রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

শ্বাসকষ্টের রকমফের

শ্বাসকষ্টের রকমফের

কিছু কিছু বক্ষব্যাধি রয়েছে যেখানে প্রধান উপসর্গই থাকে একটু নড়াচড়া অথবা সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গেলে শ্বাসকষ্ট বাড়ে। আবার বিশ্রামে থাকলে শ্বাসকষ্ট এমনিতেই অথবা অল্প ওষুধেই ভালো থাকে। রোগগুলোর মধ্যে ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস, এমফাইসিমা অন্যতম। এছাড়াও পুরনো বক্ষব্যাধির কারণে ফুসফুসের যথেষ্ট ক্ষতি হয়ে থাকলেও এ সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। হাঁপানির শ্বাসকষ্ট আবার এমন হয় না। বসে থাকলেও শ্বাসকষ্ট চলতেই থাকে। যদিও অনেক হাঁপানি রোগী আছে যাদের ব্যায়ামে অথবা ভারী পরিশ্রমে হাঁপানি বেড়ে যায়। ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস রোগটি সাধারণত পুরুষেরই বেশি হয়ে থাকে এবং মধ্য বয়সের পর থেকেই তা প্রকাশ পেতে শুরু করে। ধূমপায়ীদের মধ্যে এই রোগটির প্রকোপ বেশি দেখা যায়। ধূমপান ছাড়াও ধুলা, গাড়ির কলো ধোঁয়া, বিষাক্ত পরিবেশ এবং  স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ এই রোগের উত্তম সহায়ক। সাধারণত কোনো ব্যক্তি বছরে অন্তত তিন মাস ধরে কাশিতে ভুগতে থাকলে এবং এভাবে দুই বছরের অধিক হলে আমরা রোগীকে ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসের রোগী বলে ধরে নেই। অবশ্য এই লক্ষণের সঙ্গে রোগীর বয়স নির্ণয়টা নিখুঁত হয়। অনেকে আবার সাধারণ হাঁপানির সঙ্গে এই রোগকে এক করে দেখেন। এ রোগে আক্রান্তদের শব্দ করে কাশি হয়। সঙ্গে প্রায়ই শ্লেষ্মা বা কফ থাকে। ব্রঙ্কাইটিস জীবাণু দিয়ে হয়ে থাকে। এ রোগের লক্ষণ হলো-কাশির সঙ্গে অন্তত তিন মাস ধরে শ্লেষ্মা হয়ে থাকে। প্রতি বছরই একই রোগীর এ রোগ হতে পারে। প্রথমদিকে তার কাশি থাকে কিন্তু সেটা জীবাণু কর্তৃক সংক্রমিত হয়ে পাকা হলুদ কফে পরিণত হয়। একটু নড়াচড়া করলেই শ্বাসকষ্ট বাড়া সমস্যাটি বেশি দেখা যায় এমফাইসিমা নামক বক্ষরোগে। এই রোগটি মোটামুটিভাবে প্রচলিত একটি দুরারোগ্য বক্ষব্যাধি, যেখানে সমস্যা মানেই কফ, কাশি আর শ্বাসকষ্ট। যখন ফুসফুসের কাঠামোর অভ্যন্তরে বাতাস জমে ফুলে ওঠে তখন ফুসফুসের ভিতরের অংশগুলো নষ্ট ও অক্ষম হয়ে স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ হারিয়ে অকার্যকর হয়ে দাঁড়ায়। এই রোগ একদিনে তৈরি হয় না। মাসের পর মাস এমন কি বছরের পর বছর ধরে ফুসফুসে তৈরি হয়।  ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস এবং এমফাইসিমা একে অন্যের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। যদি এমফাইসিমা অন্য কোনো রোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকে অর্থাৎ যদি ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস এবং হাঁপানির জটিলতার কারণে না হয়ে থাকে তবে প্রথমদিক থেকেই ব্যাপক শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং রোগী একটু চলাফেরা করলেই আর দম পায় না। পরের দিকে শ্বাসযন্ত্র এবং হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতার জন্য ফেইলিওর দেখা দেয় এবং শরীরের রং বেশ গোলাপি গোলাপি দেখায়।

অধ্যাপক ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ

বক্ষ্যব্যাধি বিশেষজ্ঞ, ইকবাল চেস্ট সেন্টার, মগবাজার ওয়্যারলেস, ঢাকা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর