রবিবার, ৩ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

কর্মস্থলে হিজাব নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে বিল পাস

কর্মস্থলে হিজাব নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে বিল পাস

বহুল প্রত্যাশিত ‘ধর্মীয় পোশাক’ বিল পাস হলো নিউইয়র্ক স্টেট পার্লামেন্টের একটি কক্ষে। স্টেট অ্যাসেম্বলিতে ১০৬-১ ভোটে (এ ৪২০৪) পাস হওয়া এ বিল উত্থাপন করেছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যামাইকার অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড ওয়েপ্রিন। এটি আইনে পরিণত হতে স্টেট সিনেটেও পাস হতে হবে। এ দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশিদের আরেক ভরসাস্থল সিনেটর জন ল্যু। জন ল্যু এ প্রসঙ্গে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান সব ধর্ম, বর্ণ, গোত্র আর জাতিগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করেছে। সেটি  নিউইয়র্ক স্টেটেও সমুন্নত রাখতে হবে। উল্লেখ্য, ৯/১১-এর সন্ত্রাসী হামলার পর কর্মস্থলে হিজাব এবং টারবান পরে যারা যেতেন, তাদের নানা পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। বিমাতাসুলভ আচরণের অভিযোগ রয়েছে অসংখ্য। অনেকে চলতি পথে আক্রান্তও হয়েছেন। নিহত হয়েছেন বাংলাদেশি নাজমা খানম। এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসীরা দাবি উঠিয়েছিলেন কর্মস্থলের ধর্মীয় পোশাকবিরোধী নিষিদ্ধের একটি বিধির জন্য। শুধু তাই নয়, নিউইয়র্কে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে হিজাব ডে-ও পালিত হচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। সেই হিজাব ডে-কে জাতিসংঘও স্বীকৃতি দিয়েছে। ২৮ ফেব্রুয়ারি বিলটি পাসের পর আলবেনি পার্লামেন্ট ভবনের সংবাদ সম্মেলন থেকে অ্যাসেম্বলিম্যান ওয়েপ্রিন সব সহকর্মীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। ‘ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক অপরাধের মাত্রা বেড়ে চলায় নিউইয়র্কের সব প্রশাসনের জন্য দায়িত্ব হয়ে পড়েছে কর্মস্থল এবং চলতি পথে কেউ যাতে হয়রানি, হেনস্তা এবং বিমাতাসূলভ আচরণের শিকার না হয়। এ বিল পাসের মধ্য দিয়ে এটি এখন নিশ্চিত হবে যে, এই স্টেটের কেউই ধর্মীয় পোশাকের কারণে কোনো ধরনের হয়রানির  শিকার হবে না,’ বলেছেন ডেভিড ওয়েপ্রিন। উল্লেখ্য, এ বিলটি সর্বপ্রথম উত্থাপন করা হয় ২০১১ সালে। ডেভিড ওয়েপ্রিনের উত্থাপিত বিলটি ২০১৩ সাল থেকে প্রতিটি অধিবেশনেই পাস হয়েছিল। কিন্তু স্টেট সিনেটে সেটি উত্থাপিত না হওয়ায় তা আইনে পরিণত করার উপযোগী হয়নি। তবে এবার সে নিশ্চয়তা দিলেন স্টেট সিনেটর জন ল্যু। এ বছরই তা সিনেটেও পাস হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে আশ্বাস দেন সিনেটর ল্যু। কারণ, এখন স্টেট সিনেটেও ডেমোক্র্যাটরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। জন ল্যু উল্লেখ করেন, ‘তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে সারা বিশ্ব যেখানে একটি ভিলেজে পরিণত হয়েছে, সে অবস্থায় ধর্মীয় কারণে কারও সঙ্গেই দ্বিমত পোষণের সুযোগ থাকতে পারে না। এমন একটি বিধির প্রয়োজন অনেক আগে থেকেই অনুভূত হচ্ছে এ স্টেটে।’ এনআরবি নিউজ

অ্যাসেম্বলিতে এ বিলের কো-স্পন্সর ছিলেন ব্রুকলিনের অ্যাসেম্বলিম্যান সিমচা আইচেনস্টাইন। আর এ বিলের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া একমাত্র রিপাবলিকান সিনেটর হলেন ক্রিস্টফার ফ্রেন্ডস। এ প্রসঙ্গে নিউ আমেরিকান ভোটার অ্যাসোসিয়েশনের (নাভা) নির্বাহী সচিব রোকেয়া আকতার বলেন, নামটি ফ্রেন্ডস হলেও, কার্যত তিনি ধর্মবিশ্বাসীদের বন্ধু হতে পারেননি। আশা করছি, নিকট ভবিষ্যতে তার বোধোদয় ঘটবে। উল্লেখ্য, নাভার প্রেসিডেন্ট ড. দীলিপ নাথসহ কয়েকজন ছিলেন ওই সংবাদ সম্মেলনে। এদিকে বিল পাসের পর গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন হিজাব ডের অন্যতম প্রবর্তক কমিউনিটি লিডার মাজেদা এ উদ্দিন। তিনি বলেছেন, দীর্ঘ প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটতে যাচ্ছে। এ জন্য সবইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যের প্রক্রিয়ায় স্টেট পার্লামেন্টে এ স্টেটের সব পাবলিক স্কুলে হালাল খাদ্য পরিবেশনের দাবিও আদায় করা সম্ভব হবে। এনআরবি নিউজ

সর্বশেষ খবর