বুধবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্টের আদেশ বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট

৫ জানুয়ারির নির্বাচন স্থগিত, রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা দেশের সংসদ ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে যে আদেশ জারি করেছিলেন, দেশটির সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল করে দিয়েছে। একই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট আগামী ৫ জানুয়ারি আগাম নির্বাচনের যে ঘোষণা দিয়েছেন তাও স্থগিত করেছে আদালত। গতকাল সন্ধ্যায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যে এ রায় ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারক। এ খবর দিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস। আদালতের এ রায়ের মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক পরিস্থিতি আবারও নাটকীয় মোড় নিয়েছে। সংবিধান অনুসারে প্রেসিডেন্টের একক ক্ষমতাবলে জারি করা নির্দেশনা সুপ্রিম কোর্ট বাতিল ঘোষণা করায় কার্যত বিপাকে পড়েছেন মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। প্রধান বিচারপতি নলিন পেরেরার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক বেঞ্চ কোর্টের রায় পড়ে শোনান। এ সময় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। মোতায়েন করা হয় ভারী অস্ত্রে সজ্জিত পুলিশ ও কমান্ডোদের।

উল্লেখ্য, গত ২৬ অক্টোবর শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহকে বরখাস্ত করেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। একই দিনে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ পড়ান। এর পর থেকেই দেশটির রাজনীতিতে অস্থিরতা চলছে। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীকে পার্লামেন্টে অধিকাংশ এমপির সমর্থন বা আস্থায় থাকতে হয়। এ জন্য আস্থাভোটের আয়োজন করেন দেশটির স্পিকার। কিন্তু সেই আস্থাভোটের আগেই প্রেসিডেন্টের দল ঘোষণা দেয় তারা রাজাপক্ষের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে পারবে না। কিন্তু রাজাপক্ষে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে জয়লাভ করতে পারবে না। এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা গত শুক্রবার একটি ডিক্রি জারি করে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। আগামী ৫ জানুয়ারি দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন। এরপর গত পরশু বিক্রমাসিংহের দল আদালতে আপিল করে। গতকাল আপিলের রায় দেয় সর্বোচ্চ আদালত।

শ্রীলঙ্কার সংবিধান অনুসারে, পার্লামেন্টে ভোটাভুটি ছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে প্রেসিডেন্ট বরখাস্ত করতে পারবেন না। কিন্তু সেই বিধানের তোয়াক্কা করেননি প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা যাকে সরিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন সেই রাজাপক্ষ এক সময় শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আর  ২০১৫ সালে দীর্ঘ সময় ধরে প্রেসিডেন্ট পদে থাকা রাজাপক্ষেকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সিরিসেনা। ওই সময় সিরিসেনার জোটে ছিলেন বরখাস্ত হওয়া প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে। তবে সিরিসেনা ও বিক্রমাসিংহে জোটের মধ্যে নানা সময়েই মতবিরোধ দেখা দেয়। সবশেষ ভারতকে একটি বন্দর লিজ দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে এই দুজনের মধ্যে চরম মতবিরোধ দেখা দেয়। সিরিসেনার পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। কলম্বোয় বিদেশি দূতাবাসগুলো সিরিসেনার এই পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক বলে নিন্দা জানিয়েছে। এএফপি

সর্বশেষ খবর