ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার পাল্টা প্রস্তাবকে 'বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা' বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি জাতিসংঘকে ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনাকে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে সতর্ক করেছে, এটি না করা হলে ফিলিস্তিনিরা 'গুরুতর পরিণতি'র মুখোমুখি হতে পারে।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে মার্কিন মিশনের এক মুখপাত্র বিবৃতিতে বলেছেন, ওয়াশিংটনের প্রস্তাবকে ঘিরে বিভেদ সৃষ্টির প্রচেষ্টা ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে। ইসরায়েল ফের যুদ্ধবিরতি ভেঙে আক্রমণ শুরু করলে ফিলিস্তিনিদের জন্য 'সম্পূর্ণরূপে এড়ানো যায়' এমন মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র তার প্রস্তাবিত খসড়া প্রস্তাবকে চূড়ান্ত করতে গত সপ্তাহে ১৫টি নিরাপত্তা পরিষদ সদস্যকে পাঠিয়েছে। এই প্রস্তাব অনুযায়ী, গাজার জন্য একটি দুই বছরের মেয়াদী ট্রানজিশনাল গভর্নেন্স বডি (আইএসএফ) গঠন করা হবে। যাকে বলা হচ্ছে 'বোর্ড অব পিস', এটিতে সভাপতিত্ব করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ।
যার অধীনে সদস্য রাষ্ট্রগুলো একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠনের অনুমতি দেবে। যা সশস্ত্র গোষ্ঠীর অস্ত্র স্থায়ীভাবে নিষ্ক্রিয়করণ, নাগরিকদের সুরক্ষা ও মানবিক সহায়তার পথ নিরাপদ করতে কাজ করবে। বাহিনীটি গাজার সীমান্ত এলাকা সুরক্ষা, অবকাঠামো সুরক্ষা দেবে, প্রাদেশিক পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেবে।
অন্যদিকে, রুশ প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় থাকা বিতর্কিত ‘বোর্ড অব পিস' উল্লেখ করা হয়নি। দুই দেশর সংঘাত বন্ধে ‘ভারসাম্যপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য’ পথ তৈরির আহ্বান জানানো হয়েছে।
রাশিয়ার নোটে বলা হয়েছে, তাদের লক্ষ্য নিরাপত্তা পরিষদ একটি সুষম, গ্রহণযোগ্য ও ঐকমত্যপূর্ণ উপায় নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেবে। যা টেকসই যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। রাশিয়ার খসড়া প্রস্তাবে অনুরোধ করা হয়েছে, জাতিসংঘ মহাসচিব গাজার জন্য আইএসএফ গঠনের বিকল্পগ পদ্ধতি গ্রহণ করুক।
গত ৮ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলোর হস্তক্ষেপে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়। এই চুক্তির ফলে ইসরায়েলের বন্দি ও মৃত ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়, আংশিক সেনা প্রত্যাহার ও কিছু মানবিক সহায়তার প্রবেশ সম্ভব হয়েছে। যদিও যুদ্ধবিরতিতেও ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিন আক্রমণ চালাচ্ছে। যা শত শত ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মিশন নিরাপত্তা পরিষদকে অনুরোধ করেছে, চলমান 'ভঙ্গুর' যুদ্ধবিরতির প্রেক্ষাপটে, সদস্যরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওয়াশিংটনের প্রস্তাব সমর্থন করুক। তারা বলছে, এটি মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির দিকে যাওয়া ঐতিহাসিক সুযোগ।