নরউইজিয়ান সাগরের অতলে সোভিয়েত যুগের সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজ ‘কমসোমোলেটস’ ডুবে গিয়েছিল। সম্প্রতি তার ধ্বংসস্তূপ পরীক্ষা করে চিন্তায় পড়েছেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাভাবিকের থেকে ৮ লাখ গুণ তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ছড়াচ্ছে ডুবোজাহাজটি। বিশেষজ্ঞরা রিমোটচালিত যন্ত্রের সাহায্যে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫৫০০ ফুট নিচে ‘কমসোমোলেটস’কে পরীক্ষা করে দেখেছেন। ‘নরউইজিয়ান রেডিয়েশন অ্যান্ড নিউক্লিয়ার সেফটি অথরিটি’ তদন্ত শেষে জানিয়েছে, ডুবোজাহাজটির ধ্বংসস্তূপের ভেন্টিলেশন ডাক্ট থেকে উচ্চমাত্রায় তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ঘটছে সাগরের পানিতে। সর্বোচ্চ প্রায় লিটারপ্রতি ৮০০ বিকিউ। যেখানে স্বাভাবিক মাত্রা ০.০০১ বিকিউ প্রতি লিটার। ‘নরউইজিয়ান ইনস্টিটিউট অব মেরিন রিসার্চ’-এর বিজ্ঞানী ও নরওয়ের তদন্তকারী দলের প্রধান হিল্ড এলিস হেলডাল বলেন, ‘বিকিরণ মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে অনেকটা বেশি। তবু এখনো পরিস্থিতি মারাত্মক আশঙ্কাজনক নয়।’ ৪০০ ফুট দীর্ঘ ধ্বংসস্তূপে দুটি পরমাণু যুদ্ধাস্ত্র এবং একটি পরমাণু চুল্লি রয়েছে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর টানা ‘কমসোমোলেটস’-এর উপরে নজরদারি চালিয়ে গিয়েছে নরওয়ে ও রাশিয়া। মাপা হয়েছে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মাত্রা। বিশেষ করে সমুদ্রের পানিতে কী পরিমাণ দূষণ ছড়াচ্ছে ধ্বংসস্তূপ থেকে।
’৯০-এর দশকে কিংবা ২০০৭ সালেও রুশ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, বিকিরণ মাত্রা খুবই কম। হেলডালের বক্তব্য, তেজস্ক্রিয় বিকিরণ এভাবে বেড়ে যাওয়া অবাক করেনি তাদের। বলেন, ‘নরউইজিয়ান সাগরের গভীরে তেজস্ক্রিয় সিজিয়াম সহজে পানিতে মিশে যায়। বেশ কিছু মাছ ওই এলাকায় থাকে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, নরউইজিয়ান মাছ বা সি-ফুডে খুবই কম প্রভাব ফেলেছে ওই তেজস্ক্রিয়তা।’ কারণটাও ব্যাখ্যা করেছেন হেলডাল। তার কথায়, ‘নরউইজিয়ান সাগরের পানিতে এমনিতে সিজিয়াম মাত্রা খুব কম। ধ্বংসস্তূপটিও অনেক গভীরে পড়ে রয়েছে। কমসোমোলেটসের সিজিয়াম তাই দ্রুত পানিতে দ্রবীভূত হয়ে যাচ্ছে।’