শিরোনাম
সোমবার, ১০ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

সংক্ষপে

শ্রীলঙ্কার গোয়েন্দা প্রধান বরখাস্ত

শ্রীলঙ্কার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। দেশটিতে ইস্টার সানডের ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই হামলার আগেই হামলা সম্পর্কে গোপন তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এসব তথ্যকে গুরুত্ব দেননি দেশটির গোয়েন্দা প্রধান। শুক্রবার রাতে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। সেখানেই গোয়েন্দা প্রধানকে বরখাস্তের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ২১ এপ্রিল ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়। এতে ৪৫ বিদেশিসহ ২৫৮ জন নিহত হয়।

এ ছাড়া আরও প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ আহত হয়। শুরু থেকেই ওই হামলার বিষয়ে অবহেলার অভিযোগ ওঠে এসেছে। দেশটির গোয়েন্দা বিভাগ এ বিষয়ে জানতে পেরেও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি প্রেসিডেন্টকেও এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানানো হয়নি। গত সপ্তাহে অনুসন্ধানের ওপর ভিত্তি করেই গোয়েন্দা প্রধানকে বরখাস্ত করা হলো। অবহেলা না করলে ওই হামলা প্রতিহত করা সম্ভব হতো। তবে বরখাস্ত হওয়া গোয়েন্দা প্রধান প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করে বলেছেন, নিরাপত্তা কমিটির সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। ইসলামিক কিছু সংগঠন হামলা চালাতে পারে এমন আশঙ্কাকে গুরুত্ব দেননি তিনি। ফলে তিনটি হোটেল, তিনটি চার্চসহ ৮ স্থানে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে ওই গোয়েন্দা প্রধানকে বরখাস্তের প্রকৃত কারণ উল্লেখ করেনি সিরিসেনার কার্যালয়।

 

বিতর্কিত বিলের বিরুদ্ধে  হংকংয়ে বিক্ষোভ

বহুল বিতর্কিত একটি আইনের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ হংকংয়ের রাজপথে বিক্ষোভ করছে। তাদের আশঙ্কা এই আইনটির মাধ্যমে রাজনৈতিক বিরোধী ও ধর্মীয় বিরোধীদের টার্গেট করবে চীন এবং তাদের হংকং থেকে চীনের মূল ভূখে  নিয়ে যাবে। এটি হলো এক্সট্রাডিশন বিল বা বহিষ্কার বিষয়ক বিল। সমালোচকরা মনে করছেন, এই বিলটি আইনে পরিণত হলে হংকংয়ে সন্দেহভাজন অপরাধীদের ধরে চীনে নিয়ে যেতে পারবে বিচারের নাম করে। এর প্রতিবাদে সেখানে ২০১৪ সালে আমব্রেলা মুভমেন্টের পর সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ বিক্ষোভ হচ্ছে।

এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

প্রতিবাদ বা সমালোচনার জবাবে সরকার বলছে, এ বিলটি হলো সুরক্ষার জন্য এবং ফাঁকফোকড় বন্ধ করার জন্য। হংকংয়ের নেতা ক্যারি লাম এই বিলের সংশোধনী উত্থাপন করেছেন। আর বিলটি জুলাইয়ের আগেই পাস হতে পারে।

সমর্থকরা বলছেন, এই আইনকে সেফগার্ড হিসেবে ব্যবহার করা হবে। সমালোচকরা বলছেন, সাবেক ব্রিটিশ ঔপনিবেশবাদ প্রকাশিত হবে চীনের গভীর ত্রুটিপূর্ণ বিচার ব্যবস্থায়। এর ফলে হংকংয়ের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার আরও ক্ষয় হবে। এই বিলে যেসব কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে চীন, তাইওয়ান ও ম্যাকাউ কর্তৃপক্ষ অন্যায়কারী সন্দেহভাজন অপরাধীকে তাদের হাতে তুলে দিতে অনুরোধ জানাবে। এমন অপরাধের মধ্যে রয়েছে খুন ও ধর্ষণ। এই অনুরোধ কেস-বাই-কেস ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। হংকংয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের আদালত চূড়ান্ত দফায় সিদ্ধান্ত নেবেন, এমন বহিষ্কারের অনুরোধ তারা অনুমোদন করবেন কিনা। রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অপরাধের দায়ে সন্দেহভাজনদের বহিষ্কার করা হবে না।

 

