মঙ্গলবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আবার উত্তপ্ত পাকিস্তান-ভারত সম্পর্ক

আবার উত্তপ্ত পাকিস্তান-ভারত সম্পর্ক

জাতিসংঘের চলতি সাধারণ পরিষদের অধিবেশনেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি আলোচনার একটা প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। ভারত প্রথমে এই প্রস্তাবে সাড়া দিলেও পরে তা বাতিল করে। প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে দীর্ঘদিন উত্তপ্ত সম্পর্কের পর এই বৈঠককে নতুন করে শান্তি আলোচলার সিঁড়ি হিসেবে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হলো না।

পাকিস্তানে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তন হয়েছে মাসখানেক হলো। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েই ইমরান খান ঘোষণা দেন, তিনি দুই দেশের সম্পর্ক ভালো করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে ভারত এক ধাপ এগিয়ে এলে তার সরকার দুই ধাপ এগিয়ে যাবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ইমরানের আহ্বানের ইতিবাচক সাড়া দিয়েছিলেন। এরপরই দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পথ তৈরি হয়। কিন্তু এরমধ্যে জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে ভারতীয় সেনা ও পুলিশ সদস্যকে অপহরণ এবং হত্যার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে দায়ী করে নয়াদিল্লি প্রস্তাবিত বৈঠকটি বাতিল করে। এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইসলামাবাদ। এ ঘটনার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, ‘আমি শান্তিপূর্ণ আলোচনার জন্য ভারতকে আহ্বান জানিয়েছিলাম কিন্তু তাদের এরকম ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং নেতিবাচক আচরণ দেখে আমি হতাশ।’পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আলোচনার আহ্বান এবং ভারতের ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার পর অনেকেই মনে করেছিল যে, ২০১৫ সালে বন্ধ হওয়া পাক-ভারত আলোচনার দুয়ার আবার খুলবে। কিন্তু দুপক্ষের বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে সে সম্ভাবনা এখন নতুন মোড় নিল। ভারত ও পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের সূচনা হয় গত শুক্রবার কাশ্মীরে তিন ভারতীয় পুলিশের মরদেহ উদ্ধারের মধ্য দিয়ে। ভারতের দাবি, এই পুলিশ সদস্যদের পাকিস্তানের আশীর্বাদপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠী হিজবুল মুজাহিদীন হত্যা করেছে। ওই তিন পুলিশের মরদেহ উদ্ধারের পর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সভার ফাঁকে সুষমা স্বরাজের সঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, তা বাতিলের ঘোষণা দেয় ভারত। আর ওই হত্যাকাণ্ডের পর ভারতের সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীরে যে কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে, তার জন্য এখনই পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও সন্ত্রাসীদের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার সময়। যথোপযুক্ত জবাব না দিলে তারা ক্ষতের কষ্ট বুঝতে পারবে না।’

এর প্রতিউত্তরে শনিবার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গাফফার বলেন, ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করতে তার দেশ প্রস্তুত আছে। তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু পাকিস্তানের জনগণ, প্রতিবেশী ও এই অঞ্চলের স্বার্থে শান্তির পথে হাঁটতে চায়।’ উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে পাকিস্তান-ভারতের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় আলোচনা বন্ধ রয়েছে। এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত সরকার যখন বুঝতে পারে যে, ২০১৯ সালের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করলে সেটা রাজনৈতিকভাবে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে; তখনই এই বৈঠক বাতিল করে তারা।

সর্বশেষ খবর