বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

জমে উঠেছে হাইটেক পার্ক

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

জমে উঠেছে হাইটেক পার্ক

রাজশাহীতে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখতেন আফরোজা আরবি তুষি। কাজের সুযোগ পাবেন কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল। তুষির সেই দুশ্চিন্তা কেটে গেছে রাজশাহীতে একটি আইটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়ে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কে ‘ফ্লিট বাংলাদেশ’ নামের এক প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন তিনি।

তুষির মতো প্রায় ৪০০ তরুণ-তরুণী হাইটেক পার্কের ১৭টি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। কেউ সফটওয়্যার ডেভেলপ করছেন, কেউ বাইরের দেশের চাহিদামতো ফাইল নিয়ে কাজ করছেন। কেউ আবার রাজশাহীতে বসেই বিশ্বের নামিদামি সাইট রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেন। আর তাই পুরোপুরি কাজ শেষ না হলেও কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে হাইটেক পার্ক।

ফ্লিট বাংলাদেশের কর্মী আফরোজা আরবি তুষি বলেন, ‘যখন ছাত্রী ছিলাম, তখন ভয় পেতাম যে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে ভালো একটা ক্যারিয়ার গড়তে হলে হয় ঢাকায় যেতে হবে, না হয় ক্যারিয়ারই হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইবোনদের দেখেছি ক্যারিয়ারের জন্য ঢাকায় চলে যেতে। কিন্তু আমার খুব ইচ্ছা ছিল পরিবার-পরিজন নিয়ে রাজশাহীতে থেকেই একটা ক্যারিয়ার গড়ার। আমাকে সেই সুযোগটা দিয়েছে ফ্লিট বাংলাদেশ। আর ফ্লিট বাংলাদেশকে সেই সুযোগ দিয়েছে হাইটেক পার্ক। এখানকার পরিবেশও ভালো।’

রাজশাহীতে হাইটেক পার্ক নির্মাণে ২৮১ কোটি ১৯ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয় ২০১৬ সালে। পরের বছরের ১৮ জুলাই রাজশাহী মহানগরী বুলনপুর এলাকায় ৩১ দশমিক ৬৩ একর জমির ওপর এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পার্কের প্রধান দুই অংশের মধ্যে ‘শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারে’র কাজ শেষ হয় গত বছর। তারপর ১০টি প্রতিষ্ঠানকে স্পেস বরাদ্দ করা হয়। এরপর কাজ মোটামুটি শেষ হলে জয় সিলিকন টাওয়ারেও স্পেস বরাদ্দ শুরু হয়েছে। সেখানে সাতটি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে স্পেস বরাদ্দ পেয়েছে। সব মিলিয়ে কাজ করছে ১৭টি প্রতিষ্ঠান।

হাইটেক পার্কে মোবাইল গেমস এবং অন্যান্য সফটওয়্যার সেবা দিতে কাজ করছে ‘টেক রাজশাহী’। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মাহফুজুর রহমান জানান, তার প্রতিষ্ঠানে ১৪২ জন কর্মী আছে। এর মধ্যে হাইটেক পার্কে ২৮ জন কাজ করছেন। মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে রাজশাহী শব্দ আছে। প্রতিষ্ঠানটির অফিসও শেষ পর্যন্ত রাজশাহীতে হলো। হাইটেক পার্কটির অবস্থান এবং অন্যান্য আধুনিক সুবিধার পাশাপাশি এখানে একটি অফিস থাকা মানে প্রতিষ্ঠানের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ অনেকখানি বেড়ে যাওয়া।’

এমডি ইনফো’ নামের আরেক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুঞ্জুরুল মুর্শেদ বলেন, ‘আমরা আবেদন করেছিলাম। জয় সিলিকন টাওয়ার ও শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন ভবনে আমাদের স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জয় সিলিকন টাওয়ারেও কাজ শুরু হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে আমাদের ১ হাজার কর্মী। তবে অফিসে কাজ করছেন ১৫০ জন। আমাদের ৯৫ শতাংশ কর্মীর বাড়িই রাজশাহীতে।’

হাইটেক পার্কের উপপরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুল করিম বলেন, রাজশাহী হাইটেক পার্কের দুটি ভাগ আছে। জয় সিলিকন টাওয়ার ও শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন ভবন। এই দুই ভবনের মধ্য জয় সিলিকন টাওয়ারের কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে ৯টি প্রতিষ্ঠান এখন কাজও করছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০০ লোক এখানে কাজ করছে। হাইটেক পার্কের পুরো নির্মাণ কাজ শেষ হলে অন্তত ১৪ হাজার তরুণ-তরুণী এখানে কাজ করবে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর