বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনাভাইরাস নিয়ে কিছু কথা

করোনাভাইরাস নিয়ে কিছু কথা

ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়ানো : করোনাভাইরাস একজন থেকে আরেকজনের মধ্যে প্রধানত সংক্রমিত হয়- যদি একজন ব্যক্তি সংক্রমিত ব্যক্তির খুব কাছে বসে (প্রায় ৬ ফুটের মধ্যে)। যদি সংক্রমিত ব্যক্তি সুস্থ ব্যক্তির পাশে কাশি দেয় বা হাঁচি দেয়, কাশি বা হাঁচির কনা কাছাকাছি অবস্থান করা ব্যক্তির মুখে অথবা নাকে লাগে এবং নিঃশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে ঢুকে যায়।

অসুস্থ না হয়েও কি কেউ ভাইরাস ছড়াতে পারে : কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সংক্রামক চিন্তা করা হয়। উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগেও সংক্রমিত ব্যক্তি ভাইরাস ছড়াতে পারে।

দূষিত কোনো কিছুর ওপরের স্তর বা দূষিত বস্তুর সংস্পর্শ থেকে সংক্রমণ : কোনো ব্যক্তি ভাইরাস দ্বারা দূষিত কোনো টেবিল, চেয়ার, বই-পত্র বা বিছানা স্পর্শ করলে কিংবা ভাইরাস দ্বারা দূষিত যে কোনো বস্তু স্পর্শ করলে এবং সেই হাত দিয়ে নিজের মুখ, নাক বা চোখ স্পর্শ করলে ওই ব্যক্তি কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হতে পারেন।

জনসমাজে বিস্তৃতি : একটি এলাকায় ভাইরাসটি ঢুকলে এবং সেখানকার লোকজন সতর্ক না হলে ওই এলাকার বিপুল লোকজন ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারেন।

কী উপসর্গ প্রকাশ পায় : ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ২ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে কভিড-১৯-এর উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

এসব উপসর্গের মধ্যে রয়েছে : জ্বর, কাশি, ছোট ছোট শ্বাস নেওয়া ও শ্বাস নিতে কষ্ট।

অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে- ক্লান্তি, শরীর ব্যথা, সর্দি, গলাব্যথা। কভিড-১৯-এর উপসর্গ মৃদু থেকে তীব্র হতে পারে। কিছু ব্যক্তির কোনো উপসর্গ নাও দেখা দিতে পারে। যে সব ব্যক্তি বয়স্ক কিংবা যাদের দীর্ঘমেয়াদি রোগ রয়েছে যেমন হৃদরোগ, ফুসফুসের অসুখ কিংবা ডায়াবেটিস - তারা করোনায় আক্রান্ত হলে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।

করোনাভাইরাসের চিকিৎসা : এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের বিশেষ চিকিৎসা নেই। অ্যান্টিবায়োটিক কোনো কাজে আসে না, কারণ তারা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে না। চিকিৎসার লক্ষ্য হলো উপসর্গ কমানো। আপনাকে অন্যান্য লোকজনের কাছ থেকে দূরে, আইসোলেশনে থাকতে হবে। তবে বিজ্ঞানীরা বর্তমানে করোনাভাইরাসের জন্য ম্যালেরিয়ার ওষুধ ক্লোরোকুইন ফসফেটের এন্টিভাইরাল ভূমিকাকে কাজে লাগিয়ে ওই ওষুধ প্রয়োগ করা কথা বলছেন। একই সঙ্গে এজিথ্রোমাইসিনের কথাও বলছেন।

নিজেকে রক্ষা করুন : সাবান-পানি দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে দুই হাত ধোবেন। বিশেষ করে আপনি জনসমাগম স্থল থেকে ফেরার পর অথবা আপনি নাকঝাড়া, কাশি অথবা হাঁচি দেওয়ার পর। যদি সাবান ও পানি পর্যাপ্ত না থাকে তাহলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। আপনার হাতের দিকে ভালোভাবে মাখবেন ও না শুকানো পর্যন্ত হাত দুটো এক সঙ্গে ঘষবেন। হাত না ধুয়ে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না। বন্যজন্তু কিংবা গৃহপালিত পশুপাখি খালি হাতে স্পর্শ করবেন না। শুধু অসুস্থ মানুষের সংস্পর্শেই নয়, অন্য সবার সংস্পর্শ এড়িয়ে চলবেন, কারণ আপনি জানেন না কেউ করোনাভাইরাস বহন করছে কিনা। যদি আপনার এলাকায় কভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ে তাহলে অন্য লোকদের সঙ্গে আপনি দূরত্ব বজায় রেখে চলবেন। ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে যাবেন না। মাস্ক ব্যবহার করবেন।

ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল

সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর