শনিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

মমতার সমাবেশকে রাহুলের সমর্থন

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

‘টার্গেট’ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের বিজেপি সরকারকে উৎখাত করা। আর এই লক্ষ্য নিয়েই আজ তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জির ডাকা জনসভায় হাজির হতে চলেছেন বিজেপি বিরোধী শিবিরের প্রায় সব নেতাই। কলকাতার ব্রিগেড প্যারেট ময়দানে এই সমাবেশ হবে। মমতার সভায় উপস্থিত থাকতে পারেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জনতা দল নেতা এইচ ডি দেবগৌড়া, সমাজবাদী পার্টিও নেতা অখিলেশ যাদব, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টি (আপ) নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শারদ পাওয়ার, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রফুল্ল প্যাটেল ও টি আর বালু, রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদব, দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাজাঘাম (ডিএমকে) সভাপতি এম কে স্ট্যালিন, জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) নেতা ওমর আবদুল্লা, বহুজন সমাজবাদী পার্টির (বিএসপি) সাধারণ সম্পাদক সতীশ মিশ্র, ঝাড়খন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বাবু লাল মারান্ডি, অরুণাচল প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী গেগং আপাং, অসমের সংসদ সদস্য ও এআইডিইউএফ নেতা বদরুদ্দিন আজমলের মতো নেতারা। 

মঞ্চে দেখা যেতে পারে শত্রুঘœ সিনহা, যশোবন্ত সিনহা, অরুণ শৌরির মতো কয়েকজন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা-সাবেক মন্ত্রীদেরও। তবে জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এই সমাবেশে উপস্থিত না থাকলেও দলের তরফে থাকবেন লোকসভায় বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং অভিষেক মনু সিংভি। রাহুল নিজে অবশ্য বিজেপি বিরোধী সমাবেশকে সমর্থন জানিয়ে মমতাকে খোলা চিঠি লিখেছেন। মমতাকে দিদি বলে সম্বোধন করে রাহুল লেখেন ‘মমতা’দির সভার প্রতি সমর্থন জানাচ্ছি।

 আশা করছি আমরা বিরোধীরা সবাই একত্রিত হয়ে এক শক্তিশালী বার্তা দিতে সক্ষম হবো। জাতীয়তাবাদ এবং উন্নয়নকে রক্ষা করতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতেই আমাদের আস্থা আছে। বিজেপি এবং পিএম মোদি ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধ্বংস করতে চাইছেন। সেটা আমাদেও ঠেকাতে হবে।’ 

রাজনৈতিক মহলের ধারণা মমতার এই সমাবেশ থেকে ঘুরিয়ে কংগ্রেসকেও একটা বার্তা দেওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তা হলো বিরোধী দলগুলোর এই মহাজোট যদি প্রতিটি রাজ্যে পৃথক লড়াই করে, তবে কংগ্রেসের চেয়েও বেশি আসন পেতে পারে। এর অর্থই হলো পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা ঠিক করার ক্ষমতা থাকবে বিরোধী মহাজোটের হাতে। এ প্রসঙ্গে মমতা জানান, ‘আঞ্চলিক দলগুলোই হবে নির্ণায়ক শক্তি। প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই নিজস্ব অভিমত, দর্শন আছে তারা সেটা তুলে ধরবে। আমরা সবাইকে সম্মান করি। আমি কারও ওপর আমার মতামত চাপিয়ে দেব না।’

বর্তমানে দেশে মোদি বা গেরুয়া ঝড়ও অনেকটা উদাও। বিভিন্ন জরিপেও দেখা গেছে, ২০১৪-এর মতো বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপির এবার ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা অনেক কম। সেই সম্ভাবনা থেকেই মমতা বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে বিজেপি ১২৫টির বেশি আসন পাবে না। সেটাও যদি তারা পায়, তবে বলব অনেক! তবে কংগ্রেস কত আসন পাবে, তা আমি বলতে পারব না।’ তৃণমূল নেত্রীর অভিমত, ‘সবদিক থেকেই এই জনসভা ঐতিহাসিক হবে।’

শনিবার ব্রিগেড জনসভায় প্রায় পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষের সমাগম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সমাবেশে মোট পাঁচটি মঞ্চ করা হচ্ছে। মূল মঞ্চে থাকবেন মমতাসহ জাতীয় নেতারা। বাকি চারটির কোথাও রাজ্যের নেতারা, কোথাও বিনোদন জগতের সেলিব্রেটিরা থাকবেন। দর্শকদের সুবিধার্থে মাঠের বিভিন্ন প্রান্তে বসানো হয়েছে এলইডি স্ক্রিন। আঁটসাঁট করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি ড্রোনের সাহায্যেও নজরদারি চালানো হবে।

সর্বশেষ খবর