৬ জুন, ২০২৩ ১৮:১৭

বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘটে হলিউডের লেখক-শিল্পীরা

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘটে হলিউডের লেখক-শিল্পীরা

হলিউডের লেখক-লেখিকারা রাজপথে ৬ সপ্তাহ যাবত। ধর্মঘটের এ মিছিলে সামিল হচ্ছেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও। সংগৃহীত ছবি।

বেতন-ভাতার দাবিতে ৬ সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশনের স্ক্রিপ্ট লেখকদের ধর্মঘটের সাথে একইদাবিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হলিউড অভিনেতা-অভিনেত্রী ইউনিয়ন ‘স্যাগ-আফট্রা’র সদস্যরাও। 

সোমবার এই ইউনিয়নের ৬৫ হাজার সদস্যের মধ্যে অনুষ্ঠিত ভোটে ৯৭.৯১% ধর্মঘটের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। কারণ, বিদ্যমান বেতন-ভাতার চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ৩০ জুন। সেই চুক্তি বাজার দরের সাথে সঙ্গতি রেখে বৃদ্ধির জন্যে কর্তৃপক্ষের সাথে ‘স্যাগ-আফটা’র চলমান আলোচনা ভেস্তে যাবার পর ধর্মঘটে যাবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। 

ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ফ্র্যান ড্রেশার ভোটের ফলাফলের পর প্রদত্ত বিবৃতিতে বলেছেন, জীবন-জীবিকার স্বার্থে আমাদেরকে এই আন্দোলনে বিজয়ী হতেই হবে। এর বিকল্প ছিল না। 

উল্লেখ্য, হলিউডের সর্ববৃহৎ এই ইউনিয়নের সদস্যরা হলিউডের বড় বড় স্টুডিও সক্রিয় রাখতে কাজ করেন। চলচ্চিত্র এবং টিভির সমস্ত স্ক্রিপ্ট লেখকদের সংগঠন ‘রাইটার্স গীল্ড অব আমেরিকা’ ৬ সপ্তাহ আগে থেকে ধর্মঘটে থাকায় হলিউডে নানামুখী সংকট তৈরি হয়েছে। অনেক স্টুডিও থমকে দাঁড়িয়েছে। ডিরেক্টর গীল্ড অব আমেরিকা (ডিজিএ)’র সদস্যরাও বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছেন গত কয়েক সপ্তাহ থেকে। সেই দাবি পূরণে কর্তৃপক্ষের অনমনীয় ভাব অব্যাহত থাকলে তারাও ধর্মঘটে সামিল হতে পারেন বলে হলিউডের লোকজনের ধারণা। অর্থাৎ বাজার দরের উর্ধ্বগতির কারণে কেউই স্বস্তিতে নেই। তার প্রভাব দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে হলিউডের আলো ঝলমল পাড়াতেও।  

এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ‘এলায়েন্স অব মোশন পিকশ্চার অ্যান্ড টেলিভিশন প্রডিউসার’র এক বিবৃতিতে সোমবার বলা হয়েছে, আমরা সমঝোতা আলোচনা চালিয়ে যাবার চেষ্টা করছি স্যাগা-আফট্রা’র সকলের (স্ক্রিণ অভিনেতা-অভিনেত্রী, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট, অনুষ্ঠানের ঘোষক, উপস্থাপক-সঞ্চালক এবং নেপথ্য কর্মী) স্বার্থ তথা হলিউডকে সরব রাখার অভিপ্রায়ে। এই এলায়েন্স প্রতিনিধিত্ব করে ওয়াল্ট ডিজনী কোম্পানী, নেটফ্লিক্স ইনক এবং আরো কয়েকটি স্টুডিওর। 

জানা গেছে, বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবির সাথে স্ক্রিপ্ট রাইটার এবং অভিনেতা-অভিনেত্রীগণের ছবি বেআইনীভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’র সাহায্যে ব্যবহার বন্ধের কথাও রয়েছে। স্যাগ-আফট্রার নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেছেন যে, আটিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’র মাধ্যমে স্ক্রিপ্ট রাইটারদের ছাড়াই স্টুডিওগুলো তাদের টিভি অনুষ্ঠান অব্যাহত রাখতে সক্ষম হচ্ছে। 

হলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সমন্বয়ে গঠিত স্যাফ-আফট্রা’র পক্ষে কর্তৃপক্ষের সাথে সংলাপে নেতৃত্ব প্রদানকারি টিমের প্রধান ডানকার ক্র্যাবট্রি-আয়ারল্যান্ড মনে করছেন, মুদ্রাস্ফীতির পরিপ্রেক্ষিতে তৈরী হওয়া সংকটের যাঁতাকলে অতীষ্ঠ লেখক-গীতিকার-শিল্পীগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়ায় ধর্মঘটের বিকল্প ছিল না। এমন পরিস্থিতি স্মরণকালে আমেরিকায় ঘটেনি। বাড়ি ভাড়ার সাথে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বি হওয়ায় হলিউডের মানুষ যখন গভীর সংকটে নিপতিত তেমনি সময়ে ‘আটিফিশিয়িাল ইন্টেলিজেন্স’ বড় ধরনের সংকট ঘনিভূত করেছে। অর্থাৎ অভিনয়-অভিনেতা ছাড়াই বিশেষ এই প্রযুক্তির মাধ্যমে অনুষ্ঠান নির্মাণ করতে সক্ষম হচ্ছেন প্রযোজক-পরিচালকরা।  

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর