রবিবার, ৯ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

চীনের পাশে পুতিন, মার্কিন আগ্রাসী নীতির কঠোর সমালোচনা

চীনের পাশে পুতিন, মার্কিন আগ্রাসী নীতির কঠোর সমালোচনা

ইকোনমিক ফোরামের বৈঠকে শি জিনপিং ও ভøাদিমির পুতিন

চীনা টেলিকম জায়ান্ট হুয়াওয়েকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী নীতির কঠোর সমালোচনা করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন, এ ধরনের কর্মকা- কেবল বাণিজ্যযুদ্ধই নয়, বিশ্বকে সত্যিকারের যুদ্ধের দিকেও ঠেলে দিতে পারে। শুক্রবার রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবুর্গ ইকোনমিক ফোরামে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তার এ বক্তব্যকে চীন ও রাশিয়ার মধ্যে ‘চমৎকার সম্পর্কের’ নজির হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কয়েক দিন আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে পুতিন মস্কো ও বেইজিংয়ের এখনকার সম্পর্ককে ইতিহাসের যে কোনো সময়ের মধ্যে ‘সবচেয়ে ভালো’ বলে অভিহিত করেছিলেন। সেন্ট পিটার্সবুর্গ ইকোনমিক ফোরামে রুশ প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ‘লাগামহীন অহমিকার’ অভিযোগ তোলেন। পাইপলাইনের মাধ্যমে ইউরোপে রাশিয়ার কোম্পানির গ্যাস সরবরাহ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতারও সমালোচনা করেন তিনি। ‘যে রাষ্ট্রগুলো এতদিন মুক্তবাজার অর্থনীতি প্রসারে কাজ করে এসেছিল তারাই এখন বাণিজ্যযুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার ভাষায় কথা বলা শুরু করেছে। ‘হুয়াওয়ের উদাহরণটাই দেখুন। তারা কেবল প্রতিষ্ঠানটিকে সংকুচিত করারই চেষ্টা চালাচ্ছে না, চেষ্টা করছে একে বিশ্ববাজার থেকে হটিয়ে দিতে। কিছু কিছু অঙ্গনে এরই মধ্যে একে ডিজিটাল যুগের প্রথম প্রযুক্তিযুদ্ধ হিসেবেও ডাকা শুরু হয়েছে,’ বলেছেন তিনি। পুতিন এ ধরনের ‘আগ্রাসী আচরণের’ ফলাফল নিয়েও সতর্ক করেছেন। সম্ভবত এটি কেবল বাণিজ্যযুদ্ধেই থেমে থাকবে না। সত্যি করে বললে, এই পথ নিয়মনীতি বহির্ভূত এমন একটি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবে যেখানে সবাই সবার বিরুদ্ধে লড়বে,’ শঙ্কা রুশ প্রেসিডেন্টের। পুতিনের ভাষ্যে কড়া ভাব থাকলেও একই সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্টের সুর ছিল তুলনামূলক নরম। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যবিরোধ শিগগিরই কেটে যাবে বলেও আশাবাদ শুনিয়েছেন তিনি। ‘আমরা (বিবাদে) আগ্রহী নই, আমাদের মার্কিন অংশীদাররাও সম্ভবত আগ্রহী নন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমার বন্ধু এবং তিনিও যে এ রকমটা চান না সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত,’ দোভাষীর মাধ্যমে শি এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেইজিং ও ওয়াশিংটনের দরকষাকষিতে হুয়াওয়ে কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। হুয়াওয়ের প্রযুক্তিকে চীন বিশ্বজুড়ে নজরদারি চালানোর কাজে ব্যবহার করতে পারেÑ এমন উদ্বেগ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশকে চীনা এ টেলিকম জায়ান্টকে বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে। হুয়াওয়ে শুরু থেকেই চীনা সরকারের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ অস্বীকার করে তাদের সরঞ্জামে নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই বলে দাবি করে আসছে।

যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্কতা : যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক অস্ত্র হামলায় প্রাণহানির ঘটনা এবং দুই দেশের বাণিজ্যযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে দেশটিতে নাগরিকদের ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে চীন। যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে ঝুঁকির বিষয়টি নাগরিকদের পুরোপুরি মূল্যায়ন করতে বলেছে বেইজিং। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জিজ্ঞাসাবাদের নামেও চীনা নাগরিকদের হয়রানি করছে। এ ভ্রমণ সতর্কতার বিষয়ে সিসিটিভিতে একজন উপস্থাপক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি ঘন ঘন এলোপাতাড়ি গুলি, ডাকাতি ও চুরির ঘটনা ঘটছে। বিবিসি ও রয়টার্স

চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্র ঘুরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে পর্যটকদের ঝুঁকির বিষয়গুলো ভালোভাবে মূল্যায়ন করতে বলেছে। বিবিসি ও রয়টার্স

সর্বশেষ খবর