বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়তে গতি নেই রাজশাহীতে

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

দেশে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নিয়েছিল সরকার। ২০১৫ সালের পর বিভিন্ন সময় এই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর প্রকল্প অনুমোদন পায়। কিন্তু সাত বছরেও একটির কাজেও গতি আসেনি। রাজশাহী অর্থনৈতিক অঞ্চলের জায়গা নির্ধারণ জটিলতা কাটেনি। সিরাজগঞ্জে টাকার অভাবে ভূমি অধিগ্রহণ করা যায়নি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের জন্য জায়গার প্রস্তাবনা পাঠানো হলেও আটকে আছে দুই বছর ধরে। জানা গেছে, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন, ২০১০-এর ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) প্রতিষ্ঠা করে সরকার। এ প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে বলে জানানো হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে প্রস্তাবের প্রায় তিন বছর পেরিয়ে গেলেও কাজের দৃশ্যমান অগ্রগতি করতে পারেনি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সম্ভাব্য স্থান নির্ধারণের কাগজপত্র পাঠানো হয় দুই বছর আগে। তবে বেজা থেকে দুইবার জায়গা পরিদর্শনে আসেন নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী। তারপরও প্রকল্পটি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার কয়রা, জয়কৃঞ্চপুর, মাড়িয়া, বালানগর ও ভবানীপুর এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কথা ছিল। মোট জমির পরিমাণ ২০৪ দশমিক ০৬ একর। এর মধ্যে ব্যক্তি মালিকাধীন ২০২ দশমিক ৪০ একর এবং সরকারি খাস জমি এক দশমিক ৬৬ একর। অর্থনৈতিক অঞ্চলটি রাজশাহীর হরিয়ান রেলস্টেশন থেকে ১০ কিলোমিটার এবং রাজশাহী বিমানবন্দর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে। স্থানটির সঙ্গে সড়ক, রেল ও প্লেন যোগাযোগের সুবিধা আছে। জমি অধিগ্রহণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯৬ কোটি টাকা। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শরিফুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জায়গা নির্ধারণ করে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বেজার একজন সদস্য এসে সেটি পরিদর্শন করেছেন। এখন বেজার পরবর্তী সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রাজশাহী জেলা প্রশাসন।

নাটোর অর্থনৈতিক অঞ্চলটি লালপুর উপজেলার আরজী, বাকনাই, রসুলপুর, বন্দোবস্ত গোবিন্দপুর, বাকনাই বালিতিতা, লালপুর ও চরজাজিরা এলাকায় গড়ে তোলার কথা ছিল। জমির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ২২০ একর। ঈশ্বরদী-বাঘা-রাজশাহী জাতীয় সড়ক প্রকল্প থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে। প্রকল্প এলাকা থেকে মূল পদ্মা নদীর দূরত্ব ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার। ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। ঈশ্বরদী বিমানবন্দরের দূরত্ব ১০ কিমি। নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, অর্থনৈতিক অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শিগগিরই নাটোরে আসবেন। এরপর এই প্রকল্পটি চূড়ান্ত রূপ পাবে।

সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজে কিছুটা গতি ফিরলেও মাঝপথে তা থেমে গেছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায়। ঘরবাড়ি ও গাছপালার ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়ায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম শাহিনুর রহমান জানান, ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৪৭ কোটি টাকা তারা জেলা প্রশাসকের দফতরে জমা দিয়েছেন। তারপরও কাজ করতে পারছেন না।

সর্বশেষ খবর