সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিরাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে আধুনিক সব সুবিধা রয়েছে বেসরকারি সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিতে (এসইইউ)। তেজগাঁওয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে বহুতলবিশিষ্ট নান্দনিক স্থায়ী ক্যাম্পাস। প্রায় চার বিঘা জমির ওপর নান্দনিক স্থায়ী ক্যাম্পাসের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। খুব শিগগিরই সব বিভাগই স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করবে। সুদৃশ্য একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, শহীদ মিনার, খেলার মাঠ, মিলনায়তন ছাড়াও যুগোপযোগী শিক্ষা উপকরণ নিয়ে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই গড়ে তুলেছে সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাও। প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে স্বতন্ত্র ল্যাব সুবিধা, ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুবিধা, ধূমপান-মাদক-রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ- সব মিলিয়ে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়কে পৌঁছে দিয়েছে এক অনন্য অবস্থানে।
তুলনামূলক কম খরচে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনা অনুযায়ী আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে শিক্ষা-সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইনে পরিচালনা করছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
২০৩০ সালের মধ্যে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়ার লক্ষ্যে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সাউথইস্ট। আন্তর্জাতিক ও স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম বিনিময়ের চুক্তি করছে।
মেধাবী ও আর্থিকভাবে অনগ্রসর শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই বিশেষ ছাড় বা শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ ছাড়া খেলোয়াড়, শিল্পী, বিতার্কিক, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, ভাই-বোন/স্বামী-স্ত্রী, করপোরেট, বিসিএস ক্যাডার ও সামরিক ব্যক্তিবর্গের জন্য টিউশন ফি ছাড়ের সুবিধা রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, দুটি শাখা লাইব্রেরি এবং চারটি সেমিনার লাইব্রেরি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিগুলো সম্পূর্ণ অটোমেটেড ও ওয়েব বেজড। শিক্ষক ও ছাত্ররা যে কোনো স্থান থেকেই অনলাইন ক্যাটালগের মাধ্যমে লাইব্রেরি ব্যবহার করতে পারেন। বর্তমানে লাইব্রেরিতে ই-বুকসহ লক্ষাধিক বই রয়েছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা প্রকাশকদের প্রকাশিত ২৫ হাজার ৮৩৭টি অনলাইন জার্নাল ও ১ হাজার ২৫০টি ই-বুক একসেস ও ডাউনলোড সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে হাজারেরও অধিক গ্রন্থের সমন্বয়ে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার গড়ে তোলা হয়েছে।
একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননের বিকাশে পরিচালিত হচ্ছে ১৮টি সংগঠন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে কালচারাল সোসাইটি, ইংলিশ ক্লাব, গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস ক্লাব, ডিবেট ক্লাব, সোশ্যাল সার্ভিসেস ক্লাব, মুভি অ্যান্ড ড্রামা ক্লাব, ট্যুরিজম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাব, ন্যাচার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ক্লাব, মডেল ইন্টা. অর্গানাইজেশন ফোরাম, ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড লিটারেচার ক্লাব, বিজনেস ইনোভেশন ফোরাম, কম্পিউটার ক্লাব, ফার্মেসি ক্লাব, টেক্সটাইল ক্লাব, ইইই ক্লাব, মুট কোর্ট সোসাইটি, আর্কিটেকচার ক্লাব এবং ইকোনোমিস্ট ক্লাব।
পুস্তকভিত্তিক পড়াশোনায় কিছুটা হলেও শূন্যস্থান থেকে যায়। সেদিক থেকে হাতে-কলমে শিক্ষার বিকল্প কিছু নেই। অন্যদিকে কিছু বিভাগের পড়াশোনাই অনেকটা এমন যে, ব্যবহারিক জ্ঞান না থাকলেই নয়। সব কিছু বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবহারিক ল্যাবের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। সেদিক থেকেও এগিয়ে রয়েছে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়। কেননা এখানে প্রতিটি বিভাগের জন্য আধুনিক ল্যাব রয়েছে। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিসহ বিশেষ কম্পিউটার ল্যাব ছাড়াও আইন বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ, অর্থনীতি বিভাগের জন্য আলাদা কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে। সিএসই বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষণের জন্য অত্যাধুনিক টেলিকমিউনিকেশন ল্যাব রয়েছে। ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জন্য অ্যানালগ ও ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স ল্যাব, মেশিন ল্যাব, পাওয়ার সিস্টেম ল্যাব, টেলিকমিউনিকেশন ও মাইক্রোওয়েভ ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাব রয়েছে, যা অত্যাধুনিক যন্ত্রে সজ্জিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল নিয়মনীতি মোতাবেক সমৃদ্ধ ছয়টি ফার্মেসি ল্যাবসহ মাইক্রোবাইয়োলজি ল্যাব এবং স্বতন্ত্র সেমিনার লাইব্রেরি রয়েছে ফার্মেসি বিভাগে। টেক্সটাইল বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ টেক্সটাইল ল্যাব, নিটিং ল্যাব, ডাইং ল্যাব, ওভেন ল্যাব, এক্স-রাইট স্পেকট্রোফটোমিটারসহ প্রয়োজনীয় সব সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে।
