শনিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ব্রেক্সিট নিয়ে অচলাবস্থা কাটতে চলেছে?

ব্রেক্সিট নিয়ে অচলাবস্থা কাটতে চলেছে?

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ব্রেক্সিট চুক্তিতে রদবদলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়ার পর ব্রিটেনের সরকার বিকল্প পথে অগ্রসর হচ্ছে। ব্যাকস্টপ সংক্রান্ত আইনি গ্যারেন্টির মাধ্যমে পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন করাতে চান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। ব্রেক্সিট চুক্তিতে কোনো পরিবর্তন যে সম্ভব নয়, তা বুঝতে পেরেছে ব্রিটেনের তেরেসা মে সরকার। জানুয়ারি মাসে ব্রিটেনের সংসদ এই চুক্তির বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার পর থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছিল। তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী বার বার ব্রাসেলসে গিয়ে সেই চুক্তির মধ্যে আয়ারল্যান্ড সীমান্তে ব্যাকস্টপ সংক্রান্ত বোঝাপড়ায় পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এমন প্রচেষ্টা বিফল হওয়ায় বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের সরকার সেই পরিস্থিতি কার্যত মেনে নিয়েছে। বৃহস্পতিবার ব্রেক্সিটের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের ব্রাসেলস সফরের পর এই উপলব্ধি দেখা গেছে। এমন প্রেক্ষাপটে আরও সময় নষ্ট না করে বরং পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তির অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চান তেরেসা মে। তাই আগামী দিনগুলোতে ইইউর সঙ্গে সংলাপের লক্ষ্য হবে এমন আইনসিদ্ধ গ্যারান্টি আদায় করা, যা ব্রিটিশ সংসদের ইইউ-বিরোধী সদস্যদের আশ্বস্ত করতে পারবে। মূল চুক্তির বাইরেই এক নথির মধ্যে ব্যাকস্টপ সংক্রান্ত আশ্বাস আদায় করার চেষ্টা করে যাবে ব্রিটিশ সরকার। উল্লেখ্য, ব্রিটেন ব্যাকস্টপ সংক্রান্ত ব্যবস্থার সময়সীমা সীমিত রাখার দাবি জানিয়ে আসছে। ব্রেক্সিট চুক্তির সঙ্গে দুই পক্ষের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে প্রকাশিত রাজনৈতিক ঘোষণাপত্রে রদবদল করে এ বিষয়ে গ্যারান্টি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। তবে এমন আপস-মীমাংসা কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। তাই এ বিষয়ে কোনো সমঝোতা যে ব্রিটেনের সংসদে অচলাবস্থা কাটাতে পারবে, সে বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে না। তাই ইউরোপীয় নেতারা এমন প্রস্তাব সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করছেন। তাঁদের ধারণা, ব্রিটেনের বিভক্ত সংসদে যে কোনো ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। ইইউর ধারণা, এই অবস্থায় ব্রিটেন বিচ্ছেদের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে চলেছে। কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপিরা চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের ঘোর বিরোধী। তারা প্রধানমন্ত্রীকে সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করতে বাধ্য করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ২১ ও ২২ মার্চ ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে সেই আবেদন বিবেচনা করবেন ইইউ নেতারা। ব্রিটেনের সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের চাবিকাঠি বিরোধী লেবার দলের হাতে রয়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রীর টোরি দলের মধ্যে কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা দ্বিতীয় ভোটেও তাদের সমর্থন জানাবেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়। লেবার নেতা জেরেমি কর্বিন বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইইউর মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে ও অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি বিচ্ছেদের পর ব্রিটেনকে ইইউর সঙ্গে শুল্ক ইউনিয়নে রাখার পক্ষে যুক্তি দিয়ে আসছেন। তার যুক্তি, সে ক্ষেত্রে আয়ারল্যান্ড সীমান্ত নিয়ে জটিলতা ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কার কোনো কারণ থাকবে না। তবে পার্লামেন্টে কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা অবশ্য এমন প্রস্তাবের ঘোর বিরোধী। তাদের উপর প্রধানমন্ত্রীর মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরতার কড়া সমালোচনা করেন কর্বিন।

এদিকে, ব্রেক্সিট সমস্যার সমাধান না হওয়ায় যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের একাধিক এমপি ইতিমধ্যে পদত্যাগ করেছেন।

সর্বশেষ খবর