পোল্যান্ডের কাটোভিেস শহরে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় কয়লা কোম্পানি। আর জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য অন্যতম দায়ী বিভিন্ন কয়লা কোম্পানি। সেই কাটোভিেসতে গতকাল শুরু হয়েছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন। ‘কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস’ বা কপ নামে পরিচিত বার্ষিক এ আয়োজন জাতিসংঘের ২৪তম আয়োজন। প্রায় দুই সপ্তাহব্যাপী সম্মেলন ১৪ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২০০ দেশের প্রায় ২৩ হাজার অংশগ্রহণকারী এবার কপ২৪-এ উপস্থিত থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কপ২৪-এর সভাপতি পোল্যান্ডের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের স্টেট সেক্রেটারি মিখাল কুরতিকা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসসহ বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের জন্য ধনী দেশগুলোই মূলত দায়ী। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যারিস চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন। ফলে এ সম্মেলন কতটা সফল হবে তা দেখার বিষয়।
মূল লক্ষ্য : ২০১৫ সালে প্যারিসের জলবায়ু সম্মেলনে স্বাক্ষরিত চুক্তির বাস্তবায়ন ২০২০ সালে শুরু হওয়ার কথা। তা কার্যকরে একটি নীতিমালা তৈরিই কপ২৪-এর মূল লক্ষ্য হিসেবে ধরা হয়েছে। প্যারিস চুক্তিতে বিশ্বের তাপমাত্রা শিল্প বিপ্লব-পূর্ববর্তী সময়ে যা ছিল তার চেয়ে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি না বাড়তে দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে গত অক্টোবরে জাতিসংঘের সংস্থা ‘ইন্টার-গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার ওপর জোর দেয়। এ লক্ষ্য পূরণ করতে চাইলে ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ৪৫ শতাংশ কমাতে হবে বলে জানায় বিশ্বের প্রায় ৯০০ বিজ্ঞানীর যৌথভাবে লিখিত ওই প্রতিবেদন। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, চার বছর ধরে কার্বন নির্গমন বৃদ্ধি থেমে থাকলেও আবার তা বাড়তে শুরু করেছে।
জলবায়ু প্রথম, রাজনীতি দ্বিতীয় : কাটোভিেস সম্মেলন শুরুর আগে রবিবার বেলজিয়ামের ব্রাসেলস এবং জার্মানির বার্লিন ও কোলন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। ব্রাসেলসের বিক্ষোভে প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ অংশ নেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। কার্বন নির্গমন কমাতে আরও উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য নির্ধারণ করতে কাটোভিেস অংশ নেওয়া রাজনীতিবিদ ও নীতিনির্ধারকদের আহ্বান জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তাদের হাতে থাকা ব্যানারে লেখা বিভিন্ন স্লোগানের মধ্যে আছে ‘প্লানেট বি বলে কিছু নেই, ‘জলবায়ু প্রথম, রাজনীতি দ্বিতীয়’ ইত্যাদি। —ডয়েচে ভেলে, এএফপি