বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

উত্তরে মোদি আর দক্ষিণে রাহুল এগিয়ে

গৌতম লাহিড়ী, নয়াদিল্লি

উত্তরে মোদি আর দক্ষিণে রাহুল এগিয়ে

ভারতে এবারের লোকসভা (সংসদ) নির্বাচনে ভোটে এক ধরনের ভৌগোলিক মেরুকরণ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এই মেরুকরণ হলো উত্তর ভারতের হিন্দি বলয় এবং দাক্ষিণাত্যের বিন্ধাচল পর্বত থেকে শেষ ভূমি আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। উত্তর ভারতের হিন্দি বলয়ে নিশ্চিতভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তুলনামূলকভাবে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে, তেমনি দক্ষিণ ভারতে জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর জনপ্রিয়তা আগের তুলনায় বেড়েছে। এর মূল কারণ এই প্রথম রাহুল গান্ধী কেরালার নিসর্গ নগরী ওয়েনাড় থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বারানসীতে যেমন মোদির জয় নিশ্চিত, তেমনি ওয়েনাড়ে রাহুলেরও। রাহুল অবশ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তার পুরনো উত্তরপ্রদেশের আমেথি আসনেও। মোদি এবার একটি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গতবার তিনি গুজরাটের ভাদোদরা আসনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। জয়ের পর এই আসনটি ছেড়ে দেন। এবার এই প্রথম বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ গুজরাটের গান্ধীনগর থেকে লোকসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গান্ধীনগর আসনটি ছিল বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য লালকৃষ্ণ আদভানির। এবার তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তেমনি অযোধ্যা বাবরি মসজিদ ধ্বংসকরণ মামলায় অভিযুক্ত আদভানির সঙ্গে মুরলীমনোহর যোশী-উমা ভারতী-বিনয় কাটিয়ারও মনোনয়ন পাননি। ফলে বিজেপিতে এখন নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব। মোদি-অমিত শাহ পুরনো নেতাদের ছেঁটে দিয়েছেন।

কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেন, ‘এবার দক্ষিণ ভারতের সবগুলো রাজ্য থেকে অনুরোধ করা হয় রাহুল গান্ধী যেন ওখানকার কোনো রাজ্য থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেই অনুরোধ তিনি রক্ষা করছেন। আজ বৃহস্পতিবার তিনি মনোনয়ন পেশ করবেন।’ আদতে দক্ষিণ ভারতে একদা ইন্দিরা গান্ধী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ১৯৭৭ সালে ইন্দিরা গান্ধী হেরে যাওয়ার পর দক্ষিণ ভারতের চিকমাগালুর আসনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় ফেরেন। এ ছাড়া তামিলনাড়ুর শ্রীপেরাম্বুদুরে রাজীব গান্ধী তামিল টাইগারদের হাতে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন। সেজন্য আজও দক্ষিণ ভারত গান্ধী পরিবারের প্রতি সহানুভূতিশীল। উত্তর ভারতের হিন্দি বলয়ে (মধ্যভারত-পশ্চিম ভারত প্রদেশ বাদে) মোট ১৭০টি আসন রয়েছে। এখান থেকেই গত লোকসভা নির্বাচনে মোদি ঝড়ে বিজেপি নিরঙ্কুশ আসন পায়। এবার সেই সংখ্যা কমলেও সার্বিকভাবে মোদি এগিয়ে থাকতে পারেন বলে পর্যবেক্ষকদের অনুমান। সেই তুলনায় দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক, কেরালা, তামিলনাড়ু, পন্ডিচেরি, আন্দামান, লাক্ষাদ্বীপ মিলিয়ে ১২১টি আসন। রাহুলের লক্ষ্য এই আসনগুলোর মধ্যে নিরঙ্কুুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করা। এসব রাজ্যের মধ্যে কংগ্রেস দল মোর্চা গঠন করে বিজেপিকে পেছনে ঠেলে দিতে সক্ষম হতে পারে। তাই উত্তর ভারত বনাম দক্ষিণ ভারতের লড়াই এবার অন্যতম আকর্ষণ। নিশ্চিতভাবে মধ্য-পশ্চিম ভারত-পূর্বাঞ্চলে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। দিন যতই পোহাচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র হয়ে উঠছে।

সর্বশেষ খবর