শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

নতুন দিশার খোঁজে ব্রাসেলস যাচ্ছেন মে

ব্রেক্সিট ইস্যু

আর সাকুল্যে মাসদুয়েক বাকি। এই সময়ের মথ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চিরতরে বিচ্ছেদে যেতে হবে ব্রিটেনকে। কিন্তু এই যে বিচ্ছেদ এর জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে যে খসড়া চুক্তি করেছেন তা মানতে নারাজ তার দেশের পার্লামেন্ট। ফলে ব্রেক্সিট নিয়ে শুরু হয়েছে চরম অচলাবস্থা। এই অচলাবস্থা কাটানোর উদ্দেশ্যে চলতি সপ্তাহে ব্রাসেলস যাচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মে। চরম অনিশ্চয়তার ফলে ব্রিটেনে বিনিয়োগ কমাচ্ছে জাপানের জায়ান্ট গাড়ি কোম্পানি নিসান। রানীকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথাও শোনা যাচ্ছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট একটি প্রস্তাব অনুমোদন করে প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে-কে ব্রাসেলসে পাঠিয়ে ব্রেক্সিট চুক্তিতে রদবদল করার নির্দেশ দিয়েছে। মূলত আয়ারল্যান্ডের সীমান্ত সংক্রান্ত সীমানা নিয়ে বোঝাপড়াতেই সংসদের আপত্তি। ‘ব্যাকস্টপ’ নামে পরিচিত এই আইনি বাধ্যবাধকতার বদলে ‘বিকল্প’ ব্যবস্থা চায় সংসদ, যদিও সে বিষয়ে সরকার কোনো স্পষ্ট প্রস্তাব পেশ করতে পারেনি।

এমন প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী মে রবিবার ইইউর সঙ্গে বোঝাপড়ার আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি চলতি সপ্তাহে ব্রাসেলসে গিয়ে বাস্তবসম্মত সমাধানসূত্র খুঁজবেন বলে জানিয়েছেন। ‘সানডে টেলিগ্রাফ’ সংবাদপত্রে তিনি এ বিষয়ে নিজের বক্তব্য পেশ করেন। মে দাবি করেন, তার ঝুলিতে নতুন প্রস্তাব রয়েছে। মেয়াদ না বাড়িয়ে নির্ধারিত তারিখ, অর্থাৎ ২৯ মে ব্রেক্সিট কার্যকর করতে চান তিনি। ইইউ অবশ্য শুরু থেকেই সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, মূল ব্রেক্সিট চুক্তির মধ্যে কোনো রদবদল সম্ভব নয়। সাম্প্রদায়িক শান্তির স্বার্থে আইরিশ প্রজাতন্ত্র ও ব্রিটেনের উত্তর আয়ারল্যান্ড প্রদেশের স্থলসীমান্ত খোলা রাখতে ইইউ বদ্ধপরিকর। তাছাড়া ব্যাকস্টপ সংক্রান্ত কোনো পরিবর্তন যে ব্রিটিশ সংসদের অনুমোদন পাবে, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। ব্রিটেনের বাণিজ্যমন্ত্রী লিয়াম ফক্স বলেছেন, ইইউ ব্রেক্সিট সংক্রান্ত আলোচনা আবার শুরু না করলে তা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ হবে। আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন কোভেনি বলেন, ব্যাকস্টপের কোনো স্পষ্ট বিকল্প প্রস্তাব নেই। আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করে সীমান্ত খোলা রাখার যে অস্পষ্ট প্রস্তাব ব্রিটেনে বারবার শোনা যাচ্ছে, তার কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা নেই।

ব্রিটেনের রাজনৈতিক অচলাবস্থার জের ধরে সে দেশের শিল্প-বাণিজ্য জগতে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের আশঙ্কা বাড়ছে। সরকারের প্রস্তুতির অভাবে চরম অরাজকতার আশঙ্কা করছে অনেক মহল। অসংখ্য কোম্পানি ২৯ মার্চের পর শুল্ক সংক্রান্ত জটিলতা সামলানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইউরোপের মূল ভূখে  দফতর সরিয়ে ব্রিটেন থেকে মূলধন সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান। ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের মধ্যেও ব্রেক্সিট নিয়ে মতপার্থক্য বাড়ছে। স্কটল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নিকোলা স্টার্জেন সোমবার এক ভাষণে এ বিষয়ে তার বক্তব্য রাখতে চলেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তার মতে, ব্রিটেন এখনো ব্রেক্সিটের জন্য প্রস্তুত নয়। এই অবস্থায় স্কটল্যান্ডের স্বার্থরক্ষা সম্ভব নয় বলে তিনি মনে করেন। ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে ব্রিটেনে নানারকম প্রস্তুতির কথা শোনা যাচ্ছে। সানডে টাইমস সংবাদপত্রের সূত্র অনুযায়ী, ব্রেক্সিটের কারণে যদি দাঙ্গা বেঁধে যায় সে ক্ষেত্রে রানী এলিজাবেথসহ রাজপরিবারের সদস্যদের গোপন স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ডয়েচে ভেলে

সর্বশেষ খবর