রবিবার, ২৯ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

ইরিটেবল বাত্তয়েল সিনড্রোম

ইরিটেবল বাত্তয়েল সিনড্রোম

ইরিটেবল বাত্তয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) অন্ত্রের বেশ প্রচলিত একটি রোগের নাম যা সাধারণত বেশ দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়।

কারণ : আইবিএস ছোঁয়াছে, বংশগত বা ক্যান্সার জাতীয় কোনো রোগ নয়। এই রোগের কোনো নির্দিষ্ট কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে কিছু বিষয় এই রোগে প্রভাব ফেলে থাকে যেমন- পরিপাকতন্ত্রের পরিবর্তিত চলাচল, ব্রেন ও অন্ত্রের কাজের মধ্যে সমন্বয়ের পরিবর্তন এবং মানসিক বিপর্যস্ততা। কিছু বিষয় আছে যা এই রোগটিকে  ট্রিগার) করে থাকে।

খাবার : কিছু কিছু খাবারে অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা রোগের প্রকোপ বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে গরুর দুধ, তেল বা মসলা জাতীয় খাবার। কারও ক্ষেত্রে শাক জাতীয় খাবারেও সমস্যা হতে পারে। অবশ্য কোন রোগীর কোন ধরনের খাবারে সমস্যা হয় তা সাধারণত রোগীই ভালো বলতে পারে। স্ট্রেস অতিরিক্ত মানসিক চাপ, (উত্তেজনা, দুশ্চিন্তা, অবসাদগ্রস্ততা, মানসিক বিপর্যস্ততা, অতিরিক্ত ভয় ইত্যাদি) এই রোগের উপসর্গ বাড়িয়ে দিতে পারে। হরমোনের প্রভাবে রোগের প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে। তাই সাধারণত মহিলাদের বেশি হয় এবং অল্প বয়স্ক রোগীদের বেশি হয়ে থাকে।

উপসর্গ :  আইবিএস রোগের উপসর্গ ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে। সবচেয়ে কমন উপসর্গ হচ্ছে- পেটে অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভূত হওয়া যা সাধারণত মলত্যাগের পর ভালো হয়ে যায়। পেট ফাঁপা ভাব হওয়া। আরেকটি হচ্ছে মলত্যাগের অভ্যাসের পরিবর্তন (পাতলা পায়খানা) বা কোষ্ঠ কাঠিন্য।

১। আইবিএস-ডি : পাতলা পায়খানা যুক্ত আইবিএস-এর উপসর্গ হলো- হঠাৎ মলত্যাগের তাড়না/ভাব হওয়া, হঠাৎ পেটে ব্যথা বা অস্বস্তি ভাব হওয়া, অতিরিক্ত বায়ু নির্গমন, পাতলা পায়খানা, ঘন ঘন বাথরুমে হওয়া, অসম্পূর্ণ মলত্যাগের ভাব হওয়া, বমি বমি ভাব, মলের সঙ্গে অতিরিক্ত আম যাওয়া

২। আইবিএস-বি : কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত আইবিএস এর উপসর্গ-

কঠিন পায়খানা হওয়া, মলত্যাগে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ ও অনিয়মিত।

চিকিৎসা : আইবিএস রোগের চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ হলো ‘রোগীকে আশ্বস্ত করা’। অনেক রোগীই ভয় পেয়ে যান তার ক্যান্সার হয়েছে কিনা এবং এই উদ্বিগ্নতা রোগীর উপসর্গ আরও বাড়িয়ে দেয়।

যাদের কোষ্ঠ কঠিন্য ধরনের আইবিএস। তাদের ক্ষেত্রে আঁশমুক্ত খাবার খাদ্যাভ্যাসে যোগ করতে হবে, পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং টয়লেটে পর্যাপ্ত সময় দেওয়াকে উৎসাহিত করতে হবে। যাদের ডায়রিয়া জনিত আইবিএস তাদের দুধ, তেল-চর্বি, মসলাজাতীয় খাবার ইত্যাদি যা রোগের প্রকোপ বাড়ায়, তা বর্জন করতে হবে। তাদের খাদ্যের তালিকা হতে অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার, ফল এবং চা ইত্যাদি কম করে খেতে বলতে হবে। মানসিক প্রশান্তি কিভাবে বাড়ানো যায়, সেভাবে রোগীদের উৎসাহিত করতে হবে।

ডা. আফরিন সুলতানা, সার্জারি বিশেষজ্ঞ, হলি ফ্যামিলি রেড

ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

সর্বশেষ খবর