শনিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ব্রেক্সিট চুক্তির বিকল্পের খোঁজে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী


ব্রেক্সিট চুক্তির বিকল্পের খোঁজে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

ব্রিটেনের সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তি বিফল হওয়ার পরও কোনো ঐকমত্যের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। ব্রিটেনের সংসদ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিচ্ছেদসংক্রান্ত চুক্তি অনুমোদন করতে অস্বীকার করার পর আগামী সোমবারের মধ্যে ব্রেক্সিটের ‘প্ল্যান বি’ বা বিকল্প পথ খুঁজে বার করতে হবে প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মেকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও পদে পদে বাধার মুখে পড়ছেন তিনি। একাধিক বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। তারা কিছু দাবি রেখেছে। তবে প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি কর্বিন এমন এক পূর্বশর্ত রেখেছেন, যা পূরণ করতে পারছেন না প্রধানমন্ত্রী মে। ব্রিটেন যাতে কোনো অবস্থায় চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের পথে না যায়, সেই আশ্বাস দিতে পারছেন না মে। সেই সঙ্গে কর্বিনের দাবি অনুযায়ী মে সেসব বিকল্প নিয়ে আলোচনা করতে চান না, যেগুলো তিনি এতকাল উড়িয়ে দিয়ে এসেছেন। অর্থাৎ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের একক বাজার ও শুল্ক ইউনিয়নে স্থায়ীভাবে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রধানমন্ত্রীর পছন্দ নয়। কিন্তু লেবার ও ক্ষমতাসীন টোরি দল সংসদের প্রায় ৮৮ শতাংশ আসন দখল করে থাকায় তাদের মধ্যে ঐকমত্য ছাড়া কোনো সমাধানসূত্র কার্যত অসম্ভব। বৃহস্পতিবার কর্বিন ও মে চিঠি চালাচালি করে যে যার বক্তব্য তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী মে পড়েছেন উভয় সংকটে। কর্বিনের দাবি মেনে ‘সফট ব্রেক্সিট’ বা ব্রেক্সিটের নরম সংস্করণের পথে এগোলে তাঁর নিজের টোরি দলের কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা বেঁকে বসবেন। এমন অচলাবস্থার জেরে ব্রিটেন আগামী ২৯ মার্চ চুক্তি ছাড়াই ইইউ ত্যাগ করতে পারে, এমন আশঙ্কাই বেড়ে চলেছে। এ সময়সীমা বাড়ানো সম্ভব হলে আগাম সাধারণ নির্বাচন বা দ্বিতীয় গণভোটও আয়োজন করা যেতে পারে। কর্বিন বৃহস্পতিবারই গণভোটের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে সরকার জানিয়েছে, গণভোট আয়োজন করতে এক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। ইইউ ব্রিটেনের রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে সংলাপের ইঙ্গিত দিচ্ছে। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেন, ব্রিটেন যাতে চুক্তি ছাড়া ইইউ ত্যাগ না করে, সেই লক্ষ্যে সবকিছু করা হবে। ইইউর প্রধান ব্রেক্সিট মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে আরও বড় আকারের ব্রেক্সিট চুক্তির সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। কিন্তু যত দিন খোদ ব্রিটেনে কোনো একটি সমাধানসূত্র নিয়ে ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব না হয়, তত দিন ইইউর পক্ষেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন। সোমবার প্রধানমন্ত্রী মে তাঁর ‘প্ল্যান বি’র খসড়া পেশ করলে সে বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক শুরু হতে পারে। সংসদ সদস্যরা তাতে রদবদলের প্রস্তাব আনতে পারেন। তারপর কোনো একটি বিকল্প নিয়ে ঐকমত্য সম্ভব হলে ২৯ জানুয়ারি তা নিয়ে ভোটাভুটি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী ব্রাসেলসে গিয়ে ব্রেক্সিট চুক্তিতে রদবদল চাইতে পারেন। ইইউ তাতে সম্মতি জানালে পরিবর্তিত চুক্তি আবার ব্রিটিশ সংসদে অনুমোদন করাতে হবে। এত কম সময়ের মধ্যে এতগুলো পদক্ষেপ সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। এ অবস্থায় ফ্রান্সসহ ইউরোপের একাধিক দেশ চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের জোরালো প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। নিয়ন্ত্রণ চালু করতে সীমান্তে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো প্রস্তুত করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ব্রেক্সিট নিয়ে অচলাবস্থা কাটানো সম্ভব না হলে সেই অবকাঠামো বাস্তবে কার্যকর করা হবে। ডয়েচে ভেলে

 

সর্বশেষ খবর