারণে অ্যাপনিয়া হলে যেসব মাংসপেশি শ্বাস নেওয়ার কাজ করে তারা সংকেত পাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকে। মিশ্র কারণে হলে একসঙ্গে দুটো প্রক্রিয়ায়ই জড়িত থাকে। এছাড়া প্রতিবার অ্যাপনিয়া হলে মস্তিষ্ক অল্প সময়ের মধ্যে রোগীকে জাগিয়ে দেয়। যাতে শ্বাস টানতে পারে।

উপসর্গ : অ্যাপনিয়ার রোগীরা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপে উচ্চ শব্দে নাক ডাকে। তাদের নাক ডাকার ধরনটি হয় অস্বাভাবিক। থেমে থেমে এবং হাঁপানির মতো শ্বাস ছেড়ে তারা নাক ডাকে। ঘুমের বিভিন্ন স্তর পর্যবেক্ষণ, অ্যাপনিয়া রোগ নির্ণয়, মাত্রা ও গুরুত্ব এবং সেভাবেই চিকিৎসা করার জন্য স্লিপ অ্যাবরেটরির ব্যবস্থা আছে।

চিকিৎসা : সাধারণ পদক্ষেপগুলো হচ্ছে- অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলা, অ্যালকোহল, ধূমপান পরিহার, অতিরিক্ত চা-কফি পান ও ঘুমের ওষুধ এড়িয়ে চলা; এক পাশে কাত হয়ে শোয়ার অভ্যাস করা এবং নাক বন্ধ থাকার সমস্যা কমাতে ওষুধ ব্যবহার করা। এর চেয়েও সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে সিপিএপি বা কনটিনিউয়াস পজিটিভ এয়ারওয়ে প্রেসার বা একনাগাড়ে শ্বাসতন্ত্রে বায়ুর চাপ বাড়িয়ে রাখার যান্ত্রিক ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থাটি বেশ কার্যকর। এতে ঘুমের সময় একটি মাস্ক বা মুখোশ পরিয়ে দেওয়া হয় এবং উচ্চ চাপের বাতাস বইয়ে দিয়ে শ্বাসতন্ত্রকে খোলা রাখা হয়। বিভিন্ন রোগীর জন্য দরকার হয় বিভিন্ন আকারের মাস্ক। এগুলো নির্ধারণের জন্য চিকিৎসকের সহায়তা প্রয়োজন। তাই এ বিষয়ে অবহেলা না করে আমাদের সচেতন হতে হবে।

অধ্যাপক ডা. মণিলাল আইচ লিটু,

বিভাগীয় প্রধান, নাক-কান ও গলা বিভাগ, মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর