বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

স্বল্প পুঁজিতে সফল নারী উদ্যোক্তারা

হাতের কাজের রকমারি পণ্য নিয়ে স্বপ্নযাত্রা শুরু করেছেন গ্রামীণ নারীরা

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

প্রাণীবিদ্যায় স্নাতকোত্তর নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার নিমদীঘি গ্রামের গৃহবধূ সাঈদা রায়হানা। ভালো ফলাফল করেও চাকরির পেছনে ছুটেননি তিনি। অভিজ্ঞতা না থাকলেও নেমে পড়েছেন ব্যবসায়। স্বল্প পুঁজিতে গ্রামীণ নারীদের হাতের কাজের রকমারি পণ্য নিয়ে শুরু করেছেন স্বপ্নযাত্রা।

সাঈদা জানান, হাতের কাজের দক্ষতা বাড়াতে তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তার দলের নারীরাও বেশ দক্ষ। তারপরও তিনি বিনিয়োগে ঝুঁকি নিতে সাহস পাচ্ছিলেন না। কিন্তু বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প-ইএসডিপির আওতায় রাজশাহীতে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর সেই ভীতি কেটেছে। সাঈদা হস্তশিল্প নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বাণিজ্যিক ভেড়ার খামার এবং ভেড়ার পশম থেকে বস্ত্রবুনন শিল্প গড়ে তুলতে চান। তবে তাতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মুলধন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীতে ১৫টি ব্যাচে মোট ৩৭৯ জন ইএসডিপির প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছেন। পুরুষদের পাশাপাশি এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন নারীরাও। ইএসডিপির জেলা প্রশিক্ষক জামিলা আফসারী আলম জানান, দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে উৎপাদনমুখী অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করে বিনিয়োগ প্রসার ঘটানো তাদের মূল লক্ষ্য। এরই অংশ হিসেবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী ও প্রায়গিত জ্ঞানসম্পন্ন রিসোর্সপারসনের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। নারীরা এখন উদ্যোক্তা হিসেবে অনেকটা সফল।

রাজশাহীর অর্থনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। এর মধ্যে গ্রামীণ নারীদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। কৃষি উৎপাদনে সরাসরি জড়িত রাজশাহীর বিপুল সংখ্যক গ্রামীণ নারী। এ ছাড়াও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, ব্যবসা, চাকরি এমনকি শিল্প কারখানায় পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করছেন এ অঞ্চলের নারীরা। বাংলাদেশ উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিডব্লিউসিসিআই) রাজশাহী বিভাগের সভাপতি মনিরা মতিন জোনাকী বলেন, রাজশাহীর নারীদের একটি বড় অংশ কুটিরশিল্প নিয়ে কাজ করছেন। একই ধরনের কাজ করছেন অনেকেই। অনেকেই সমবায়ী হিসেবে কাজ করছেন। এতে স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলছে উৎপাদিত পণ্য। ফলে দেশীয় বাজার নষ্ট হচ্ছে, হারিয়ে ফেলছে রপ্তানির সুযোগ।

তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উচিত- যেসব নারী উদ্যোগী, তাদের নিয়ে গ্রুপভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলা। তাছাড়া বড় বিনিয়োগে অর্থায়ন নিশ্চিত করতে ব্যাংকগুলোকে চাপ প্রয়োগ করতে পারে বিডা। এসব সুবিধা পেলে রাজশাহীর নারীরা আরও এগিয়ে যাবে।

রাজশাহীতে সবচেয়ে বেশি ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে ২০০০ থেকে ২০০৯ সালে। এই সময় গড়ে উঠেছে ৮০ হাজার ৩৫০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।  এরপর ২০১০ থেকে ২০১৩ সালে ৩৮ হাজার ২৬৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

সর্বশেষ খবর