বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কুমিল্লা বিসিকের সড়ক যেন পুকুর

জন্মেছে কচুরিপানা-কচুগাছ

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লা বিসিকের সড়ক যেন পুকুর

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কুমিল্লার কয়েকটি সড়ক জলাবদ্ধ হয়ে পুকুরে রূপ নিয়েছে। সেই পুকুরে জন্মেছে কচুরিপানা ও কচুগাছ। তবে বৃষ্টি হলে এই দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। ডুবে যায় বিসিক এলাকার প্রায় সড়ক। ময়লা পানি মাড়িয়ে চলতে হয় কারখানার মালিক, কর্মচারী ও ক্রেতাদের।

সরেজমিন দেখা যায়, বিসিকের দক্ষিণ অংশের সড়কের (ফাইনওয়ে কারখানার পাশ দিয়ে) পাশের ড্রেনের কাজ করা হয়েছে। মাঝে সড়ক জলাবদ্ধ হয়ে আছে। সেটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। মাঝের অংশ পুকুরে রূপ নিয়েছে। সেই পুকুরে জন্মেছে কচুরিপানা ও কচুগাছ। একটু এগোলে গোল্ডেন বিস্কুট ফ্যাক্টরি। তার পাশ দিয়ে পূর্ব দিকে গেছে একটি সড়ক। সেটির অর্ধেক ড্রেনের পানি উঠে জলাবদ্ধ। সড়কটি প্রায় পরিত্যক্ত। চলাচলের উপায় নেই। সেখানে নষ্ট গাড়ি ফেলে রাখা হয়েছে। এখানকার বাতাসে ভাসছে জমাটবদ্ধ পানির দুর্গন্ধ আর বেকারি পণ্যের মিষ্টি ঘ্রাণ। এ ছাড়া বিসিক এলাকার প্রায় সড়ক ভাঙা। কয়েক দিন আগের বৃষ্টিতে কিছু কারখানায় পানি প্রবেশ করেছে। পানি নেমে যাওয়ার পর স্যাঁতসেঁতে অবস্থা এখনো রয়েছে।

বিসিক কুমিল্লার সূত্র মতে, ১৯৬০-১৯৬১ সালে ৫৪ দশমিক ৩৫ একর এলাকায় স্থাপিত হয় বিসিক কুমিল্লা অঞ্চল। যাতে ব্যয় হয় ৮৪ দশমিক ১৮ লাখ টাকা। এতে মোট প্লট সংখ্যা ১৫৫টি। ৬টি প্লটের মধ্যে রয়েছে প্রশাসনিক ভবন, আবাসিক ভবন ও ওয়াটার ট্যাঙ্ক। বাকি ১৪৯টি শিল্প প্লটে ১৪২টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন আছে। সচল থাকা ১৩০টি প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কাজ করছেন প্রায় ৮ হাজার মানুষ। বিসিক কুমিল্লায় রয়েছে একাধিক স্টিল মিল, বেকারি, মুড়ি, আয়ুর্বেদিক পণ্য তৈরির কারখানা, আটা ও পাটজাত পণ্য তৈরির কারখানা। এ ছাড়া অ্যালুমিনিয়াম, সিলভার ও প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কারখানাসহ আছে বেশ কয়েকটি টেক্সটাইল মিল।

মা প্লাস্টিকের স্বত্বাধিকারী মফিজুল ইসলাম বলেন, আমরা একটা ডোবার মধ্যে পড়ে আছি। এখানে ১২ মাসই জলাবদ্ধতা থাকে। বৃষ্টি হলে আমাদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। সড়কের কাজ শুরু করে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিসমিল্লাহ মুড়ি মিলের পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, জলাবদ্ধতা ও সড়কের দুরবস্থা দীর্ঘদিনের। আগে জলাবদ্ধতা দীর্ঘদিন লেগে থাকত। এখন সেটি উত্তর অংশে কমেছে। তবে দক্ষিণ অংশের অবস্থা বেহাল। এ ছাড়া সড়কের অবস্থাও ভালো নয়। পরিবেশ ভালো হলে বিসিক এলাকায় আরও বেশি ক্রেতা আসবে।

বিসিক কুমিল্লার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার খান বলেন, কিছু সড়কের জলাবদ্ধতা ও ভাঙা রয়েছে সত্য। ড্রেনের কাজ চলছে। এরপর সড়কের কাজ করা হবে। এসব বিষয়ে আমরা বিসিক কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

বিসিক কুমিল্লার উপ-মহাব্যবস্থাপক মুনতাসির মামুন বলেন, পাশের বাড়িঘরগুলো উঁচু হয়ে গেছে, সেই তুলনায় বিসিক এলাকা নিচু। নগরীর ঠাকুরপাড়া, রানীর বাজার, অশোকতলা এলাকার পানি এদিকে প্রবেশ করে। তাই দ্রুত এই এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে যায়। ড্রেনের কিছু কাজ হয়েছে।

মালামালের দাম বাড়ায় ঠিকাদারকে দিয়ে সড়কের কাজ শেষ করতে সময় লাগছে। আমরা এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করছি সড়কের কাজ দ্রুত শেষ করতে পারব।

সর্বশেষ খবর