মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

কাতারের বার্তা সংস্থা হ্যাকিং করেছে আমিরাত?

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন

কাতারের বার্তা সংস্থা হ্যাকিং করেছে আমিরাত?

মে মাসে কাতারের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা হ্যাকিংয়ের শিকার হয়। এর পেছনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হাত রয়েছে বলে কাতার অভিযোগ করেছে। তবে এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটির পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আনোয়ার গরগাশ গতকাল লন্ডনে বলেছেন, মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত এ ধরনের খবর সম্পূর্ণ ‘ভুয়া’। একই সঙ্গে তিনি আরও দাবি করেছেন, ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের দায়িত্ব কাতারের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়ে তার দেশ এবং আরও পাঁচটি আরব দেশ ফিফার কাছে যে চিঠি লেখার কথা বলা হয়েছে তাও মিথ্যা।

ওয়াশিংটন পোস্ট সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সম্প্রতি বিশ্লেষণ করা তথ্য নিশ্চিত করেছে যে, গত ২৩ মে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা কাতারের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা হ্যাক করার লক্ষ্যে একটি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছিল। অজ্ঞাত মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দৈনিকটি এ খবর দিয়েছিল। আর সুইজারল্যান্ডের নিউজ নেটওয়ার্ক ‘দ্য লোকাল’ এক প্রতিবেদনে জানায়, ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফানতিনোর বরাতে গত শনিবার একটি ভুয়া খবর একটি ওয়েবসাইটে পোস্ট করা হয়। খবরে বলা হয়েছিল, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ আরব বিশ্বের পাঁচটি দেশ ফিফার কাছে লেখা একটি চিঠিতে দাবি করে, সংস্থাটি যেন ২০২২ বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব কাতারের কাছ থেকে নিয়ে নেয়।

ওই ঘটনার পরদিন অর্থাৎ গত ২৪ মে কাতারের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির বরাতে এক খবরে জানায়, কাতারের আমির ইরানকে ইসলামী শক্তি হিসেবে বর্ণনা করে দেশটির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুতার সমালোচনা করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি হামাসকে ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ প্রতিনিধি হিসেবেও সম্বোধন করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কাতারের কর্মকর্তা জানিয়েছিল, অজ্ঞাত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থাটি হ্যাক করেছে এবং ওই খবরের গল্পের কোনো ভিত্তি নেই। তবে কাতারের আমিরের বরাতে ওই খবরে অঞ্চলটিজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, বাহরাইন ও মিসর দেশটির গণমাধ্যমে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেয়। দুই সপ্তাহ পর অর্থাৎ গত ৫ জুন দেশগুলো কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিকসহ সব ধরনের যোগাযোগ ছিন্ন করে। সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ও অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে দেশটির বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয় দেশগুলো। বর্তমানে এ সংকট এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, কুয়েত, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্কসহ কয়েকটি দেশের বিরতিহীন প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এর কোনো সমাধানে পৌঁছা সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে, মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, খোদ সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্তৃপক্ষই কাতারের বার্তা সংস্থাটি হ্যাক করেছে না তৃতীয় কোনো পক্ষকে অর্থ দিয়ে কাজটি করিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দৈনিকটির ওই খবরের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ব্রিটেনের দ্য গার্ডিয়ান মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই’র এক তদন্তের বরাত দিয়ে গত মাসে জানিয়েছিল, রাশিয়ার ফ্রিল্যান্স হ্যাকাররা এর জন্য দায়ী। বিবিসি

সর্বশেষ খবর