শনিবার, ৪ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আঘাত হেনেছে মোদি-মমতার র‌্যালিতেও

কলকাতা প্রতিনিধি

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আঘাত হেনেছে মোদি-মমতার র‌্যালিতেও

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ কেবল দেশটির পূর্ব উপকূলেই প্রবল ধ্বংসলীলা চালিয়েছে তাই নয়, ‘ফণী’ আঘাত হেনেছে ভারতের একাধিক রাজনৈতিক নেতাদের নির্বাচনী প্রচারণার তালিকাতেও। দেশজুড়েই এখন চলছে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন। সাত পর্বের এই নির্বাচনের চার পর্ব ইতিমধ্যেই সম্পন্ন। বাকি রয়েছে আরও তিন পর্ব (৬, ১২, ১৯ মে)। পঞ্চম পর্বে আগামী ৬ মে দেশজুড়ে সাতটি রাজ্যের ৫১টি লোকসভা আসনে ভোট নেওয়া হবে, যার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ৭টি কেন্দ্র। স্বাভাবিকভাবেই ভোটারদের মন পেতে রাজপথ থেকে অলি-গলি ছুটে বেড়াচ্ছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। একে অপরকে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা। সবমিলিয়ে ভোটকে কেন্দ্র করে রাজ্যের রাজনীতি যখন উত্তপ্ত ঠিক সে সময় একা ‘ফণী’ই ভোটের সেই উত্তাপকে এক নিমেষে থামিয়ে দিল। আর সেই সঙ্গে এটাও প্রমাণ হয়ে গেল যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কাছে তারা কতটা অসহায়।  চলমান এই লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই উড়িষ্যায় ১৭৫ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়েছে ‘ফণী’। ল ভ  পুরী, কটক, ভুবনেশ্বরসহ রাজ্যটির একাধিক জায়গা। এ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝাড়খ , তামিলনাড়–তেও ঝড়ো বাতাস ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারাই এই রাজ্যগুলোতে তাদের নির্বাচনী কর্মসূচি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন।

ঝাড়খে  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী জনসভা একদিন পিছিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগামী ৫ মে রাজ্যটির চাইবাসা কলেজ ময়দানে সভা ছিল মোদির, একদিন পিছিয়ে তা করা হয়েছে ৬ মে। আগামী ৬ মে পঞ্চম দফায় রাজ্যটির কোদারমা, রাঁচি, কুন্তি ও হাজারিবাগ কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে। ঝড়ের সতর্কতা হিসেবে বাতিল করা হয়েছে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর শুক্রবারের জনসভাও। রাঁচি, কুন্তি ও কোদারমাতে তিনটি সভা করার কথা ছিল শাহর। কিন্তু ‘ফণী’র কারণে সবকয়টি সভাই বাতিল করা হয়েছে।  গতকালকের জামসেদপুরে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের জনসভাও বাতিল করা হয়েছে।

সাইক্লোন ‘ফণী’ ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্বাচনী তালিকাতেও। ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্কতা হিসেবেই গতকাল উত্তরচব্বিশ পরগনা জেলার ব্যারাকপুর ও পলতা দুটি নির্বাচনী জনসভার দিন এগিয়ে বৃহস্পতিবার করা হয়েছিল। এ ছাড়াও আগামী ৪৮ ঘণ্টা তার সব রাজনৈতিক কর্মসূচি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই মুহূর্তে তিনি রয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খড়গপুরে। সেখান থেকে রাজ্যেও গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন।  আগামী ৬ মে (সোমবার) রাজ্যের যে সাতটি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে সেগুলো হলো- বনগাঁ, ব্যারাকপুর, হাওড়া, উলুবেড়িয়া, শ্রীরামপুর ও আরামবাগ। আর এই সবকয়টি কেন্দ্রেই ‘ফণী’র প্রভাব পড়তে পারে বলে প্রশাসনের তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

তবে মোদি, মমতা বা অমিত শাহরাই নয়। কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি থেকে শুরু করে রাজ্যটির ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস, বিরোধী দল কংগ্রেস বা সিপিআইএম-প্রতিটি দলের ছোট-মেজো এমনকি গ্রাম স্তরের নেতারাও তাদের নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ রেখেছেন ‘ফণী’র জন্য। 

সর্বশেষ খবর