শুক্রবার, ৩ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

গুজরাটে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা ঘটনায় ২৪ জন অভিযুক্ত

কুপিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে ৬৯ জনকে হত্যা করা হয়েছিল

কলকাতা প্রতিনিধি

ভারতের গুজরাটের গুলবার্গ সোসাইটিতে গণহত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২৪ জনকে অভিযুক্ত করেছে আদালত। ২০০২ সালে মুসলিমবিরোধী ওই দাঙ্গার সময় গুলবার্গ সোসাইটি কমপ্লেক্সে আক্রমণের পর কুপিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে অন্তত ৬৯ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল সোসাইটির অনেক ভবন। গুজরাট দাঙ্গা ছিল স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দাঙ্গার ঘটনা। আহমেদাবাদের ওই বিশেষ আদালত তার রায়ে গণহত্যায় প্রত্যক্ষভাবে মদদ দেওয়ার অভিযোগে ১১ জনের বিরুদ্ধে কঠোর ও বাকি ১৩ জনের বিরুদ্ধে অপরাধের মাত্রা কিছুটা কমের কথা বলেছে। আগামী ৬ জুন দোষীদের সাজা ঘোষণা করবে আদালত। প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি ট্রেনে আগুন লেগে ৬০ জন হিন্দু তীর্থযাত্রীর প্রাণহানিকে কেন্দ্র করে দাঙ্গার সূচনা হয়েছিল। ট্রেনে আগুন লাগার জন্য মুসলমানদের দায়ী করা হচ্ছিল। এরপরই মুসলমানদের নির্বিচারে খোলা তরবারি দিয়ে কুপিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। ওই দাঙ্গায় প্রায় ১ হাজার মুসলমানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ওই সময় আহমেদাবাদের গুলবার্গ হাউজিং সোসাইটিতে হামলা চালায় একদল উন্মত্ত জনতা। হামলা চালানো হয় ওই হাউজিংয়ে বসবাসকারী ২০ হাজার মুসলমানের ওপর। অগ্নিসংযোগ করা হয় ওই আবাসনের বেশির ভাগ বাসাতেই। গণহত্যায় নিহত হন সাবেক কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরীসহ ৬৯ জন মুসলমান। তাদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হন এহসান জাফরীর স্ত্রী জাকিয়া জাফরী। আহমেদাবাদের বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা, পুলিশ অফিসার ও সচিবের বিরুদ্ধেও সে সময় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। জাকিয়ার আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে তদন্তে নামে গুজরাট দাঙ্গার বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। তদন্তে নেমে ৬৬ জনকে অভিযুক্ত করে সিট। এদের মধ্যে ৯ জন ১৪ বছর ধরে কারাগারে বন্দী রয়েছেন। বাকিরা জামিনে মুক্ত। অবশেষে ১৪ বছর পর বহু আলোচিত গুলবার্গ সোসাইটি গণহত্যা মামলার রায় দিল আদালত।

সর্বশেষ খবর