বিশ্ব উষ্ণায়নের চরম প্রভাবে ইউরোপের প্রতিটি অঞ্চল অসহনীয় গরমের মধ্য দিয়ে পার করছে। ইতিমধ্যে দাবদাহের কারণে মানুষের প্রাণহানির খবরও পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও প্রকাশ্যে আসছে।
ফ্রান্সের রাষ্ট্রীয় আবহাওয়া সংস্থা জানায়, শুক্রবার ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলের শহর গ্যালারগস-লি-মনটাক্সে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে রেকর্ড করা হয়েছে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটিই হচ্ছে এযাবৎকালে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। আবহাওয়াবিদ ইতিনি কাপিকান বলেন, এবার প্রথমবারের মতো তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়াল; যা অস্বাভাবিক। এর আগে ২০০৩ সালে ফ্রান্সে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৫ ডিগ্রি ছিল এবং সে সময় তীব্র দাবদাহে এক মাসে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। তীব্র এই গরমে ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এগনেস বুজইয়ান সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সবাই এখন ঝুঁকিতে আছে। ফ্রান্সের আবহাওয়া অফিস ইতিমধ্যে চারটি জায়গায় ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে এবং প্রায় ফ্রান্সজুড়েই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি আছে। রেডিও, টেলিভিশনসহ অন্য প্রচারমাধ্যমগুলোয় নানাভাবে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে। ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বার বার প্রচার চালানো হচ্ছে এই অতিরিক্ত গরমে কী কী করা উচিত। গরমে যতটা সম্ভব বাইরে না বেরোনোই উচিত মনে করে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে পানীয় ও সানস্ক্রিন সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দেশটির আটটি প্রদেশে রেড অ্যালার্ট জারি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মরুভূমি সাহারার গরম হাওয়ার জন্যই আগেভাগেই গ্রীষ্মের রুদ্ররূপ দেখতে হচ্ছে ইউরোপকে। গরমের কারণে ফ্রান্সের অধিকাংশ স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ২৭ ও ২৮ জুনের চলমান ইঅঈ পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী ঝরনা বসানো হয়েছে। প্যারিসের বড় ট্রেনস্টেশনগুলোয় যাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে পানীয় জল বিতরণ করা হচ্ছে এবং শিশু ও বয়স্কদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তির জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসেবার পরিকল্পনা করা হয়েছে।