শুক্রবার, ১০ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইরানকে আষ্টেপৃষ্ঠে আটকাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

পেট্রোলিয়ামের পর ইরান থেকে ধাতু আমদানির ওপরও নিষেধাজ্ঞা

পেট্রোলিয়ামের পর ইরান থেকে ধাতু আমদানির ওপরেও নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করেছে ওয়াশিংটন। ইরান পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘন না করেও নতুন কার্যকলাপ শুরু করছে। ইউরোপ দোটানায় পড়েছে। ইরানকে যুদ্ধের মুখে রাখতে ইতিমধ্যে উপসাগড়ে যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যে কোনো অজুহাতে ইরানে হামলা চালাতে কার্পণ্য করবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সমাজের পরমাণু চুক্তি বাতিল করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক বছর আগে তিনি একতরফাভাবে এই চুক্তি বাতিল করেন। তবে বাকি স্বাক্ষরকারী  দেশগুলো চুক্তিটিকে চালু রাখার অঙ্গীকার করায় তিনি ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য গোটা বিশ্বের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। তারই আওতায় ইরানের পেট্রোলিয়াম রপ্তানি ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। যে ৮টি দেশ এ  ক্ষেত্রে কিছুদিনের ছাড় পেয়েছিল, সম্প্রতি তার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। ফলে ইরানের আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস বন্ধ হয়ে গেছে। বুধবার ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সেদেশের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস বন্ধ করতে নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করেছে। এর আওতায় ৯০ দিন পর থেকে ইরানের কাছ থেকে এসব পণ্য কিনলে যে কোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শান্তিমূলক পদক্ষেপ নেবে ওয়াশিংটন। ফলে শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত ধাতু রপ্তানির পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।  সেই সঙ্গে মার্কিন প্রশাসন আরও নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে। ওয়াশিংটন থেকে প্রবল চাপের মুখে ইরান পরোক্ষভাবে আন্তর্জাতিক সমাজের সহায়তা চাইছে। বাকি দেশগুলো ইরানকে ট্রাম্প প্রশাসনের রোষ থেকে রক্ষা না করলে সে  দেশকে বাধ্য হয়ে অন্য পথে হাঁটতে হবে এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে তেহরান। এই মুহূর্তে পরমাণু চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন না করলেও ইরান পরমাণু কর্মসূচির ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করার  ঘোষণা করেছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, আজই পরমাণু চুক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে না। তবে তিনি জানিয়েছেন, ৬০ দিনের মধ্যে ইরান নির্দিষ্ট মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়া আবার শুরু করবে। সাধারণত পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এমন প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানের লোহা, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম ও কপার খাতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন ট্রাম্প। এসব পণ্য ইরান সরকারের অ-পেট্রোলিয়াম খাত থেকে রফতানি রাজস্ব পাওয়ার বৃহত্তর উৎস। দেশটির মোট রফতানি আয়ের ১০ শতাংশ আসে এসব পণ্য থেকে। ট্রাম্প হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘মৌলিকভাবে আচরণ না বদলানো পর্যন্ত তেহরানের বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা  নেওয়া হতে পারে।’

সর্বশেষ খবর