শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ধর্মের নামে সন্ত্রাস বন্ধে ওয়াশিংটনে সম্মেলন

‘বিশ্বের ৭০ শতাংশ মানুষ কট্টর ধর্মীয় সমাজব্যবস্থার মধ্যে বাস করে

বিশ্বজুড়ে শুধু ধর্মের নামে শত শত মানুষ নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। বাড়তে থাকা এ সংকট নিরসনে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওয়াশিংটনে একটি সম্মেলনের আয়োজন করছে। আগামী সপ্তাহে শুরু হতে যাওয়া ওই সম্মেলনে সান ডিয়াগোর সিনাগগে, নিউজিল্যান্ডের মসজিদে এবং শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডের দিন ভয়াবহ হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ‘মিনিস্টেরিয়াল টু অ্যাডভান্স রিলিজিয়াস ফ্রিডম’-এর ওই সম্মেলনে বেশ কয়েকটি দেশের মন্ত্রীরা অংশ নেবেন বলে জানান এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দূত স্যাম ব্রাউনব্যাক। বিশ্বজুড়ে ধর্মের নামে নিপীড়ন বন্ধে ওই সব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাবে সাক্ষর করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। তবে কোনো কোনো দেশের মন্ত্রীরা ওই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন তা তিনি জানাননি। ওই সম্মেলনে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী নাদিয়া মুরাদ বক্তৃতা দেবেন। ইরাকের ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের এই নারী দীর্ঘদিন মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের হাতে যৌনদাসী হিসেবে বন্দী ছিলেন। আমেরিকার ধর্মপ্রচারক অ্যানন্ড্রু ব্রুনসনও সেখানে বক্তব্য রাখবেন, যিনি দুই বছর তুরস্কে বন্দী ছিলেন। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের সময় প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গা মুসলমানদের কয়েকজন প্রতিনিধিও ওই সম্মেলনে অংশ নেবেন। ব্রাউনব্যাক বলেন, ‘আমরা আশা করছি (ধর্মীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে) কঠোর ব্যবস্থা প্রহণ করা হবে।’

ব্রাউনব্যাক বলেন, ‘বিশ্বের ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ কট্টর ধর্মীয় সমাজব্যবস্থার মধ্যে বাস করে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে অনেক ক্ষেত্রেই প্রাণঘাতী পরিবেশের মধ্যে।’ ধর্মীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মতো   একই মনোভাব যেসব দেশের তারা ওই সম্মেলনে আমন্ত্রণ  পেয়েছেন বলেও জানান তিনি। সেক্ষেত্রে মিয়ানমারকে আমন্ত্রণ জানানোর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি  বলেন, ‘আমরা তাদের এই মুহূর্তে সমমনা বা কট্টর কোনো ক্যাটাগরিতে ফেলতে পারছি না।’ জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান শুরু হলে নির্যাতন থেকে বাঁচতে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ একে পরিকল্পিত ‘জাতিগত নিধন’ বলে বর্ণনা করেছে। যদিও মিয়ানমার সেনাবাহিনী ‘জাতিগত নিধন’ অভিযান চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

মিয়ানমারের মিত্রদেশ চীনেও সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলমানদের ওপর নানা নিপীড়নের খবর প্রকাশ পাচ্ছে। ওইসব খবরে চীন সরকারের বিরুদ্ধে জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলমানদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা অভিযোগ  তোলা হলে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন তা বন্ধ করতে বলে। নতুবা দেশটির বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পরে বলেও সতর্ক   করেছে। সম্মেলন আয়োজনের বিষয়ে ব্রাউনব্যাক বলেন, তিনি উজবেকিস্তানের মতো ‘সঠিক পথে চলা’ দেশগুলো থেকে উৎসাহ পেয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘উজবেকিস্তান প্রায় ১৩ হাজার রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বন্দীকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়েছে। দেশটির সরকার কয়েকটি গির্জার অনুমোদনও দিয়েছে।’

সর্বশেষ খবর