শিরোনাম
বুধবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

নতুন ব্রেক্সিট প্রস্তাব তেরেসার

দ্বিতীয় গণভোটের সম্ভাবনা নাকচ

নতুন ব্রেক্সিট প্রস্তাব তেরেসার

ব্রেক্সিট নিয়ে দ্বিতীয় গণভোটের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। একই সঙ্গে তিনি পার্লামেন্টে নতুন ব্রেক্সিট প্রস্তাব (প্ল্যান বি) উত্থাপন করেছেন। পার্লামেন্টে বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, দ্বিতীয় গণভোট হলে তা ব্রিটেনের ‘সামাজিক সংহতি’কে হুমকিতে ফেলবে। তার নতুন ব্রেক্সিট প্রস্তাবের কেন্দ্রবিন্দু হলো আইরিশ ব্যাকস্টপে পরিবর্তন আনা। চুক্তিহীন ব্রেক্সিট পরিস্থিতি এড়াতে পদক্ষেপ গ্রহণ ও দ্বিতীয় গণভোট আয়োজন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি। আগামী ২৯ জানুয়ারি নতুন প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর ২৯ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ বা ব্রেক্সিট সম্পন্ন হওয়ার তারিখ নির্ধারিত রয়েছে। পরবর্তী সম্পর্কের রূপরেখা নিয়ে গত নভেম্বরে জোটটির সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। গত ১৫ জানুয়ারি সেই ব্রেক্সিট খসড়া পরিকল্পনা পার্লামেন্টে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর এখন চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে খসড়া চুক্তি নিয়ে পরাজিত হলেও ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত আস্থা ভোটে কোনোরকমে টিকে যান তেরেসা। এতে ‘সম্পূর্ণ নতুন একটি ব্রেক্সিট পরিকল্পনা’ নিয়ে ইউরোপকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়ার সুযোগ আসে তার হাতে। সোমবার প্ল্যান বি নামের সংশোধিত সে প্রস্তাব উত্থাপন করেন তেরেসা মে। সেদিন হাউস অব কমন্সে দেওয়া বক্তব্যে তেরেসা দাবি করেছেন, গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন দলের এমপিদের সঙ্গে আলোচনার পর নতুন প্রস্তাবে তিনটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। তেরেসা জানান, আইরিশ ব্যাকস্টপ পরিকল্পনা নিয়ে আরও আলোচনা করা হবে। প্রথম খসড়া প্রস্তাবে থাকা আইরিশ ব্যাকস্টপ পরিকল্পনা নিয়ে অনেকের মধ্যে আপত্তি রয়েছে। উত্তর আয়ারল্যান্ড ও আইরিশ রিপাবলিকের মধ্যে দৃশ্যমান সীমান্ত ও কাস্টমস চেক না রাখতে আইরিশ ব্যাকস্টপ পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মানে হলো ইইউ-এর একক বাজারের কিছু নীতিমালা মেনে চলবে আয়ারল্যান্ড। পাশাপাশি, যুক্তরাজ্য ও ইইউ-এর মধ্যে টেকসই কোনো বাণিজ্য চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত কার্যকরভাবে যুক্তরাজ্য শুল্ক সংঘে থাকবে। কনজারভেটিভ পার্টির অনেক এমপি ব্যাকস্টপের বিরোধিতা করছে। কারণ, তাদের আশঙ্কা এ নীতি স্থায়ী রূপ লাভ করতে পারে এবং যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন অংশের জন্য আলাদা আলাদা নিয়ম জারি হতে পারে। মের সংশোধিত প্রস্তাবটি নিয়ে ২৯ জানুয়ারি হাউস অব কমন্সে ভোটাভুটি হবে। তবে নতুন পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে সংকট সমাধান করতে চাইলে তা নির্ধারিত ২৯ মার্চের মধ্যে সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে ব্রেক্সিট সংক্রান্ত আইন ‘আর্টিকেল ৫০’-এর সংযোজনী (এক্সটেনশন) এনে তা বিলম্বিত করতে হবে। এএফপি

 বিলম্বিত ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া সফল করতে প্রথমত সময়সীমা বাড়ানোর জন্য ইইউর কাছে আবেদন জানাতে হবে। ইউরোপীয় কাউন্সিলে আয়োজিত ভোটাভুটিতে সবকটি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের সমর্থন পেলেই কেবল ব্রেক্সিট বিলম্বিত করা যাবে। দ্বিতীয়ত, ইইউ উইথড্রয়াল অ্যাক্টে ‘বিচ্ছিন্ন হওয়ার দিন’-এর সংজ্ঞা পরিবর্তনের জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। এ তারিখ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ভোটাভুটিতে অংশ নিতে পারবেন ব্রিটিশ এমপিরা। তবে নতুন আলোচনায় অংশ নিতে ইইউ-এর সম্মতি আবশ্যক। পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে এখন বিতর্ক করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। তারা নতুন আলোচনায় রাজি না হলে যুক্তরাজ্যকে বিকল্প পথ ভাবতে হবে। তবে তার আগেই পার্লামেন্টে তেরেসার বিকল্প প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হলে হাঁটতে হবে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের (নো ডিল ব্রেক্সিট) পথে।

পার্লামেন্টের ব্রেক্সিট বিরোধী অংশ খুব সহজে তা হতে দিতে চান না। নো ডিল ব্রেক্সিটের সম্ভাব্য প্রাপ্তি নিয়ে ব্রিটিশ এমপিদের অনেকের মধ্যে হতাশা রয়েছে। গত ৮ জানুয়ারি পার্লামেন্টে উত্থাপিত সরকারের একটি কর বিল আটকে দিয়েছে তারা। বিলটি পাস না হওয়ার কারণে নো ডিল ব্রেক্সিটের পর নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে কর বাড়াতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়বে। এ পদক্ষেপকে প্রতীকী হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, টাকা তুলতে অন্য পথ খুঁজে নিতে পারবে সরকার। তবে বিলটি পাস না করার মধ্য দিয়ে এ ইঙ্গিত মিলেছে যে, এমপিরা নো ডিল ব্রেক্সিটকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করবেন। এএফপি

সর্বশেষ খবর