বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

হামলা নিয়েই সন্দেহ!

হামলা নিয়েই সন্দেহ!

পাকিস্তানের বালাকোটের কাছে জইশ-ই-মোহাম্মদের যে প্রশিক্ষণ শিবিরে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে ভারত সেখানে জইশ পরিচালিত মাদ্রাসা ভবন এখনো দাঁড়িয়ে আছে বলে ধারণা পাওয়া গেছে। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্যাটেলাইট ছবি পর্যালোচনা করে মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে রয়টার্স। এরপর অনেকে মন্তব্য করেছে ভারতের হামলা নিয়েই তাদের সন্দেহ হচ্ছে। জইশ-ই-মোহাম্মদের ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তাদের যুদ্ধবিমানগুলো ১০০০ কেজি বোমাবর্ষণ করে বহু জঙ্গিকে হত্যা করেছে বলে দাবি করে আসছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক বেসরকারি স্যাটেলাইট অপারেটর প্ল্যানেট ল্যাব ইনকরপোরেটেডের সরবরাহ করা ছবিগুলোতে ভারতের বোমা হামলার ছয় দিন পর ৪ মার্চ ওই মাদ্রাসার স্থানটিতে অন্তত ছয়টি ভবন দেখা গেছে। ওই হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো স্যাটেলাইট ছবি পাওয়া যায়নি। কিন্তু প্ল্যানেট ল্যাবের ওই ছবিগুলোতে (যেগুলো ৭২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ছোট জিনিসও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছে) ভারত সরকার যেখানে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করছে সেখানে পরিষ্কারভাবে ওই কাঠামোগুলো দৃশ্যমান হয়েছে। এই ছবিগুলোর সঙ্গে ২০১৮ সালের এপ্রিলে গ্রহণ করা স্যাটেলাইট ছবিগুলোর তেমন কোনো পার্থক্য নেই। ভবনগুলোর ছাদে দৃষ্টিগোচর হওয়ার মতো কোনো ছিদ্র নেই, দাহ্য পদার্থের আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই, বিস্ফোরণের ধাক্কায় উড়ে যাওয়া কোনো দেয়াল নেই, মাদ্রাসার আশপাশে উপড়ে পড়া কোনো গাছ নেই এমনকি বিমান হামলার অন্য কোনো চিহ্নই নেই। এই ছবিগুলো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের দাবির বিষয়ে আরও সন্দেহ তৈরি করেছে।

গত আট দিন ধরে তারা দাবি করে আসছে, ২৬ ফেব্র“য়ারি ভোররাতের ওই বিমান হামলায় পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোট শহর ও জাবা গ্রামের কাছে ওই মাদ্রাসাস্থলের সব লক্ষ্যস্থলে আঘাত হানা হয়েছে। স্যাটেলাইট ছবিতে যা দেখা গেছে এবং এসব ছবি তাদের সরকারি বিবৃতিকে দুর্বল করে দিবে কি না সে বিষয়ে গত কয়েকদিন ধরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে ই-মেইলে প্রশ্ন করা হলেও তারা কোনো জবাব দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

হামলা লক্ষ্যচ্যুত? অস্ত্র রাখার স্থান ও পদ্ধতির স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মিডলবুরি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ইস্ট এশিয়া ননপ্রলিফারেশন প্রজেক্টের পরিচালক জেফ্রি লুইস বলেছেন, ‘উচ্চ রেজুলেশনের এই ছবিগুলোতে বোমার ক্ষয়ক্ষতির কোনো প্রমাণ দেখা যাচ্ছে না।’ প্ল্যানেট ল্যাবের গ্রহণ করা ওই স্থানের আরও তিনটি উচ্চ রেজুলেশনের ছবি দেখেছেন লুয়িস। হামলায় কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে ভারত সরকার তা প্রকাশ করেনি। বোমার গর্ত : ভারতের বিমান হামলার পর গত সপ্তাহে রয়টার্সের সাংবাদিকরা দুইবার বালাকোটের ওই এলাকাটি পরিদর্শন করেছেন। এ সময় আশপাশের এলাকাগুলোর লোকজনের বিস্তারিত সাক্ষাৎকারও গ্রহণ করেছেন। তারা ধ্বংস হয়ে যাওয়া কোনো শিবিরের বা কেউ নিহত হয়েছেন বলে কোনো প্রমাণ পাননি। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, ধারাবাহিক কয়েকটি বড় ধরনের বিস্ফোরণ হয়েছে কিন্তু বোমাগুলো গাছের ওপর পড়েছে বলে মনে হয়েছে। জাবার ওপরে বনাচ্ছাদিত পাহাড়ি ঢালে চারটি গর্ত ও ছিন্নভিন্ন পাইন গাছের দিকে নির্দেশ করে বলেছেন তারা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর