বুধবার, ৬ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইউরোপের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত ম্যাক্রোঁ

ইউরোপের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত ম্যাক্রোঁ

বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে বিশ্বের অন্যতম জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তবে সদিচ্ছা থাকলে নতুন এবং শক্তিশালী ইউরোপ গড়া সম্ভব বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। আগামী মে মাসে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচন। এর আগে ইউরোপের ২৮টি সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক নিবন্ধে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ উগ্র জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে একগুচ্ছ সংস্কারের প্রস্তাব করেছেন। ব্রেক্সিট ছাড়াও ঘরে-বাইরে অনেক সংকটের মুখে রয়েছে ইইউ। মাসদুয়েক পরে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে তার প্রতিফলন দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জনমোহিনী ‘পপুলিস্ট’ রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয়তাবাদ, অভিবাসন, কর্মসংস্থান ইত্যাদি একাধিক বিতর্কিত বিষয় তুলে ধরে মানুষের সমর্থন আদায় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেক শক্তি ইইউ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধেও সরব। এমন চ্যালেঞ্জের মুখে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ইউরোপের নাগরিকদের কাছে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তার স্বপ্নের রূপরেখা তুলে ধরলেন। ইইউ সদস্য দেশগুলোর ২৮টি সংবাদপত্রে তার লেখা সেই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইউরোপীয় নাগরিকদের মনে ইইউর প্রতি আরও আস্থা, ভালোবাসা ও উৎসাহ জাগিয়ে তুলতে চান। তবে ম্যাক্রোঁ মনে করেন, জাতীয়তাবাদীরা মানুষের সেই ন্যায্য ক্ষোভের ফায়দা তুলছে, যদিও তাদের ঝুলিতে কোনো সমাধানসূত্র নেই। তাই তাদের মোকাবিলা করতে হবে। ম্যাক্রোঁ মনে করেন, একমাত্র ইউরোপীয় স্তরেই বর্তমান সংকট ও চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলা করা সম্ভব।

 সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদের মাধ্যমে কোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। তবে তার জন্য ইইউর বর্তমান কাঠামো উপযুক্ত নয়। অর্থাৎ যেমনটা চলে আসছে, সবকিছু সেভাবে রেখে দিয়ে সন্তুষ্ট হয়ে বসে থাকলে চলবে না। বর্তমান জগতে গণতন্ত্রের বিপদ সম্পর্কেও সাবধান করে দিয়েছেন মাক্রোঁ। বিশেষ করে নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর যেভাবে সাইবার হামলা ও অবৈধ হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটছে, তার মোকাবিলা করতে তিনি গণতন্ত্রের সুরক্ষার জন্য এক ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রস্তাব রেখেছেন। তাছাড়া ইউরোপের রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বাইরে থেকে অর্থের জোগান নিষিদ্ধ করতে চান তিনি। নির্বাচনী প্রচারের সময় ভুয়া তথ্য ও খবর ছড়ানোকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে ফ্রান্স গত বছর যে সব ব্যবস্থা নিয়েছে, ইউরোপীয় স্তরেও তেমন পদক্ষেপ দেখতে চান তিনি। অভিবাসন সম্পর্কে ইউরোপের মানুষের ভয়ভীতি দূর করতেও মাক্রোঁ কিছু প্রস্তাব রেখেছেন। শেঙেন এলাকার সংস্কার ও ইউরোপের বহির্সীমানার জন্য ইউরোপীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী গড়ে তোলার পাশাপাশি রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য এক ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠান দেখতে চান তিনি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বলেন, সুরক্ষিত সীমানা ছাড়া কোনো সমাজের মধ্যে আত্মপরিচয় বোধ সম্ভব নয়। ইমানুয়েল মাক্রোঁ ইউরোপীয় স্তরে প্রতিরক্ষার কাঠামো আরও জোরদার করতে চান। তাছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য জগতের জন্যও ইউরোপের স্বার্থে তিনি কিছু সংস্কারের প্রস্তাব রেখেছেন। -ডয়েচে ভেলে

সর্বশেষ খবর