খুলল ভেনেজুয়েলা  কলম্বিয়া সীমান্ত

ফেব্রুয়ারিতে বন্ধ হওয়ার চার মাস পর ভেনেজুয়েলা-কলম্বিয়ার সীমান্ত ফের খুলে দেওয়া হয়েছে। শনিবার গুরুত্বপূর্ণ এ সীমান্তটি খুলে দেওয়ার পর প্রথম দিনেই হাজার হাজার লোক সীমান্ত পেরিয়ে ভেনেজুয়েলা থেকে কলম্বিয়ায় গিয়ে দিন শেষে আবার ফিরেছেন বলে কর্মকর্তাদের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি। ফ্রেরুয়ারিতে ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুইদো এ সীমান্ত দিয়ে তার দেশে মার্কিন সমর্থিত ‘মানবিক ত্রাণ সাহায্য’ ঢোকানোর চেষ্টা করেছিলেন। তখন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর অনুরোধে সীমান্তটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

কলম্বিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সীমান্ত খুলে দেওয়ার দিনটিতে ৩০ হাজারেরও বেশি ভেনেজুয়েলার নাগরিক কলম্বিয়া এসেছেন; দিন শেষ হওয়ার আগেই ফিরেছেন প্রায় ৩৭ হাজার। টুইটারে কলম্বিয়ার সঙ্গে সীমান্ত খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট তার দেশের সংকটের জন্য মার্কিন ও তার মিত্রদের চাপিয়ে দেওয়া অর্থনৈতিক যুদ্ধকে দায়ী করেছেন।

প্রেসিডেন্ট মাদুরো বলেছেন, ‘স্বাধীনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করা শান্তিপ্রিয় জনগণ আমরা।’ বিবিসি বলছে, চার মাস বন্ধ থাকায় সীমান্ত সংশ্লিষ্ট ভেনেজুয়েলার শহরগুলোর বাসিন্দারা নানান সমস্যায় ভুগেছেন। সীমান্ত সংশ্লিষ্ট এ শহরগুলোর বাসিন্দারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবার জন্য কলম্বিয়ার বিভিন্ন শহরের ওপর নির্ভরশীল। স্বাভাবিকভাবে অতিক্রমের সুযোগ না থাকায় অনেককেই অপরাধীদের চাঁদা দিয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত টপকাতে হয়েছে। বন্ধ হওয়ার আগে প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ এ সীমান্তটির সিমন বলিভার আন্তর্জাতিক সেতু পার হতো বলে আন্তর্জাতিক একটি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে। কয়েক বছর ধরে চলা চরম অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলাকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ভয়াবহ ঘাটতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে ২০১৫ সালের পর থেকে ভেনেজুয়েলার ৪০ লাখেরও বেশি নাগরিক দেশ ছেড়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা। চলতি বছরের শুরুর দিকে বিরোধীরা ভেনেজুয়েলায় ‘মানবিক ত্রাণ সাহায্য’ ঢোকানোর চেষ্টা করলে ব্রাজিল, কলম্বিয়া ও ডাচ এন্টাইলস দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে দেশটির সীমান্তগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিরোধীদের এ ত্রাণ সাহায্য ঢোকানোর চেষ্টাকে মাদুরো ভেনেজুয়েলার নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের পরিকল্পনার অংশ বলে অভিহিত করে সাহায্য প্রত্যাখ্যান করেন। গত মাসে মাদুরো ব্রাজিল ও আরুবা দ্বীপের সঙ্গে সীমান্ত খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিলেও আরুবার কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার সীমান্তটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। ভেনেজুয়েলার বিরোধী দল নিয়ন্ত্রিত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রধান গুইদো গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে জানুয়ারিতে নিজেকে ‘ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি’ ঘোষণার পর থেকে ভেনেজুয়েলায় রাজনৈতিক সংকট চরম আকার ধারণ করে।

গত বছরের ওই নির্বাচনে মাদুরো ফের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। গুইদো নিজেকে ভেনেজুয়েলার ‘বৈধ রাষ্ট্রপ্রধান’ ঘোষণা দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার বেশিরভাগ  দেশসহ বিশ্বের অর্ধশতাধিক রাষ্ট্র তাকে স্বীকৃতি দেয়। যদিও সেনাবাহিনী এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের সমর্থন নিয়ে মাদুরো এখনো বহাল তবিয়তেই দেশ শাসন করছেন। চীন-রাশিয়া, কিউবা, ইরান ও তুরস্কের মতো দেশগুলোও তাকেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। মাদুরোকে উৎখাতে এপ্রিলে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছিলেন গুইদো। ওই অভ্যুত্থান চেষ্টার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত আছে বলেও অভিযোগ ভেনেজুয়েলার সোশ্যালিস্ট ঘরানার প্রেসিডেন্টের।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর