বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
প্রেসক্রিপশন

নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারণ

অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু

নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারণ

নাক দিয়ে রক্ত পড়া বা এপিসট্যাক্সিস সমস্যাটি প্রায়শই দেখা যায়। সাধারণত ৬০ শতাংশ মানুষ জীবনে কোনো না কোনো সময় নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যার সম্মুখীন হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও অনেক সময় এটি জটিল রোগের উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়।

রক্ত পড়ার কারণ : যে কোনো বয়সের নারী/পুরুষ এ সমস্যায় পড়তে পারেন। নাক দিয়ে বিভিন্ন কারণে রক্ত পড়তে পারে। নাক, কান, গলা ছাড়াও অন্য রোগের কারণেও নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।

ক) অধিকাংশ ক্ষেত্রে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।

খ) নাকের সমস্যা : আঘাতজনিত, অপারেশনজনিত, নাকের সর্দি, সাইনোসাইটিস।

নাকের বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন যেমন- এট্রফিক রাইনাইটিস, রাইনসপো রিডিওসিস। নাকের ভিতর টিউমার। নাকের মাঝখানের হাড় অতিরিক্ত বাঁকা অথবা মাঝখানের পর্দায় ছিদ্র।

গ) সাধারণ কারণ : ১. কোনো কোনো ওষুধ সেবনের সময় (অংঢ়রৎরহ/ ডধৎভধৎরহ জাতীয়)। ২. শরীরের উচ্চ রক্তচাপ। ৩. আমাদের রক্তনালির কিছু জন্মগত ত্রুটি থাকলেও নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। ৪. কারও কারও মাসিকের সময় এবং গর্ভাবস্থায়। ৫. জন্ডিস বা লিভারের প্রদাহ, লিভার সিরোসিসের মতো লিভারের অসুখ। ৬. রক্তের রোগ, যেমন- এ প্লাস্টিক অ্যানেমিয়া, হিমোফিলিয়া, থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া।

চিকিৎসা : তাৎক্ষণিক প্রাথমিক করণীয়গুলো : ১. রক্ত পড়া শুরু হলে নাকে চাপ দিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে বসে পড়তে হবে। বৃদ্ধাঙ্গুল ও প্রথম আঙ্গুল দিয়ে নাকের দুই ছিদ্র জোরে বন্ধ করুন। মুখ দিয়ে শ্বাস নিন। এভাবে ১০ মিনিট ধরে রাখুন। এ সময় আঙ্গুল ছাড়বেন না, প্রয়োজন হলে আরও বেশিক্ষণ চাপ দিয়ে ধরে রাখুন। ২. এ সময় সম্ভব হলে কপালে, নাকের চারপাশে বরফ ধরে রাখুন। মুখের ভেতরে তালুর যে অংশ নাক বরাবর সেখানে বরফ চাপ দিয়ে ধরুন। তাহলে রক্ত পড়া তাড়াতাড়ি বন্ধ হবে। ৩. যদি রক্ত ১৫-২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে পড়তে থাকে, তবে দেরি না করে পাশের হাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগে চলে যান।

প্রাথমিকভাবে হাসপাতালে যা করা হয় : প্রথমে চিকিৎসক আপনাকে পরীক্ষা করে দেখবেন এবং আপনার সমস্যার মাত্রা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। ২. নাকের রক্তপাত বন্ধ করতে অনেক সময় গজ/তুলা দিয়ে নাকের ভেতরে প্যাক দিতে হয়। অনেক সময় পর্যাপ্ত প্যাক দেওয়ার জন্য রোগীকে অজ্ঞান করতে হয় এবং হাসপাতালে ভর্তি রাখতে হয়। ৩. অতিরিক্ত রক্তপাত হলে রোগীকে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তাই এ বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা প্রাথমিক লক্ষণ ও উপসর্গ থেকে চিকিৎসা নেওয়া উত্তম। কারণ কথায় আছে প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম। তাই সচেতন হতে হবে।

লেখক : বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, সিলেট।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর