শিরোনাম
শুক্রবার, ৩১ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই অস্ত্র কিনে চলেছে মিয়ানমার

নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই অস্ত্র কিনে চলেছে মিয়ানমার

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও বিপুল পরিমাণের অস্ত্র কিনে চলেছে মিয়ানমার। সামরিক শক্তি বাড়াতে চীন, রাশিয়া, ভারত ও ইসরায়েল থেকে দেশটি প্রচুর প্রাণঘাতী অস্ত্র সংগ্রহ করে যাচ্ছে।  

নির্যাতনের মুখে সাত লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার প্রেক্ষাপটে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে মিয়ানমার। এর মধ্যে দেশটির বেশ কিছু সামরিক কর্মকর্তাও অ্যামেরিকার নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছেন। রোহিঙ্গা মুসলমানদের পর রাখাইন রাজ্যে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন বিদ্রোহীদের টার্গেট করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এসবের নিন্দা জানিয়ে আসছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। কিন্তু মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অস্ত্র কেনা অব্যাহত রেখেছে। ভৌগোলিক দিক  থেকে ও অস্ত্রের বাজার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় বিভিন্ন  দেশের সরকারের কাছ থেকে অস্ত্র কেনায় ছাড়ও পাচ্ছে দেশটি। বিদেশ থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অস্ত্র কেনা ও প্রশিক্ষণ নেওয়ার নানা দিক এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

চীন : অর্থনৈতিক অবরোধ শিথিল করলেও মিয়ানমারের কাছে এখন অস্ত্র বিক্রি করছে অ্যামেরিকা। তবে অস্ত্র বিক্রিতে পিছপা হচ্ছে না চীন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘে মিয়ানমারকে সমর্থন দিয়ে আসছে চীন। দেশটিকে মিয়ানমারের অস্ত্রের প্রধান উৎস হিসেবে অভিহিত করেছে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালে মিয়ানমারের ৬৮ শতাংশ অস্ত্রের আমদানি হয়েছে চীন থেকে। সাঁজোয়া যান, ভূমি থেকে আকাশের মিসাইল প্রযুক্তি, রাডার ও ড্রোনসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম ছিল এর মধ্যে।

ওাশিয়া : আন্তর্জাতিক পরিম লে মিয়ানমারের অন্যতম উদ্যমী বন্ধু রাশিয়া। গত মাসে সেদেশের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা পরিদর্শন করেছেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিং অং লাইং। সেখানে জেনারেল লাইং একটি হেলিকপ্টার প্লান্ট পরিদর্শন করেছেন। এরপর ‘এমআই ১৭১’ বিমানে চড়ে গিয়েছেন সাইবেরিয়া অঞ্চলের উলান উদে শহরে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শৈগু ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে মিয়ানমার সফর করেন এবং ৬টি এসইউ-৩০ বিমান বিক্রি নিয়ে একটি চুক্তিতে সই করেন।

ভারত : আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে চীনের বিপরীতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে প্রতিবেশী মিয়ানমারের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বাড়ায় ভারত। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকটেও নির্লিপ্ত ভূমিকা রাখে দেশটি।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক অ্যান্থনি ডেভিসের মতে, মিয়ানমারের নৌবাহিনীর দিকে নজর দিচ্ছে ভারত। মিয়ানমারকে বিশেষায়িত যন্ত্রপাতি সরবরাহের পাশাপাশি যৌথ মহড়ার প্রস্তাব দিয়ে আসছে দেশটি? সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কয়েকবার ভারত সফরে গেছেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিং অং লাইং।

ইসরায়েল : মিয়ানমারের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। ২০১৮ সালে রোহিঙ্গা সংকটের মধ্যেও মিয়ানমার সরকারকে পানি বিশুদ্ধকরণ সিস্টেম প্রদান করে ইসরায়েল। এর আগে ২০১৫ সালে ইসরায়েল সফর করেন জেনারেল মিং অং লাইং। কিন্তু মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ইসরায়েলের অভ্যন্তরেই   নানা ধরনের বিতর্ক রয়েছে। তাই ২০১৭ সালে একবার অস্ত্র বিক্রি বন্ধও হয়ে গিয়েছিল।   এখন মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি আগের মতোই চলছে বলে জানিয়েছে ইয়াঙ্গুনের ইসরায়েল দূতাবাস।

সর্বশেষ খবর