শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

‘ক্যু’র পর প্রথম জনসম্মুখে মুগাবে

জিম্বাবুয়েতে রাজনৈতিক সংকট

‘ক্যু’র পর প্রথম জনসম্মুখে মুগাবে

জিম্বাবুয়েতে গত বুধবার সেনাবাহিনীর দৃশ্যত ‘অভ্যুত্থান’-এর পর গৃহবন্দিত্ব থেকে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে এলেন প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে। রাজধানী হারারেতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গতকাল হাজির হন তিনি। নীল ও হলুদ রঙের সমাবর্তন গাউন পরা বর্ষীয়ান নেতা মুগাবেরের সঙ্গে এ সময় তার নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, সেনা অভ্যুত্থানের পর সৃষ্ট রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় সেনাবাহিনী ও প্রেসিডেন্ট মুগাবেরের মধ্যকার আলোচনায় কোনো সমঝোতা হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে এখনো কিছু জানা যায়নি। প্রেসিডেন্ট মুগাবে গত সপ্তাহে ভাইস প্রেসিডেন্ট ইমারসন নানগাগোয়াকে বরখাস্ত করে এ পদে তার স্ত্রী গ্রেস মুগাবেকে বসান। মুগাবেরের এ পদক্ষেপ স্ত্রী গ্রেসকে স্পষ্টত ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট বানানোর অপচেষ্টা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। আর এ বিষয়টিই দেশটিতে বিদ্যমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মূল কেন্দ্রবিন্দু। বরখাস্ত হওয়া ভাইস প্রেসিডেন্ট নানগাগোয়ার প্রতি দেশটির সেনাবাহিনীর জোরালো সমর্থন রয়েছে। তাই তাকে বরখাস্ত করায় সেনাবাহিনী মুগাবেরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে বাধ্য হয় বলে মনে করা হচ্ছে।

মুগাবেকে গৃহবন্দী এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেনাবাহিনী ‘অভ্যুত্থান’ মঞ্চায়ন করেছে এ তকমা থেকে বাঁচতে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতনরা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এরই অংশ হিসেবে মুগাবেকে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একে তিনি যে মুক্তভাবে জীবনযাপন করছেন সেনাবাহিনীর তরফে তা দেখানোর প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কাটাতে প্রেসিডেন্ট মুগাবেকে পদত্যাগ করতে সেনাবাহিনীর তরফে যে চাপ দেওয়া হচ্ছে তা তিনি প্রতিহত করার চেষ্টা করছেন। মুগাবেকে সরিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে একজনকে বসানোর যে সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছে সেনাবাহিনী তা থেকে তিনি সরে এসেছেন বলে সিএনএন জানিয়েছে। তবে মুগাবেরের সঙ্গে সেনাবাহিনীর আলোচনা অব্যাহত রয়েছে বলে জিম্বাবুয়ের প্রতিরক্ষা বাহিনী (জেডডিএফ) গতকাল রাষ্ট্রীয় টিভিতে প্রচারিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। আলোচনার ফলাফল আসামাত্রই তা দেশবাসীকে জানানো হবে বলে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, মুগাবেরের চারপাশে থাকা অপরাধীদের ধরতে অভিযানে বড় ধরনের অগ্রগতি লাভ করেছেন তারা। অপরদিকে, মুগাবেকে ক্ষমতাচ্যুত করতে তার দলের সদস্যদের সঙ্গে বরখাস্তকৃত ভাইস প্রেসিডেন্ট অনেক দিন আগেই গোপনে আলোচনা করেছেন বলে বিরোধীদলীয় একজন নেতা সিএনএনকে জানিয়েছেন। ১৯৮০ সালে জিম্বাবুয়ে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার লড়াইয়ে যুক্ত ছিলেন প্রেসিডেন্ট মুগাবেও। স্বাধীনতার পর থেকে তিনিই দেশটি শাসন করে আসছেন। সিএনএন।

সর্বশেষ খবর