বলে রাখা ভালো, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বীমা পলিসি চালু রয়েছে। এ সুবিধা শুধু তাদেরই রয়েছে। ‘পিপলস পার্সোনাল এক্সিডেন্ট ইন্স্যুরেন্স পলিসি’ শীর্ষক এ পলিসির আওতায় শিক্ষার্থীরা যে কোনো দুর্ঘটনার শিকার হলে আর্থিক সহায়তা পাবেন এবং নির্বিঘ্নে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবেন। এ ছাড়াও সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রয়েছেন ফুলটাইম চিকিৎসক।
ওষুধশিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে সাউথইস্টের ফার্মাসিস্টরা
বাংলাদেশে যে গুটিকয়েক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় তাদের অন্যতম। অনেকেই এই ফার্মেসি সাবজেক্টে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করতে এসে উচ্চ টিউশন ফির কারণে সিদ্ধান্ত নিতে অপারগ হয়। কিন্তু সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক রকম ওয়েভার পলিসি বিদ্যমান থাকায় মেধাবী শিক্ষার্থী যারা উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল অর্জন করে তাদের পক্ষে ফার্মাসিতে অধ্যয়নের সুযোগ বেড়ে যায় এবং হাতের নাগালে চলে আসে। একটা কথা প্রচলিত ছিল, “স্টাডি ফার্মেসি ফ্লাই টু আমেরিকা”। আসলে ফার্মেসি সাবজেক্টে অনেক স্টুডেন্টের পছন্দ করার এটাও আরেকটা কারণ যে, এ বিষয়ের ওপর ইউরোপিয়ান, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, কোরিয়াসহ বিভিন্ন কান্ট্রিতে ফুল ফান্ডিং স্কলারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে।
দক্ষ প্রযুক্তিবিদ গড়ছে সাউথইস্ট :
সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ ২০০২ সালে মাত্র ৩৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা করে। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬০০ এর অধিক। এটি প্রাথমিক পর্যায়ে বুয়েটের সিএসই বিভাগের প্রখ্যাত অধ্যাপক ড. এম. কায়কোবাদের কাছ থেকে মূল্যবান নির্দেশনা পেয়েছিল। এ বিভাগে গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড সিলেবাস অনুসরণ করা হয়। সিএসই বিভাগের ক্লাস রুটিন এবং পরীক্ষার রুটিন সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়। সিএসই বিভাগের শিক্ষক, স্নাতক এবং শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে এখানে কাজ করছে। এখানে দুটি বিষয়ে পড়ানো হয়। বিএসসি ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিএসসি ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (ডিপ্লোমা উত্তীর্ণদের জন্য)।
অধ্যাপক ড. এএফএম মফিজুল ইসলাম
উপাচার্য, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি
সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম মফিজুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এখানে কিছু বিভাগ, ইনস্টিটিউট রয়েছে যেগুলো অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে অনেক টাকা লাগে- এটি সত্য নয় সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে। মানসম্মত বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা থাকার কারণে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে এখানে। তুলনামূলক কম খরচে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান শেষে দেশে-বিদেশে মেধার স্বাক্ষর রাখছেন গ্র্যাজুয়েটরাও। সম্প্রতি ঢাকা ট্রিবিউন ও বাংলা ট্রিবিউনের উদ্যোগে ওআরজি-কোয়েস্ট রিসার্চ লি.-এর সহযোগিতায় প্রকাশিত হয়েছে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং ২০১৯ যেখানে ১০৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ১২তম স্থান অর্জন করেছে। ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যার ভিত্তিতে তৃতীয় এবং গবেষণায় পঞ্চম স্থান লাভ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির ফার্মেসি বিভাগ ফার্মেসি কাউন্সিল অব বাংলাদেশ (পিসিবি) কর্তৃক, আর্কিটেকচার বিভাগ ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ (আইএবি) কর্তৃক, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ (ইইই) ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ারস, বাংলাদেশ (আইইবি) কর্তৃক এবং আইন ও বিচার বিভাগ বাংলাদেশ বার কাউন্সিল (বিবিসি) কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত।
