বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

রোজায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে

ডা. মো. ইব্রাহিম হোসেন

রোজায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে কোনো ভাইরাসের সংক্রমণ এড়িয়ে চলতে হলে সতর্কতা পদক্ষেপের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে হবে। তাহলে রোজা রেখে কীভাবে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করা যায় তা নিয়ে এই প্রতিবেদন-

১. পর্যাপ্ত পানি পান করা : বিশেষজ্ঞরা বলছেন সুষম ডায়েট পরিকল্পনা করে রোজা রাখা হলে তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। সে ক্ষেত্রে প্রথমেই যেটি খেয়াল রাখতে হবে তা হলো-দেহের চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন অন্তত আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে, আর এটা করতে হবে ইফতারের পরপরই।

২. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া : * ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। তাই কমলা, জাম্বুরা, লেবু জাতীয় খাবার, করলা, আমলকী, পেয়ারা এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে, এ সময় যেহেতু কমলাটা তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না তাই এর বিকল্প হিসেবে পেয়ারা বা আমলকী খাওয়া যেতে পারে সেটা ইফতারে সপ্তাহে চার দিন রাখলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়। কিন্তু বাইরে যেহেতু যাওয়া যাচ্ছে না তাই ফলমূল পাওয়াটা বেশ ঝামেলাই হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কীভাবে পূরণ হবে ভিটামিন সি-এর চাহিদার সেটারও উপায় রয়েছে।  * অঙ্কুরিত ছোলা ভিটামিন ‘সি’ এর একটি ভালো উৎস। -ছোলা অঙ্কুরিত করতে হলে এক রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে তারপর একরাত ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখলে ছোলা থেকে ছোট ছোট শেকড় বের হয় অর্থাৎ এটি অঙ্কুরিত হয়। তখন এটা খাওয়া যেতে পারে।

৩. রঙিন শাকসবজি খাওয়া : রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করার আরেকটি ভালো উপাদান হচ্ছে- অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। * যেকোনো রঙিন শাকসবজিতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। এগুলো বাজার থেকে কিনার পর সতর্কতার অংশ হিসেবে যদি ১৪ মিনিট লবণ-পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় কিংবা পাঁচ লিটার পানিতে তিন চামচ সিরকা মিশিয়ে  রাখা হয় তাহলে আর কোনো ঝুঁকি থাকে না। * খেজুরের মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে-এটা ইফতারিতে একটু বেশি খাওয়া যেতে পারে।

৪. জিঙ্ক, সেলেনিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার :  জিঙ্ক খুব ভালো করে পাওয়া যায় গরুর মাংস, পালংশাক, গরুর কলিজা, ছোলার ডাল, মসুর ডাল এগুলোতে। -এখানে আবারও আসছে ছোলার কথা। আর ছোলা তো আমাদের ইফতারিতে প্রতিদিনই থাকে তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে খুব বেশি তেল মসলা দিয়ে যাতে ছোলা রান্না করা না হয়।

* খুব বেশি কোলেস্টেরলের সমস্যা যদি না থাকে তাহলে সপ্তাহে দুদিন গরুর মাংস খাওয়া যেতে পারে। * এ ছাড়াও মিষ্টি কুমড়ার বিচি, বাদাম এগুলোতেও জিংক প্রচুর পরিমাণে থাকে।  * সেলেনিয়াম প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়- ইলিশ আর সরিষার দানার মতো খাবারে।

৫. প্রোটিন বেশি খাওয়া চর্বি এড়িয়ে চলা : * ছোলার ডাল, ডালের পিয়াজু এগুলো ইফতারে প্রচুর পরিমাণে খাওয়া হয় এগুলোতে ভালো পরিমাণে প্রোটিন থাকে, তবে এ সময় ট্রান্সফ্যাট বা  রূপান্তরিত চর্বি যা সাধারণত বেকারি পণ্যতে পাওয়া যায় সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।  * এ ছাড়া ইফতারের পর নিয়মিত কুসুম গরম পানি আর লবণ মিশিয়ে গার্গল করা, রং চা বা গরম স্যুপ খাওয়া ভাইরাস আক্রমণের এই সময়টাতে সুস্থ থাকতে সাহায্য করতে পারে।

 

সর্বশেষ খবর