মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

প্রশ্নের মুখে বোয়িং

পাঁচ মাসে দুই বিমান বিধ্বস্ত

প্রশ্নের মুখে বোয়িং

ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনস ৭৩৭ বিধ্বস্ত হয়ে ১৫৭ জন নিহতের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে মার্কিন   উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং। মাত্র ৫ মাসের ব্যবধানে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮-এর এটি দ্বিতীয় দুর্ঘটনা। রবিবারের আগে গত বছর অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ারের একই মডেলের একটি বিমান সবযাত্রী ও ক্রু নিয়ে বিধ্বস্ত হয়েছিল। 

ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজটির মতো লায়ন এয়ারের ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ উড়োজাহাজটিও  উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয়ে ১৮৯ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে গতকাল চীনের বিমান পরিবহন নিয়ন্ত্রণ সংস্থা চীনের এয়ারলাইনসগুলোকে তাদের বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ উড়োজাহাজের ফ্লাইট স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। একই মডেলের উড়োজাহাজ পরিচালনাকারী উত্তর   আমেরিকার বেশ কয়েকটি এয়ারলাইনস জানিয়েছে, তারা তদন্তের অগ্রগতির দিকে নজর রাখছে।

ইথিপিয়ার উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের ছয় মিনিট পর আর লায়ন এয়ারের উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের ১৩ মিনিট পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল। দীর্ঘ সময় ধরে উড়তে সক্ষম বোয়িং কোম্পানির সরু দেহের এই জেটবিমানটি ২০১৭ সাল থেকে যাত্রী পরিবহন করতে শুরু করে। দুর্ঘটনায় পড়া এই দুটি উড়োজাহাজই নতুন ছিল। এদিকে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সর্বশেষ বিধ্বস্তের ঘটনার কারণ সম্পর্কে বলার সময় এখনো হয়নি। ১৫৭ জন আরোহী নিয়ে আদ্দিস আবাবা থেকে নাইরোবি যাওয়ার পথে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনসের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। ফ্লাইটটিতে ৩০টিরও বেশি দেশের যাত্রী ছিলেন। এদের মধ্যে কোরিয়ার ৩২ জন, কানাডার ১৮ জন ও ব্রিটেনের সাতজন। জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ফ্লাইটটিতে নিহত অন্তত ১৯ জন জাতিসংঘের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। স্লোভাকিয়ার সংসদ সদস্য অ্যান্থন রঙ্কো জানিয়েছেন, বিমানটিতে তার স্ত্রী ও দুই সন্তান ছিলেন। দুর্ঘটনার জন্য ইথিওপিয়ায় জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন বিভাগের সাবেক মহাপরিদর্শক ম্যারি স্কিয়াভো সিএনএনকে বলেন, ‘এটি অত্যন্ত সন্দেহজনক। নতুন একটি মডেলের উড়োজাহাজ এক বছরে দুবার বিধ্বস্ত হলো। বিমান পরিবহন শিল্পে এটি সতর্ক সংকেত বাজিয়ে দিয়েছে, কারণ এমনটি ঘটে না।’ বিমানটির চালকের নাম সিনিয়র ক্যাপ্টেন ইয়ারেড গেটাচিউ বলে জানানো হয়েছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, চালকের দক্ষতা অসাধারণ এবং ৮ হাজারের বেশি ঘণ্টা বিমান চালিয়েছেন। গত অক্টোবরে লায়ন এয়ার বিধ্বস্ত হওয়ার পর তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্সের নতুন সুবিধা ইঞ্জিন থেমে যাওয়া রোধ করতে বিমানটির স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা নিয়ে জটিলতায় পড়েছিলেন পাইলট। এই ব্যবস্থার কারণে বিমানটির সামনের অংশ নিচের দিকে নেমে যায়, পাইলট তা সংশোধনের চেষ্টার পরও। গত অক্টোবরের দুর্ঘটনার পর বোয়িং সব এয়ারলাইনস কোম্পানিকে অ্যান্টি-স্টল ব্যবস্থা নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে সতর্ক করেছিল। এদিকে এই বিমান ব্যবহারে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে ফিজি এয়ারওয়েজ, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস লিমিটেড ও ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর