মঙ্গলবার, ১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

নতুন বছরে ফের শান্তির বার্তা কিমের

নতুন বছরে ফের শান্তির বার্তা কিমের

শুরু হলো নতুন একটা বছর। আর এই নতুন বছরে ফের শান্তির বার্তা পাঠালেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম-জং উন। ঠিক এক বছর আগেও বিশ্বের সবচেয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি থেকে শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন কিম। কারণ ২০১৭ সালে প্রায় যুদ্ধের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু গত বছরের শুরুতে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় শীতকালীন অলিম্পিক। সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেন। আবার নতুন বছরে শান্তির বার্তা দিলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা। স্থগিত পরমাণু আলোচনা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে সমঝোতার বার্তা দিয়েছেন কিম। একই সঙ্গে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট জুন জে-ইনের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। এটাকে বিরল ব্যক্তিগত চিঠি বলা হচ্ছে গণমাধ্যমে। ওই চিঠিতে কিম নতুন বছরে মুনের সঙ্গে আবার দেখা করার আগ্রহ প্রকাশের পাশাপাশি কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করার আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। আর শুক্রবার অনির্ধারিত চ্যানেলের মাধ্যমে কিমের ‘চিঠির মতো’ বার্তাটি ট্রাম্পকে পৌঁছে দেওয়া হয়।  গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ট্রাম্পকে পাঠানো কিমের বার্তার বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো চিঠিতে আবার দক্ষিণ কোরিয়া সফর ও বৈঠকে বসার আগ্রহের কথা জানান। চলতি বছরে এই দুই নেতা তিনবার দেখা করেছেন। চিঠি প্রাপ্তির কথা জানিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, কিম শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শেষের দিকে কিম ও মুনের চতুর্থ বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল। তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী সিউল সফরে না যাওয়ায় চিঠিতে দুঃখ প্রকাশ করেন কিম। তবে অচিরেই সিউল সফরের তীব্র ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। চিঠি পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট মুন তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছেন, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের মাধ্যমে কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা পোষণ করে নতুন বছরে সাক্ষাৎ করার বিষয়ে কিমের আগ্রহে তিনি ‘অত্যন্ত আনন্দিত’। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আন্তরিকতা নিয়ে দেখা করি, যে কোনো কিছু অর্জন করা সম্ভব। এই জায়গায় পৌঁছাতে অনেক সময় লেগেছে। আর এই এক বছরে বদলে গেছে অনেক কিছু।’ তিনি জানান, নতুন বছরে কিমকে স্বাগত জানাতে তিনিও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।

দুই কোরিয়ার সম্পর্কের ক্ষেত্রে ২০১৮ সাল ছিল ঐতিহাসিক বছর। ছয় দশকেরও বেশি সময়ের বৈরিতাকে পেছনে ফেলে এ বছরের ২৭ এপ্রিলে দুই কোরিয়ার যুদ্ধমুক্ত গ্রাম পানমুনজমে ঐতিহাসিক বৈঠকে বসেন কিম ও মুন। আর এর মধ্য দিয়েই ৬৫ বছরের মধ্যে উত্তর কোরিয়ার প্রথম কোনো রাষ্ট্রনায়ক দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে পা রাখেন। দুই নেতা যৌথ ঘোষণায় ১৯৫০ সালে শুরু হওয়া কোরীয় যুদ্ধের ইতি টানেন। তবে এখনো শান্তিচুক্তি হয়নি। দেখা যাক নতুন বছরে সেই শান্তিচুক্তি স্থায়ী রূপ পায় কি না। বিবিসি, এএফপি

 

 

সর্বশেষ খবর