শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

পার্লামেন্টে দফায় দফায় পরাস্ত জনসন

ব্রেক্সিট ইস্যু

পার্লামেন্টে দফায় দফায় পরাস্ত জনসন

গণতন্ত্রের মহাকাব্যিক চর্চা হচ্ছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী চাইলেও তার সিদ্ধান্ত ও ক্ষমতা চাপিয়ে দিতে পারছেন না -এএফপি

আগাম নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে যে প্রস্তাব এনেছিলেন সেটি দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় খারিজ হয়ে গেছে। এর আগে সংসদ সদস্যরা ‘নো-ডিল ব্রেক্সিট’ বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে চুক্তি ছাড়া বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আটকে দিয়ে একটি বিল পাস করেছেন পার্লামেন্ট। এই বিলটি এনেছে বিরোধী দলগুলো, তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির একদল বিদ্রোহী এমপি। ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটেনে রাজনৈতিক সংকট যেরকম চরমে পৌঁছেছে, তা সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন। এই বিলের মাধ্যমে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি সমঝোতা করে পার্লামেন্টে নিয়ে আসতে না পারেন, তাহলে তাকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে ফিরে যেতে হবে এবং অনুরোধ জানাতে হবে যে, ব্রেক্সিটের সময়সীমা ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়। জনসন চাইছেন, বাণিজ্য ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো না গেলেও ৩১ অক্টোবর নির্ধারিত তারিখে কোনো চুক্তি ছাড়াই ২৮ জাতির এই জোট থেকে বেরিয়ে যাক ব্রিটেন। এটাকে বলা হচ্ছে ‘নো ডিল ব্রেক্সিট’।

এখন প্রধানমন্ত্রী জনসন ইউরোপীয় ইউনিয়নে যে চিঠি পাঠাবেন, তার ভাষা কী হবে তা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে এই বিলের মাধ্যমে। ‘নো ডিল ব্রেক্সিট’ আটকে দিয়ে পার্লামেন্টে যে বিল পাস করা হয়েছে সেটি এক অর্থে ইইউয়ের কাছে আত্মসমর্পণ বলে বর্ণনা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। এই বিল পাস হওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী  জনসন আগামী ১৫ অক্টোবর নির্বাচনের প্রস্তাব আনেন। কিন্তু ব্রিটেনে এখন যে ‘ফিক্সড টার্ম পার্লামেন্ট অ্যাক্ট’ রয়েছে সেখানে বলা আছে যে, একটি পার্লামেন্ট যে মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হবে সে মেয়াদ পর্যন্ত থাকবে। যদি আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হয় তাহলে দুই-তৃতীয়াংশ পার্লামেন্ট সদস্যের সমর্থন লাগবে। কিন্তু আগাম নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়েছে। জনসন বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে এটা নজিরবিহীন যে, সরকার নির্বাচন দিতে চাইছে আর বিরোধী দল সেটি প্রত্যাখ্যান করছে। তবে বিরোধী দল লেবার পার্টি বলছে, তারা আগাম নির্বাচনের বিরোধী নয়। গত দুই বছর ধরে লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে লেবার পার্টির অগ্রাধিকার হচ্ছে নো ডিল ব্রেক্সিট বন্ধ করা।

জনসনের ভাইয়ের পদত্যাগ : ব্রেক্সিট নিয়ে পার্লামেন্টে চলমান বিতর্কের মধ্যেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ভাই জো জনসন পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। এমপি ও মন্ত্রী উভয় পদ থেকে পদত্যাগ করেন জো জনসন। এক টুইট বার্তায় তিনি জানান, একই সঙ্গে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছেন। তাছাড়া তিনজন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে দীর্ঘ ৯ বছর মন্ত্রী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়ে আমি সম্মানিত।

সর্বশেষ খবর