বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

মাটির নিচে গ্রাম

উপর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই, মাটি থেকে প্রায় ২৩ ফুট গভীরে বসবাস করছে একটা পুরো গ্রাম! আসলে পুরো গ্রামটাই গড়ে উঠেছে মাটির নিচে। এ গ্রামের প্রতিটি বাড়ির স্থাপত্য পরিকল্পনা এক কথায় অসাধারণ। ঘরগুলোয় তাপমাত্রা শীতকালে ১০ ডিগ্রির কম হয় না আর গ্রীষ্মে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকে না। চীনের হেনান প্রদেশের সানমেনশিয়ায় রয়েছে এ অদ্ভুত গ্রাম। প্রায় ২০০ বছর ধরে এখানে মাটির নিচেই বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছেন কয়েক হাজার মানুষ। সানমেনশিয়ায় এমন অন্তত ১০ হাজার ঘরের সন্ধান মিলেছে। এর বেশির ভাগই বর্তমানে পরিত্যক্ত। মাটির নিচে তৈরি এ ঘরগুলোকে চীনা ভাষায় বলা হয় ‘ইয়ায়োডং’, যার অর্থ গুহাঘর। একটা সময় এখানে প্রায় ২০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। কিন্তু আধুনিক সুযোগ-সুবিধার অভাবে ও প্রতিকূল জীবনযাত্রার চাপে অনেকেই এলাকা ছেড়ে চলে যান। তবে এখনো সানমেনশিয়ার এই গুহাঘরগুলোয় প্রায় ৩ হাজার মানুষ বসবাস করেন। মাটি থেকে প্রায় ২৩ ফুট গভীরে তৈরি এ ঘরগুলো লম্বায় ৩৩ থেকে ৩৯ ফুট পর্যন্ত হয়। ইতিহাসবিদদের মতে, সানমেনশিয়ার ইয়ায়োডংয়ে বসবাসের ইতিহাস ২০০ বছরের বেশি প্রাচীন নয়।

তবে চীনের পার্বত্য এলাকায় আজ থেকে প্রায় ৪ হাজার বছর আগে, ব্রোঞ্জ যুগে এ ধরনের গুহাঘর তৈরি করে বসবাস করত একদল মানুষ। ২০১১ সাল থেকে এ গ্রামটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্থানীয় প্রশাসন। বর্তমানে এসব ইয়ায়োডং বা গুহাঘরগুলোয় বিদ্যুৎ সংযোগসহ সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, গুহাঘরগুলো ভূমিকম্পেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। আশ্চর্য এ ঘরগুলোর আকর্ষণে এ এলাকায় বর্তমানে পর্যটকের আনাগোনা অনেকটাই বেড়ে গেছে। পর্যটক টানার জন্য এখন ইয়ায়োডং ভাড়া দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এক মাসের জন্য ভাড়ায় এ ইয়ায়োডংয়ে থাকতে চাইলে গুনতে হবে ২১ ইউরো।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর